মঙ্গলবার, ৪ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা
কৃষি সংবাদ

লালমি চাষিদের মুখে হাসি

অজয় দাস, ভাঙ্গা (ফরিদপুর)

লালমি চাষিদের মুখে হাসি

লালমি চাষ করে এবং তা বিক্রি করে পরিবার-পরিজন নিয়ে আনন্দের হাসিতে ভাসছে ফরিদপুর জেলার সদরপুর, নগরকান্দা, ভাঙ্গা ও চরভদ্রাসন এলাকার চাষিরা। রমজান মাসকে সামনে রেখে ফরিদপুরে চাষ করা হয় লালমি। রোপণের ৬০ দিনের মধ্যে এটি পাকে বলে কৃষক টার্গেট করে রমজান মাসের প্রথম দিকেই লালমি বাজারজাত করতে। রং, স্বাদ, বর্ণ ও গন্ধ হিসাব করে কৃষকই এ ফসলের নাম রেখেছে লালমি। তবে কৃষি বিভাগ এ ফসলের নামকরণসহ অধিক মূল্যায়ন ও উন্নয়নের জন্য শুরু করেছে গবেষণা। লালমি দেখতে অনেকটা বাঙ্গির মতোই। তবে আছে কিছু পার্থক্য। বাঙ্গির মতো গায়ে শিররেখা নেই। গায়ের রং এবং গন্ধও আলাদা। স্বাদেও আছে কিছু পার্থক্য। বাঙ্গি রবি মৌসুমের ফল, পাকতে শুরু করে চৈত্র মাসে। পক্ষান্তরে লালমির সবচেয়ে বৈশিষ্ট্যপূর্ণ বিষয় হলো শীতের দুই মাস বাদে বছরের যে কোনো সময় জমিতে চাষ করা যায়। ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, লালমি মূলত ফরিদপুরের কৃষকদের উদ্ভাবিত একটি ফসল। এ বছর ফরিদপুরে ৫৮৪ হেক্টর জমিতে লালমির চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে শুধু সদরপুরেই চাষ করা হয়েছে ৫৬০ হেক্টর জমিতে। প্রতি হেক্টর জমিতে গড়ে লালমির উৎপাদন হয় ১৫ থেকে ১৬ টন। ফরিদপুরের সদরপুরে গত প্রায় ১৫ বছর ধরে লালমি চাষ হচ্ছে। ওই এলাকার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সদরপুরের কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের যাত্রাবাড়ী এলাকার আলিম খাঁ নামে এক কৃষক প্রথমে লালমি চাষ করেন।

তার সাফল্য দেখে অন্য কৃষকরা লালমি চাষে উৎসাহিত হন। বছরের প্রায় যে কোনো সময়ে লালমি চাষ করা যায় বলে কৃষক রমজান মাসকে উপলক্ষ করে লালমি চাষ করেন। লালমি হালকা পানীয় জাতীয় ফসল এবং সহজে শরীরের সঙ্গে মিশে যায়। এ কারণে সারা দিন পানাহার থেকে বিরত থাকার পর সন্ধ্যায় ইফতারির সময় এক গ্লাস লালমির রস দ্রুত শরীরকে সতেজ করে তোলে। বিঘাপ্রতি জমিতে চাষাবাদ বাবদ খরচ হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা। খরচ বাদে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত লাভ করছেন চাষিরা। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় প্রাকৃতিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়তে হয়নি কৃষকদের। সদরপুরের ভাষাণচর ইউনিয়নের নতুন বাজার এলাকার কৃষক মোজাফফর মোল্লা জানান, এ বছর তিনি ২৬ শতাংশ জমিতে লালমি চাষ করেছেন। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় লাভ হবে তার। নগরকান্দার রামনগর এলাকার কৃষক বদরউদ্দিন প্রামণিক বলেন, এ বছর তিনি ৭৫ শতাংশ জমিতে লালমি চাষ করেছেন। গত বছরও সমপরিমাণ জমিতে চাষ করেছিলেন। গত বছর লালমি চাষ করে ৬০ হাজার টাকা আয় করেছিলেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর