রবিবার, ৯ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

বিনোদন কেন্দ্রে এখনো ভিড়

প্রতিদিন ডেস্ক

বিনোদন কেন্দ্রে এখনো ভিড়

ঈদ শেষ হলেও গতকাল পর্যন্ত ছুটির আমেজ ছিলই। আর এ আমেজকে অবলম্বন করে জমজমাট থেকেছে দেশের প্রায় সব বিনোদন পার্ক। সকাল থেকে এসব স্পট ছিল লোকে লোকারণ্য। বিশেষ করে ভিড় ছিল শিশু, কিশোর এবং নারীদের। বিভিন্ন স্থান থেকে পাঠানো আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো বিবরণ-

কুমিল্লা : ঈদের চতুর্থ দিনেও গতকাল কুমিল্লার ঈদ বিনোদন কেন্দ্রে দর্শনার্থীদের প্রচ- ভিড় ছিল। পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ ছিল শালবন বৌদ্ধবিহার ও ময়নামতি জাদুঘর। পাশের রূপবানমুড়া, কোটিলা মুড়া, নগরীর চিড়িয়াখানা ও বাণিজ্যিক পার্কগুলোতেও দর্শনার্থীরা ভিড় করেন।

এ সময় ব্যাংকার খোরশেদ আলম মোল্লা বলেন, শালবন বিহারসহ অন্যান্য প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানগুলো বেড়ানোর দারুণ জায়গা। তবে এগুলো সুরক্ষিত করা গেলে আরও দর্শক ও সরকারের রাজস্ব আয় উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানো সম্ভব।

নরসিংদী : বর্তমান সরকারের অন্যতম উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ স্বপ্নের পদ্মা সেতু। সেতুটিকে ঘিরে সারা দেশবাসীর আগ্রহের কমতি নেই। তারই ফলে নরসিংদীর পাঁচদোনার ড্রিম হলিডে পার্কে স্থাপিত হয়েছে পদ্মা সেতুর রেপ্লিকা। ফলে ঈদের ছুটিতে পার্কের অন্যান্য রাইডের পাশাপাশি পদ্মা সেতু দেখতে দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড় লেগেই রয়েছে। পার্ক কর্তৃপক্ষ বলছে, ঈদের আনন্দ বাড়িয়ে দিতে বিনোদন কেন্দ্রে সংযোজন করা হয়েছে নতুন সব রাইড। এবারের ঈদ ঘিরে দেশের বিভিন্ন উন্নয়ন মডেলের প্রতিকৃতি অর্থাৎ পদ্মা সেতু, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ১, সাবমেরিন, কর্ণফুলী টানেলের আদলে স্থাপনা  তৈরিসহ হ্যালিপ্যাড ও থ্রিডি সংযোজন করা হয়েছে। প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে ঈদের দিন তেমন দর্শনার্থী না থাকলেও বৃহস্পতিবার থেকে দর্শনার্থীদের ভিড় বেড়েছে পার্কটিতে।

দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি ভিড় দেখা গেছে ওয়াটার পার্ক, ভূতের বাড়ি, ক্যাবল কার রোলার কোস্টার, বুলেট ট্রেন ও রিভার ক্রোজে। অন্যান্য রাইডের পাশাপাশি নতুন সংযোজন পদ্মা সেতু,  বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ১, সাবমেরিন, কর্ণফুলী টানেলে দর্শনার্থীদের ছিল উপচেপড়া ভিড়। আগত দর্শনার্থীরা বিভিন্ন স্থাপনার সামনে দাঁড়িয়ে মুঠোফোনে ছবি তুলে দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখেন।

দিনাজপুর : উপচেপড়া ভিড় রয়েছে দিনাজপুরের সিটিপার্ক, মায়াবী স্বপ্নময় ভুবন স্বপ্নপুরীসহ রামসাগর, মোহনপুরের রাবার ড্যাম, বড়মাঠের ঈদ আনন্দ মেলা, নবাবগঞ্জের আশুড়ার বিলে শেখ ফজিলাতুন নেছা কাঠের সেতু, বীরগঞ্জের সিংড়া ফরেস্টসহ বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্র। এদিকে প্রাকৃতিক পরিবেশের ঐতিহাসিক রামসাগরেও থাকছে ব্যাপক সমাগম। দর্শকরা এখানে দেখছেন কৃত্রিম পাহাড়ি প্রাকৃতিক পরিবেশ, মিনি চিড়িয়াখানা, নীল গাই, চিত্রা হরিণ, অজগর সাপসহ বিভিন্ন পাখি।

পীরগঞ্জ (ঠাকুরগাঁও) : দর্শনার্থীদের কোলাহলে মুখরিত রয়েছে পীরগঞ্জের বলাকা উদ্যান, মোহিনী তাজ, ফানসিটি শিশু পার্ক, সাগুনী রাবার ড্যাম, থুমনিয়া শালবন, রানী সাগর, রাজা টঙ্কনাথের রাজবাড়ি, দুই বিঘা এলাকা। বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে শিশুরা যেমন কাটাচ্ছে আনন্দঘন সময়, বড়রাও তেমনি অবসর সময়টা উপভোগ করছেন হাসি আর আড্ডায়। বিনোদন কেন্দ্রগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে সদর উপজেলার বলাকা উদ্যান, মোহিনী তাজ, পীরগঞ্জের ফানসিটি ও শিশু পার্ক, সাগুনী রাবার ড্যামসংলগ্ন শালবন আর রানীশংকৈলের রানী সাগরে।

মৌলভীবাজার : ছুটিতে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়ে মুখরিত রয়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার মাধবকুন্ড জলপ্রপাত, কমলগঞ্জ উপজেলার  লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানসহ সব কয়টি পর্যটনকেন্দ্র। এই সঙ্গে জমজমাট রয়েছে টিলাঘেরা সবুজ চা-বাগান, খাসিয়া পল্লী, এশিয়ার বৃহত্তম হাকালুকি হাওর, কমলগঞ্জের ছায়ানিবিড় পরিবেশে অবস্থিত নয়নাভিরাম মাধবপুর লেক, ঝরনাধারা হামহাম জলপ্রপাত, মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জি, শিল্পকলা সমৃদ্ধ মণিপুরীসহ  ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, শ্রীমঙ্গলের নীলকণ্ঠের সাত রংয়ের চা, চা গবেষণা কেন্দ্র, কুলাউড়ার ঐতিহ্যবাহী নবাববাড়ী, মুরইছড়া ইকোপার্ক, গগন টিলা, দোলনচাঁপা ইকোপার্ক, মৌলভীবাজার সদরের বর্ষীজোড়া ইকোপার্ক, মুন ব্যারেজসহ বিভিন্ন চা-বাগান। সকাল থেকে এসব স্থানে অগণিত মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন।

সিলেট : সিলেটের জাফলংসহ পর্যটকদের ঢল নেমেছে জল-পাথর-পাহাড়ের মিতালির বিছনাকান্দি, দ্বিতীয় সুন্দরবন হিসেবে খ্যাত দেশের একমাত্র সোয়াম্প ফরেস্ট রাতারগুল, মায়াবী সৌন্দর্যের মায়াবন, বিস্তীর্ণ ঝরনাধারার পাংথুমাই, ঐতিহাসিক মেগালিথিক পাথর ও ঐতিহ্যের স্মারক জৈন্তিয়া রাজবাড়ি, প্রকৃতির আশ্চর্যময় সৌন্দর্যের লীলাভূমি লোভাছড়ায়। শহরের বাইরের পর্যটনকেন্দ্র ছাড়াও নগরীর বিভিন্ন বিনোদনকেন্দ্র, শিশুপার্ক, দর্শনীয় স্থান ও চা বাগানগুলোতে পর্যটকের ঢল নামছে ঈদের দিন বিকাল থেকে। ঈদের ছুটি শেষ হলেও এসব স্থানে এখনো পর্যটকদের পদচারণা কমেনি।

গাজীপুর : বৃহস্পতিবার থেকে বিপুল সংখ্যক দর্শনার্থী ভিড় জমাচ্ছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে। গতকালও হাজার হাজার দর্শনার্থীর সমাগম ঘটে। কর্তৃপক্ষ জানায়, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় দর্শনার্থীর ঢল নেমেছে। দর্শনার্থীর বেশি ভিড় ছিল কোর সাফারি পার্কে। গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার ভুবনের চালা এলাকার বিল্লাল হোসেন এসেছিলেন স্ত্রী, ভাই-ভাবী এবং তাদের এক সন্তান নিয়ে। তিনি জানান, দুপুর ১২টার দিকে সাফারি পার্কে এসে পৌঁছান। এসেই দেখেন কোর সাফারি পার্কের সামনে লম্বা লাইন। পরে পার্কের অন্যান্য অংশ ঘুরে দেখেন। তিনি বলেন, তখন থেকে বিকাল ৩টা অবধি মাঝে মধ্যে এসে দেখেছি লাইন ছোট হচ্ছে না। পরে পার্কের অন্যান্য অংশ দেখার পর প্রায় এক ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে কোর সাফারি অংশের ভিতরে ঢুকতে পেরেছি। সেখানে মুক্ত পরিবেশে বাঘ, ভালুক, সিংহ, জিরাফ, জেব্রা, হরিণসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণী বিচরণ করতে দেখতে পেরে আমাদের সব কষ্ট দূর হয়েছে। 

সর্বশেষ খবর