রবিবার, ২ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

তবুও অতিরিক্ত যাত্রী

বাড়ি ফিরতে কোনো রুটে স্বস্তি, কোনো রুটে ভোগান্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক

তবুও অতিরিক্ত যাত্রী

অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে গতকাল সদরঘাট থেকে ছাড়ে লঞ্চ -বাংলাদেশ প্রতিদিন

প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ উদযাপনে ঘরের পানে ছুটছে মানুষ। গতকালও ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়ে দুর্ভোগে পড়েন উত্তরাঞ্চলের যাত্রীরা। তবে স্বস্তিতে ঢাকা ছাড়েন চট্টগ্রাম, সিলেটসহ অন্য অঞ্চলের ট্রেন যাত্রীরা। এ ছাড়া সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে দক্ষিণাঞ্চলগামী প্রতিটি লঞ্চই অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। বৃষ্টির কারণে ভোরে কিছুটা দুর্ভোগ পোহাতে হয় সড়কপথের যাত্রীদের। দীর্ঘ অপেক্ষা আর যাত্রার কষ্ট ম্লান হয়ে যায় প্রিয়জনের সান্নিধ্যে। তাই যাত্রীদের চোখে-মুখে ছিল খুশির ঝিলিক। রেলে ঈদযাত্রার  দ্বিতীয় দিনে গতকাল সকাল থেকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে উত্তরাঞ্চলের প্রতিটি ট্রেনই দুই থেকে তিন ঘণ্টা দেরিতে ছাড়ে। প্রায় দেড় ঘণ্টা দেরিতে ছাড়ে রংপুর এক্সপ্রেস। নীলসাগর এক্সপ্রেস নির্দিষ্ট সময়ের ৩ ঘণ্টা দেরিতে স্টেশন ছেড়ে যায়। রাজশাহীগামী সিল্ক সিটির যাত্রাও পিছিয়ে যায়। এটা ২টা ৪০ মিনিটে ছাড়ার কথা থাকলেও  ৫টা ১০ মিনিটে ছাড়ার কথা জানানো হয়। এ ছাড়া চট্টগ্রামগামী মহানগর প্রভাতী এক্সপ্রেস ও খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস ছেড়েছে দেরিতে। প্রথম দিনের মতো এদিন ভিড় না থাকলেও এসব ট্রেন দেরিতে ছাড়ায় বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে ঢাকা থেকে ঘরমুখো মানুষদের।

তবে এ বিষয়ে স্টেশন ম্যানেজার আমিনুল ইসলাম জানান, যাত্রীদের অতিরিক্ত চাপ থাকায় শিডিউল বিপর্যয় হয়েছে। আগামীকাল (রবিবার) থেকে আর ভোগান্তি থাকবে না। এদিকে সকাল থেকেই সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে ভিড় জমান দক্ষিণাঞ্চলের মানুষেরা। বেলা বাড়ার সঙ্গে বাড়ছিল যাত্রীর সংখ্যা। দুপুরের মধ্যে ঘাটে থাকা বেশিরভাগ লঞ্চ যাত্রীতে পূর্ণ হয়ে যায়। নির্দিষ্ট সময়ে লঞ্চ না ছাড়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান অনেকে। টার্মিনাল ও পন্টুনে টহল দিতে দেখা যায় র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের। পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদেরও যন্ত্রপাতি নিয়ে প্রস্তুত থাকতে দেখা গেছে।  টার্মিনালের কর্মকর্তারা জানান, ঈদকে কেন্দ্র করে ২১৫টি লঞ্চ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে যাতায়াত করবে। একই সঙ্গে ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে টার্মিনাল এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ব্যাগ নিয়ে টার্মিনালে উপস্থিত হন পটুয়াখালীর সোলায়মান ও সোহাইল মিয়া। তারা জানান, ‘জায়গা পাই কি না পাই, এ জন্য সকাল সকাল লঞ্চে চইল্যা আইছি। ঈদের সময় তো ভিড় অয়।’ 

সদরঘাটের বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নতুন টার্মিনালের ১, ২, ৩ ও ৪ নম্বর পন্টুন থেকে বরিশালের লঞ্চ ছেড়ে যাবে। ওয়াইজঘাটের টার্মিনাল থেকে পটুয়াখালী ও গলাচিপার লঞ্চ ছেড়ে যাবে। রাজধানীর গাবতলী, মহাখালী, মিরপুর, ধানমন্ডি, মগবাজারসহ বিভিন্ন টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে, সাহ্রির পরপরই বাড়ির পানে রাস্তায় বেরিয়ে আসে লোকজন। তবে এদের বেশিরভাগই ছাত্র আর পরিবারের সদস্যরা। কেউ কেউ চাকরিজীবী হওয়ায় তারা এখনো রাজধানী ছাড়ছেন না। আগামীকাল সোমবার কর্মদিবসের শেষ দিনে অফিস করেই বাড়ি ফিরবেন তারা। মানুষের বাড়ি ফেরার যাত্রায় কিছুটা বিপত্তির সৃষ্টি করে হঠাৎ বৃষ্টি। বৃষ্টি বিড়ম্বনায় পড়ে অনেককেই বাসায় ফিরে যেতে দেখা গেছে। কেউ আবার বৃষ্টিতে কাকভেজা হয়েই গেছেন টার্মিনালের দিকে।   

আমাদের গাজীপুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, গতকাল ভোরে বৃষ্টির কারণে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে টঙ্গী থেকে উত্তরে চান্দনা-চৌরাস্তা পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টির পানি জমে যায়। এতে সকালে ওই পথের এক লেন ব্যবহার করে চলাচল করায় যানবাহনে ধীরগতি লক্ষ্য করা গেছে। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পানি কমে যাওয়ায় ওই পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয় এবং গাড়ির গতি বেড়ে যায়।

ঢাকা থেকে গাজীপুরগামী বলাকা সার্ভিসের যাত্রী আবদুল কাদির জানান, ফেরার পথে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের সাইনবোর্ড, মালেকের বাড়িসহ কয়েকটি স্থানে পানি জমে থাকতে দেখা যায়। ওই মহাসড়কের পাশে বিআরটির নির্মাণাধীন ড্রেনের পানিও ঠিকমতো সরতে না পারায় মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে জমে থাকতে দেখা গেছে। এতে গাড়ি স্বাভাবিক গতিতে চলতে পারেনি। 

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী (সিও) এ কে এম রাহাতুল ইসলাম জানান, গাজীপুর সিটির টঙ্গী থেকে-চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ১২ কিলোমিটার এলাকায় বিআরটি প্রকল্পের কাজ চলছে। ওই অংশের দেখভালও তারাই করছে। তবে কোনো ব্যাপারে তারা যখনই আমাদের সহযোগিতা চায় তখনই আমরা তাদের সাপোর্ট দিচ্ছি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর