রবিবার, ৯ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

রাজধানীর দুই সিটির কুকুর চিহ্নিত হচ্ছে লাল ও গোলাপি রঙে

মোস্তফা কাজল

রাজধানীর দুই সিটির বেওয়ারিশ ৪৮ হাজার কুকুর চিহ্নিত হচ্ছে লাল ও গোলাপি রঙে। কয়েক দিন ধরে হঠাৎ করেই রাজধানীর অলিতে-গলিতে রঙিন কুকুর দেখা যাচ্ছে। এসব কুকুরের মধ্যে উত্তর সিটির কুকুরের গায়ে লাল ও দক্ষিণ সিটির কুকুরের গায়ে গোলাপি রং লাগানো হচ্ছে। অনেকেই ঢাকা শহরজুড়ে কুকুরগুলোকে এমন রাঙিয়ে দেওয়ার বিষয়ে কিছুটা কৌতূহলী হয়েছেন- কুকুরগুলোকে কারা এমন সাজিয়েছে? রাজধানীর জলাতঙ্ক নির্মূলে এসব কুকুরকে টিকা দেওয়ার পর এভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সার্বিক সহযোগিতায় কুকুরগুলোকে না মেরে টিকা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা। ২০৩০ সালের আগেই দেশ থেকে জলাতঙ্ক নির্মূল করতে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী এ কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।  গত ১০ মে থেকে ৫ জুন পর্যন্ত ৪২ হাজার ৯৩৫টি কুকুরকে টিকা দেওয়া হয়েছে। টিকা দেওয়ার পর যাতে এক কুকুরকে দুবার টিকা না দিতে হয় সেজন্য চিহ্নিত করতে কুকুরগুলোর গায়ে মুছে যাবে না এমন লাল ও গোলাপি রং লাগানো হয়েছে। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের (সিডিসি) উপপরিচালক ডা. উম্মে রুমান সিদ্দিকী বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য ২০৩০ সালের আগেই দেশ থেকে জলাতঙ্ক নির্মূল করা। সে লক্ষ্যকে সামনে রেখে রাজধানীজুড়ে উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সার্বিক সহযোগিতায় আমরা ৪২ হাজার হাজার ৯৩৫টি কুকুরকে জলাতঙ্ক প্রতিরোধক টিকা দেওয়া সম্পন্ন করেছি। রাজধানীতে বর্তমানে ৪৮ হাজারের বেশি কুকুর রয়েছে। এত কুকুরকে টিকা দেওয়া আমাদের জন্য প্রায় অসম্ভব। তবে সর্বোচ্চ চেষ্টাটি আমরা করেছি। স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার এমন কর্মকান্ডে  বেশ খুশি নাগরিকরা। অভিযোগ আছে, টিকা দিলেও বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় কুকুরের পরিমাণ এতই বেশি যে, কুকুরের চেঁচামেচি ও মারামারিতে প্রতিরাতেই নির্বিঘ্নে ঘুমাতে পারছেন না তারা। শুধু রাতেই নয়, দিনভর চলে তাদের ছোটাছুটি। এতে নাগরিক জীবন বিরক্তিকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঘটছে নানা অনাকাক্সিক্ষত ঘটনাও।

জানতে চাইলে ঢাকা সিটি করপোরেশনের (উত্তর) প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মোমিনুর রহমান মামুন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, টিকা দেওয়ার পরে এক এলাকার কুকুর যেন অন্য এলাকায় না ছেড়ে দেওয়া হয় সেদিকে বিশেষ লক্ষ্য রাখছি আমরা। এ কাজে আমাদের সহযোগিতা করেছে অভয়ারণ্য নামে একটি প্রতিষ্ঠান। তারা প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিয়ে জনবল তৈরিতে সহায়তা করছে। কুকুরের টিকাদান কর্মসূচি বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, কুকুর অত্যন্ত প্রভুভক্ত ও বিশ্বাসী প্রাণী। দেশের ৯০ ভাগ কুকুরই বেওয়ারিশ। আমাদের দেশে রাস্তায় যেভাবে কুকুর ঘুরে বেড়ায় উন্নত বিশ্বে এমনটা দেখা যায় না। আর এসব বেওয়ারিশ কুকুরই মারামারি করে ও জলাতঙ্ক ছড়ায়।

সর্বশেষ খবর