রবিবার, ৯ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

রহস্য উন্মোচিত হয়নি ১০ দিনেও

কারাগারে খুন

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

রহস্য উন্মোচিত হয়নি ১০ দিনেও

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে অমিত মুহুরী খুনের ১০ দিন অতিবাহিত হলেও এ খুন নিয়ে নতুন কোনো তথ্য পায়নি পুলিশ। এমনকি বের করতে পারেনি খুনের আসল কারণ। এ খুনের রহস্য উন্মোচনে পুলিশ ভিন্ন পথ অনুসরণ করছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক আজিজ আহমেদ বলেন, ‘এখনো বলার মতো কোনো অগ্রগতি নেই। এ খুনের একমাত্র আসামি রিপন ঘুরেফিরে একই কথা বলছে।’

মামলা তদন্ত-সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা বলেন, সাধারণ দৃষ্টিতে রিপন নাথকে ‘ছিঁচকে’ অপরাধী মনে হলেও রিমান্ডে আনার পর তার আসল রূপ বের হয়েছে। রিমান্ডে সে দুর্ধর্ষ অপরাধীদের মতো আচরণ করছে। তার কাছ থেকে তথ্য বের করতে তদন্ত দলের ঘাম ঝরছে। তাকে নানা প্রশ্ন করা হলেও অনেকক্ষণ অপেক্ষা করে একেকটা প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে সে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরেক কর্মকর্তা বলেন, ‘রিপনকে শুরুতে সাধারণ পরিবারের সন্তান মনে হলেও জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য বের হয়ে এসেছে। তার ছয় ভাইবোনের মধ্যে দুজন ভারতে এবং একজন আরব আমিরাতে বসবাস করেন। মামলার তদন্তের অংশ হিসেবে তাদের পারিবারিক ইতিহাস বের করা হচ্ছে। একই সঙ্গে তাদের ব্যাংক হিসাব ও দেশে থাকা স্বজনদের মোবাইলের কললিস্ট পর্যালোচনা করা হচ্ছে।’

পিসির টাকা ব্যবহার করেনি রিপন : কারাগারে ব্যক্তিগত খরচের (পিসি) জন্য পাঠানো টাকা ব্যবহার করত না অমিত মুহুরী হত্যায় অভিযুক্ত রিপন নাথ। খুনের দুই মাস আগে থেকেই রিপন পিসির টাকা ব্যবহার বন্ধ করে দিলেও কারাগারে আয়েশি জীবন যাপন করত সে।

কেউ জানে না অমিতের পরিবারের খবর : কারাগারে খুন হওয়া অমিত মুহুরীর পরিবারের খোঁজ নেই কারও কাছে। তার বাবা অরুণ মুহুরীর ব্যবহার করা মোবাইল ফোনও বন্ধ রয়েছে অমিত খুন হওয়ার পর থেকে। এমনকি নগরের নন্দনকানন এলাকার বাসাও তালাবদ্ধ রয়েছে কয়েক দিন ধরে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আজিজ আহমেদ বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে চেষ্টা করছি অমিতের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের। তার বাবার মোবাইল বন্ধ রয়েছে। তাদের নন্দনকানন এলাকার বাসায় গিয়েও দেখা যায় ঘর তালাবদ্ধ। পরিচিত জনের কেউ তার পরিবারের খবর দিতে পারেনি।’

এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, অমিতের পরিবার অনেক আগে থেকে ভারতে বসবাস করছে। ধারণা করা হচ্ছে তাদের সবাই ভারতে চলে গেছেন।

কারাগারের পাঁচ কর্মকর্তাকে শোকজ : অমিত মুহুরী খুনের ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের পাঁচ কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে শোকজ করা হয়েছে। এরা হলেন- সিআইডি কারারক্ষী হাবিবুল বাশার, সিআইডিরক্ষী লুৎফর কবির, সুবেদার সালামত উল্লাহ, সহকারী প্রধানরক্ষী হুমায়ন কবির ও কারারক্ষী শাহ পরান। এদের সাত কর্মদিবসের মধ্যে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে। প্রসঙ্গত, ২৯ মে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে খুন হন রেলের দরপত্র নিয়ে জোড়া খুনসহ অন্তত ১৭টি মামলার আসামি অমিত মুহুরী।

সর্বশেষ খবর