রবিবার, ২ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

টাঙ্গাইলের শাড়ি রমণীদের প্রিয়

মো. নাসির উদ্দিন, টাঙ্গাইল

টাঙ্গাইলের শাড়ি রমণীদের প্রিয়

ঈদ, পূজা, পার্বণ, পয়লা বৈশাখসহ যে কোনো অনুষ্ঠানেই বাঙালি নারীর প্রথম পছন্দ শাড়ি। আর টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ির প্রতি রয়েছে আলাদা একটা টান। তাই টাঙ্গাইলের তাঁত শাড়ি বাঙালি নারীদের কাছে সবচেয়ে বেশি প্রিয়। প্রতি বছরই টাঙ্গাইলের তাঁত শাড়িতে যুক্ত হচ্ছে বৈচিত্র্য আর নতুনত্ব। বিভিন্ন উপলক্ষকে কেন্দ্র করে বাহারি ডিজাইনের শাড়ি বুনন ও তা সারা দেশে সরবরাহ করতে ভীষণ ব্যস্ত সময় কাটে তাঁতের শাড়ির হাটবাজার ও তাঁত পল্লীগুলোতে। ঈদের শেষ মুহূর্তে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের পাইকাররা তাঁতের শাড়ি কিনতে ভিড় করছে দেশের বৃহত্তর করটিয়ার হাট, ঐতিহ্যবাহী বাজিতপুর হাট ও পাথরাইল তাঁত পল্লীতে। “নদী, চর, খালবিল গজারির বন, টাঙ্গাইলের শাড়ি তার গরবের ধন” টাঙ্গাইলের ঐতিহ্যের সঙ্গে টাঙ্গাইলের শাড়ির নাম জড়িয়ে আছে। যুগ যুগ ধরে সেই ঐতিহ্যকে ধরে রেখেছেন টাঙ্গাইলের তাঁত শাড়ি তৈরি কারিগর ও ব্যবসায়ীরা। টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি জেলা-উপজেলার বিভিন্ন গ্রামগঞ্জেই তৈরি হয়। তবে তাঁত পল্লী নামে খ্যাত দেলদুয়ার উপজেলার পাথরাইল, চি , মঙ্গলহোড়, নলশোঁধা, নলুয়া, বড়টিয়া, চিনাখোলা, টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বাজিতপুর, করটিয়া ও কালিহাতী উপজেলার বল্লা রামপুরসহ প্রায় সব এলাকাতেই কাপড় বুননের কাজ ব্যাপকভাবে হয়ে থাকে। আর এসব তাঁত শাড়ি ও তাঁত জাত পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য পৌর এলাকার বাজিতপুর হাট ও করটিয়ার হাট বিখ্যাত। এ ছাড়াও তাঁত পল্লীগুলোতে ও  শহরে রয়েছে তাঁতের শাড়ির শোরুম। এসব হাটবাজার ও শোরুমে প্রতিদিন কয়েক হাজার কোটি টাকার শাড়ি কেনাবেচা হয়ে থাকে। দেশের বৃহত্তম করটিয়ার হাটে প্রতি সপ্তাহে তিন দিন-মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার তাঁতের শাড়ির হাট বসে। এখানে সারা দেশের পাইকার ও খুচরা বিক্রেতারা হাজির হন।

টাঙ্গাইলের পাথরাইলের তাঁতপল্লীর কয়েকশ কারখানায় কাজ করছেন প্রায় ১০ হাজার কারিগর। ঈদকে সামনে রেখে তাদের ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে দিনে-রাতে অন্তত ১২ ঘণ্টা। ঈদকে সামনে রেখে তশর, এনডি, ডেনু সিল্ক, জামদানির ওপর চুমকির কাজসহ বাহারি ২০০ ডিজাইনের শাড়ি তৈরি হচ্ছে টাঙ্গাইলের তাঁতপল্লীতে। এ কারণেই মূলত তাঁত পল্লী এখন উৎসবমুখর আর তাঁতিরা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। টাঙ্গাইল সদরের বাজিতপুর, দেলদুয়ার উপজেলার পাথরাইল ও চ ী ও কালিহাতীর বল্লা রামপুরের তাঁতসমৃদ্ধ এলাকায় একই চিত্র দেখা যায়। ভোর না হতেই শুরু হয় তাঁতের খট্খট্ শব্দ। রাতভর কাজ করেও তাঁতির ক্লান্তি নেই। প্রতিযোগিতা একটাই, উৎপাদন যত বেশি হবে, সাপ্তাহিক বিল তত বেশি পাবে। সুতা রং করা থেকে শুরু করে শাড়ি বাজারে বিক্রি করা পর্যন্ত প্রতিটি ধাপেই পরিবারের সব বয়সের মানুষ ব্যস্ত সময় পার করছেন।

টাঙ্গাইল শাড়ি ব্যবসায়ী রঞ্জন পাল জানান, উৎসব অনুসারে টাঙ্গাইল শাড়ির কারুকাজ ভিন্ন হয়। ঈদকে কেন্দ্র করে টাঙ্গাইল শাড়িতে যোগ হয়েছে ভিন্নধর্মী নকশা ও কারুকাজ। যা সহজেই নারীদের পছন্দনীয়। চাহিদা পূরণ করতে টাঙ্গাইল শাড়ি যুগোপযোগী।

সর্বশেষ খবর