শনিবার, ৮ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

বিনোদন কেন্দ্রে উপচে পড়া ভিড়

মোস্তফা কাজল

বিনোদন কেন্দ্রে উপচে পড়া ভিড়

চিড়িয়াখানায় গতকালও ছিল দর্শনার্থীর উপচে পড়া ভিড় -বাংলাদেশ প্রতিদিন

ঈদের ছুটিতে ঈদ উৎসবের ভিড় জমেছে রাজধানীসহ সারা দেশের বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে। বুধবার ঈদের দিন থেকে এ ভিড় জমলেও গতকাল পর্যন্ত স্থানগুলোতে আরও উৎসবমুখর পরিবেশ দেখা গেছে। বিশেষ করে রাজধানীতে কচিকাঁচার হৈ হুলোড়ে মুখর ছিল জাতীয় চিড়িয়াখানা, বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার, থিমপার্ক টগি ওয়ার্ল্ড ও হাতিরঝিলসহ সব বিনোদন কেন্দ্রে। এসবের পাশাপাশি অসংখ্য মানুষ ভিড় জমান নিকটবর্তী গাজীপুরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক, সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধ, আশুলিয়া এলাকার ফেন্টাসি কিংডম, নন্দনপার্ক এবং নরসিংদী এলাকায় স্থাপিত ড্রিম হলিডে পার্কে। এ ছাড়া আহসান মঞ্জিল, লালবাগ কেল্লাসহ ঐতিহাসিক স্থানসহ অন্যসব বিনোদন কেন্দ্রগুলো ছিল লোকে লোকারণ্য। ঈদের দিনও বিনোদনপ্রেমী মানুষের ব্যাপক সমাগম ছিল এসব বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে। এ ছাড়াও বিনোদন পেতে রাজধানীর আফতাবনগরের পূর্বাংশের খোলা জায়গায়, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার পেছনে ৩০০ ফিট সড়কের পাশে অসংখ্য মানুষ ভিড় করেন। ঈদের ছুটিতে দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় হাতিরঝিলের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে বিভিন্ন পয়েন্টে মোটরসাইকেল ও সন্দেহভাজন গাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ।

জাতীয় চিড়িয়াখানা : ঈদের দিন থেকেই ভিড় জমতে থাকে রাজধানীর উপকণ্ঠের  মিরপুরের জাতীয় চিড়িয়াখানায়। সেখানে তিল ধারণের ঠাঁই থাকেনি। সকাল থেকেই পরিবার-পরিজন, বন্ধুবান্ধব নিয়ে ছুটে আসেন বিনোদনপ্রেমীরা। মেতে ওঠেন আনন্দ আড্ডা আর খুনসুটিতে। ঈদের তিন দিনে চিড়িয়াখানায় প্রায় সাড়ে চার লাখ দর্শনার্থীর আগমন ঘটে। অতিরিক্ত মানুষের চাপে চিড়িয়াখানার প্রধান সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। মানুষের ভিড়ে ফুটপাথ দিয়েও হাঁটাচলার সুযোগ ছিল না। ঈদের দিনে দর্শনার্থীর সংখ্যা ছিল প্রায় দেড় লাখ। গতকালও দেখা গেছে উপচেপড়া ভিড়।

সাফারি পার্ক : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের রেঞ্জার মো. মোতালেব হোসেন জানান, ঈদের দিন সকাল থেকেই দর্শনার্থীরা আসতে শুরু করেন। দুপুর নাগাদ এ সংখ্যা কয়েক হাজার ছাড়িয়ে যায়। তিনি বলেন, পাঁচটি ভাগে বিভক্ত সাফারি পার্কের একটি অংশ কোর সাফারি পার্ক- যাতে বাঘ, সিংহ, ভালুক, হরিণ, জেব্রা, জিরাফ, হাতি ইত্যাদি আলাদা আলাদা সীমানা প্রাচীরের ভিতর উন্মুক্তভাবে বিচরণ করে। এসব প্রাণী দেখতে নির্ধারিত ফি দিয়ে দর্শনার্থীরা পার্কের নির্ধারিত মিনিবাস ও গাড়িতে চড়ে বেড়ান। জানা গেছে, পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটিতে বিনোদনপ্রেমী মানুষের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক। পরিবার- পরিজন নিয়ে অনেকেই আসছেন এ পার্কে। নানা প্রজাতির পাখি, বাঘ, সিংহ, ভালুক, হরিণ, বানর, সাপ, কুমির, প্রজাপতিসহ বিভিন্ন প্রাণী দেখে সবাই আনন্দ উপভোগ করছেন। গতকাল দর্শনার্থীর বেশি ভিড় ছিল কোর সাফারি পার্কে। এখানে বাঘ, সিংহ, হরিণ, জেব্রা, জিরাফ ইত্যাদি আলাদা আলাদা সীমানা প্রাচীরের ভেতর উন্মুক্তভাবে বিচরণ করেছে। এ ছাড়া নানা ধরনের পাখি শিশুদের মুগ্ধ করেছে। পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তবিবুর রহমান জানান, দর্শনার্থীদের কোর সাফারি পার্ক দেখার জন্য এখন আটটি মিনিবাস রয়েছে। প্রতিটি মিনিবাসে গড়ে ৩০ জন যাত্রী যেতে পারেন। আর বাসে কোর সাফারি পার্ক দেখতে প্রায় ২৫-৩০ মিনিট সময় লাগে।

হাতিরঝিল : রাজধানীর সাধারণ আর মধ্যবিত্তের বিনোদন কেন্দ্র বলতে এখন হাতিরঝিলই প্রধান হয়ে উঠেছে। সব মানুষের স্রোত তাই সেখানেই। ঈদের দিন সকাল থেকেই সেখানে ভিড় জমান হাজারও মানুষ। বিনোদনপ্রেমীদের জন্য নতুন সাজে প্রস্তুত করা হয়েছে হাতিরঝিল চক্রাকার বাস, ওয়াটার বাস। নামানো হয়েছে নতুন বোটও।

এবারও ঈদ উপলক্ষে হাতিরঝিলে চলছে ঈদ প্যাকেজ। ৬০ টাকাতেই ওয়াটার বাসে ঘোরা যাচ্ছে গোটা ঝিল। সন্ধ্যা হতে হাতিরঝিল সাজে রঙিন রূপে। চোখ ধাঁধানো রঙিন আলোয় ঝলমলে হয়ে ওঠে পুরো হাতিরঝিল। রঙবেরংয়ের দৃষ্টিনন্দন বাতি হাতিরঝিলকে এনে দেয় নজরকাড়া সৌন্দর্য। সরেজমিন দেখা যায়, ঈদ আনন্দ যেন উপচে পড়েছে রাজধানীর হাতিরঝিলে। বিনোদনপ্রেমী মানুষ উপভোগ করছেন হাতিরঝিলের সৌন্দর্য। গতকাল বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাতিরঝিলে বাড়তে থাকে মানুষের সংখ্যা।

জাতীয় জাদুঘর : ঈদুল ফিতরের পরের দিন রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরে প্রবেশের জন্য বিপুলসংখ্যক দর্শনার্থীর ভিড় ছিল। তবে দর্শনার্থীদের দীর্ঘ সারির কারণে জাদুঘরে প্রবেশের ক্ষেত্রে দেখা দেয় চরম বিশৃঙ্খলা। জাদুঘর খুলে দেওয়ার আগে থেকেই সেখানে ভিড় জমান দর্শনার্থীরা। এক পর্যায়ে সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। রাজধানী যাদের স্থায়ী ঠিকানা কিংবা কোনো কারণে গ্রামে যেতে পারেননি তাদের জন্য জাতীয় জাদুঘর ছিল অন্যতম লক্ষ্য। সুবিধাবঞ্চিত শিশু, প্রতিবন্ধী ও শিক্ষার্থীদের বিনা টিকিটে জাতীয় জাদুঘর পরিদর্শন করার সুযোগ রেখেছে সরকার।

পূর্বাচলের বালু নদী : রাজধানীর পূর্বাচলের বালু নদী এখন মহানগরীর তরুণ-তরুণীদের বিনোদনের অন্যতম আকর্ষণ। ঈদের পরদিন তরুণ-তরুণীদের নাচের ঝঙ্কারে উত্তাল হয়ে উঠে নদী। এ দৃশ্য উপভোগ করেন নদীর পাড়ে বসে থাকা হাজারও উৎসুক মানুষ। রঙিন কাগজে সাজানো ইঞ্জিনচালিত ছোট-বড় নৌকা সুরের তালে তালে দুলেছে। আর উচ্চ শব্দে বেজেছে দেশি-বিদেশি গান। গানের তালে তালে নেচে গেয়ে উল্লাস করেন তরুণ-তরুণীরা। ঈদের দিন থেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে নৌকা ভ্রমণে বের হন অনেকেই। কেউ নদীর তীরে বসে বন্ধুবান্ধব নিয়ে চুটিয়ে আড্ডা দিয়েছেন। তবে বেলা যতই গড়িয়ে গেছে ততই বাড়তে দেখা গেছে মানুষের ঢল।

খুলনার বিনোদন কেন্দ্র : খুলনা থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, ঈদের ছুটিতে খুলনার সব বিনোদন কেন্দ্রকে হার মানিয়েছে নগরীর ৭ নম্বর ঘাট ও রূপসা সেতু এলাকায় নদীর পাড়ে গড়ে ওঠা মনোরম বিনোদন স্পট। ইট-পাথরের ব্যস্ত শহরে ক্লান্তিকর নাগরিক জীবনকে পেছনে ফেলে নদীর সুন্দর ও নান্দনিক দৃশ্য উপভোগ করতে এখানে জড়ো হচ্ছেন বিনোদনপ্রিয় মানুষ। ৭ নম্বর ঘাট এলাকায় নদীর পাড়ে প্রায় এক কিলোমিটার জায়গাজুড়ে ঢল নামছে মানুষের। রূপসা সেতু এলাকায় জমে উঠেছে সপ্তাহব্যাপী ঈদ মেলাও। এদিকে ঈদে খুলনার গিলাতলা চিড়িয়াখানা ও শিশুপার্ক রয়েছে ভ্রমণপিপাসুদের দখলে। একটু নির্মল বাতাস এবং পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আনন্দ উপভোগ করতে মানুষ ছুটে আসেন এখানে। নিরাপত্তাবেষ্টিত এ চিড়িয়াখানায় সুন্দরবনের বাঘ রয়েল বেঙ্গল টাইগার, চিতাবাঘ, কুমির, হরিণ, বানর, হনুমান, ভালুক, অজগর সাপসহ নানা ধরনের পশু পাখি দেখতে ভিড় জমান অনেকে। খালিশপুর ওয়ান্ডারল্যান্ড শিশু পার্কটিকে ঈদ উপলক্ষে সাজানো হয়েছে নতুন করে। পার্কের ব্যবস্থাপক গোলাম মোস্তফা বলেন, ঈদের প্রথম দিন থেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে আনন্দ করতে বিনোদনপ্রিয় মানুষ পার্কে ভিড় জমিয়েছেন। সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা এখানে বিনা টিকিটে প্রবেশ ও রাইডগুলোতে চড়ার সুযোগ পাবে। শহরের কোলাহল ছেড়ে খুলনার বটিয়াঘাটায় পশুর নদীর পাড়ে ওয়াইসি রিসোর্ট এবং রূপসা নদীর পাড়ে গড়ে ওঠা শেখ রাসেল ইকোপার্ক ঈদের আনন্দকে বাড়তি মাত্রা দিয়েছে।  সুন্দরবনের আদলে সাজানো হয়েছে এসব বিনোদন কেন্দ্রকে। তাছাড়া ঐতিহ্যবাহী হাদিস পার্ক, লিনিয়ার পার্ক, শান্তিধাম মোড়ের জাতিসংঘ শিশুপার্কে ছিল বিনোদনপ্রিয় মানুষের ভিড়। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান মিঠু গতকাল বলেন, ঈদে বিনোদন স্পটগুলোতে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

প্রতিটি জায়গায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এখনো কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

পর্যটকের ঢল সিলেটে : সিলেট থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, সিলেটে আসলেই ঘুরে বেড়ানোর জন্য পর্যটকদের প্রথম পছন্দে থাকে জাফলং। প্রকৃতিকন্যা জাফলংয়ে গিয়ে পিয়াইনের স্বচ্ছ জলে শীতল অবগাহনে মেতে ওঠেন তারা। অন্যান্য স্থানের চেয়ে জাফলংয়ের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় এবার পর্যটকদের সবচেয়ে বেশি ঢল নেমেছে জাফলংয়ে। পিয়াইনে ¯œাত হওয়া ছাড়াও তারা জাফলংয়ে ঘুরে দেখছেন ওপারের মেঘালয় পাহাড় থেকে নেমে আসা ঝরনাধারা, ঝুলন্ত ডাউকি ব্রিজ, সমতল চা- বাগান, খাসিয়াদের বৈচিত্র্যময় জীবনধারাসহ চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য। ফেরার পথে পর্যটকরা ঢুঁ মারছেন জৈন্তাপুরের লালাখালে সবুজ পান্না জলের সারী নদীতে। তবে জাফলংয়ে পর্যটকদের সবচেয়ে আগ্রহের স্পট হয়ে দাঁড়িয়েছে মায়াবতী ঝরনা। ভারতের পাহাড় থেকে নেমে আসা বিশাল ঝরনার জলে ¯œাত হয়ে পর্যটকরা শীতল করে নেন নিজেদের।

জাফলং ছাড়াও পর্যটকদের ঢল নেমেছে জল-পাথর-পাহাড়ের মিতালির বিছনাকান্দি, দ্বিতীয় সুন্দরবন হিসেবে খ্যাত দেশের একমাত্র সোয়াম্প ফরেস্ট রাতারগুল, মায়াবী সৌন্দর্যের মায়াবন, বিস্তীর্ণ ঝরনাধারার পাংথুমাই, ঐতিহাসিক মেগালিথিক পাথর ও ঐতিহ্যের স্মারক  জৈন্তিয়া রাজবাড়ি, প্রকৃতির আশ্চর্যময় সৌন্দর্যের লীলাভূমি লোভাছড়ায়।

প্রতি বছর এসব স্থানে বেড়াতে এসে দুর্ঘটনায় পড়ে পর্যটকদের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে থাকে। কিন্তু এ বছর পর্যটকদের নিরাপত্তায় জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা। পর্যটকদের জন্য বিভিন্ন স্থানে টানানো হয়েছে সতর্কতামূলক সাইন বোর্ড। নদীতে কোনো পর্যটক ডুবে গেলে তাকে উদ্ধারে জাফলংয়ে রাখা হয়েছে প্রশিক্ষিত ডুবুরিসহ স্পিডবোট। প্রশাসনের এই উদ্যোগের কারণে এবার এখন পর্যন্ত কোথাও কোনো দুর্ঘটনা বা প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি।

শহরের বাইরের পর্যটনকেন্দ্র ছাড়াও নগরীর বিভিন্ন বিনোদনকেন্দ্র, শিশুপার্ক, দর্শনীয় স্থান ও চা-বাগানগুলোতেও পর্যটকদের ঢল নামে ঈদের দিন বিকাল থেকে। ঈদের ছুটি শেষ হয়ে গেলেও এখনো পর্যটকদের পদচারণা কমেনি সিলেটে।

শরীয়তপুরে উপচেপড়া ভিড় : শরীয়তপুর প্রতিনিধি জানান, জেলার একমাত্র নড়িয়া উপজেলার কোলকাঠি মডার্ন ফ্যান্টাসি কিংডম নির্মিত হয়েছে একটি সামাজিক বিনোদন কেন্দ্র। প্রতি বছরের মতো এখানে এবারও নতুন নতুন পশু পাখি, রাইড, ঔষধি গাছসহ রয়েছে নানা ধরনের উপকরণ। ঈদের দিন বৃষ্টির হানায় দর্শনার্থী ছিল কম। তবে সেই তুলনায় ঈদের পরদিন সকাল থেকেই মানুষের উপচেপড়া ভিড় পুরো এলাকাজুড়ে। দূর-দূরান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীরা বিশাল অজগর সাপ, কুমির, বানর, চিতাবাঘ, ময়ূর, সজারু, ভালুক, কচ্ছপ, উটপখি, ইমু পাখি, কালিম পাখি, খরগোশ, গিনিপিগ, সজারু, ব্যাঙ, বিদেশি ছাগল, ভেড়া, ঘোড়া, বক্সার ডক এবং অ্যাকুরিয়ামে বিদেশ থেকে আনা বিভিন্ন প্রজাতির মাছসহ বেশ কয়েকটি শেডের সামনে ভিড় জমাচ্ছেন।

নওগাঁর কুসুম্বা মসজিদ দেখতে ভিড় :  নওগাঁ প্রতিনিধি জানান, মুসলিম স্থাপত্যের এক অপূর্ব নিদর্শন নওগাঁর কুসুম্বা মসজিদ। ঈদের দিন দুপুরের পর থেকে এখানে দর্শনার্থীদের আনাগোনা শুরু হয়েছে। গতকালও দুপুর থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ছিল উপচেপড়া ভিড়।

নওগাঁ জেলা শহর থেকে প্রায় ৩৩ কিলোমিটার দূরে মান্দা উপজেলার নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়কের পাশে অবস্থিত এই মসজিদ। পাঁচ টাকার কাগজের নোটে মুদ্রিত আছে এ মসজিদটি ছবি। ১৫৫৮ খ্রিস্টাব্দে সুলতান গিয়াস উদ্দিন বাহাদুর শাহের রাজত্বকালে সুলতান সোলায়মান নামে এক ব্যক্তি মসজিদটি নির্মাণ করেন। যার দৈর্ঘ্য প্রায় ৬০ ফুট ৬ ইঞ্চি এবং প্রস্থ প্রায় ৪৪ ফুট ৬ ইঞ্চি। ছয় গম্বুজবিশিষ্ট মূল্যবান কালো পাথর দিয়ে নির্মিত এই মসজিদটি প্রায় ৪৬১ বছরের ইতিহাস বহন করে। গম্বুজগুলো পিলারের ওপর স্থাপিত। পূর্ব দেয়ালে তিনটি প্রবেশপথ খাঁজকাটা খিলানযুক্ত। মাঝের প্রবেশপথের ওপর প্রস্তর ফলকে একটি আরবি ভাষায় লিপি উৎকীর্ণ আছে।

মুখরিত মৌলভীবাজারের পর্যটন স্পট : মৌলভীবাজার প্রতিনিধি জানান, পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটিতে পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড়ে মুখরিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার মাধবকুন্ড জলপ্রপাত, কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানসহ সব কয়টি পর্যটন কেন্দ্রগুলো। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের ভিড় প্রতিদিনই বেড়ে চলেছে। এ ছাড়া পর্যটন স্পটগুলোর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন উপজেলায় টিলাঘেরা সবুজ চা-বাগান, খাসিয়া পল্লী, এশিয়ার বৃহত্তম হাকালুকি হাওর, কমলগঞ্জের, ছায়া নিবিড় পরিবেশে অবস্থিত নয়নাভিরাম মাধবপুর লেক, ঝরনাধারা হামহাম জলপ্রপাত, মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জি, শিল্পকলা সমৃদ্ধ মণিপুরীসহ  ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, শ্রীমঙ্গলের নীলকণ্ঠের সাত রংয়ের চা, চা গবেষণা কেন্দ্র, কুলাউড়ার ঐতিহ্যবাহী নবাববাড়ী, মুরইছড়া ইকোপার্ক, গগন টিলা, দোলন চাপা ইকোপার্ক, মৌলভীবাজার সদরের বর্ষীজোড়া ইকোপার্ক, মুন ব্যারেজসহ জেলার বিভিন্ন চা-বাগান।

বনবিভাগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঈদের প্রথম দিন বুধবার থেকে তৃতীয় দিন গতকাল বিকাল ৩টা পর্যন্ত মাধবকুন্ড জলপ্রপাতে প্রায় ১৫ হাজার পর্যটকের সমাগম ঘটে। প্রতিদিন আশপাশের উপজেলার মানুষ ছাড়াও দেশের অন্যান্য জেলা এবং বিদেশি পর্যটকরা ভিড় করছেন মাধবকুন্ডে।

সর্বশেষ খবর