শিরোনাম
সোমবার, ১০ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

নরসিংদীতে ছাত্রলীগের হামলায় ৫ পুলিশ আহত, গ্রেফতার ৬

নরসিংদী প্রতিনিধি

নরসিংদীর পলাশে দায়িত্ব পালনের সময় পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা চালিয়েছে স্থানীয় ছাত্রলীগ। এ সময় পুলিশ সদস্যদের বেধড়ক মারপিট করে। ছাত্রলীগ সদস্যরা পুলিশের ইউনিফর্ম ছিঁড়ে ফেলে। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। এ সময় চরসিন্দুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জসহ ৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়। এ ঘটনায় পলাশ থানা ছাত্রলীগের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ রাজনসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারের পর গতকাল বিকালে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। 

গ্রেফতারকৃতরা হলো- পলাশ থানা ছাত্রলীগের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ রাজন (৩২), লাল মিয়ার ছেলে সুমন মিয়া (২৫), আবু সাইদ ভূইয়ার ছেলে শফিকুল ভূইয়া (২৪), মোবারক মোল্লার ছেলে জাহির (১৯), কাজল মিয়ার ছেলে শুভ মিয়া (২০) ও রাজন (২৭)। তারা সবাই চরসিন্দুর ইউনিয়নের বাসিন্দা। পলাশ থানা সূত্রে জানা যায়, শনিবার সন্ধ্যায় গাজীপুর জেলার কালিগঞ্জ হতে ছাত্রলীগের কয়েকজন পলাশ উপজেলার চরসিন্দুর নতুন ব্রিজে ঘুরতে আসে। ওই সময় তারা ব্রিজের এক পাশে বসে তাস খেলছিল। এ সময় হৃদয় নামে স্থানীয় এক যুবক তাদের তাস খেলতে নিষেধ করে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে কালিগঞ্জ থেকে ঘুরতে আসা ছাত্রলীগ সদস্যরা বিষয়টি পলাশ থানা ছাত্রলীগের সভাপতি রাজনকে জানায়। এরই জেরে পলাশ থানা ছাত্রলীগের সভাপতির লোকজন হৃদয়কে মারপিট করতে থাকে। খবর পেয়ে চরসিন্দুর ক্যাম্পের আইসিসহ পুলিশের একটি দল সেখানে যায়। এবং উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানায়। কিন্তু তারা পুলিশের কথা অমান্য করে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠি চার্জ করে পুলিশ। এ সময় পলাশ থানা ছাত্রলীগের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ রাজনের ওপর লাঠির আঘাত লাগে। এতে ছাত্রলীগ নেতার সমর্থকরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। পরে ছাত্রলীগ নেতা ও তার সমর্থকরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এ সময় ছাত্রলীগ নেতারা পুলিশকে মারপিট করে। একই সঙ্গে পুলিশের গায়ে থাকা ইউনিফর্ম ছিঁড়ে ফেলে। এ সময় আহত হয় চরসিন্দুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই প্রদীপ কুমার দাশ, কনস্টেবল জাহিদ, নাদিম, গাইয়ুম ও নায়েক আলামিন। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় চরসিন্দুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ প্রদীপ কুমার দাশ বাদী হয়ে ১১ জনকে আসামি করে পলাশ মডেল থানায় মামলা দায়ের করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল দুপুরে পুলিশ পলাশ থানা ছাত্রলীগের সভাপতিসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করে। পরে বিকালে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। চরসিন্দুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ প্রদীপ কুমার দাশ বলেন, চরসিন্দু ব্রিজ এলাকায় দুই পক্ষের মারপিট হচ্ছে, এমন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে যাই। দুই পক্ষকেই শান্ত থাকার আহ্বান জানাই। এরই মধ্যে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা অতর্কিত পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এবং পুলিশের ইউনিফর্ম ছিঁড়ে ফেলে। এ সময় তাদের হামলায় ৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়। বিষয়টি জানতে পলাশ থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আপেল মাহামুদকে ফোন করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মকবুল হোসেন মোল্লা বলেন, পুলিশকে মারপিট ও লাঞ্ছিত করার অভিযোগে পলাশ থানা ছাত্রলীগের সভাপতি রাজনসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরে আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে প্রেরণ করা হয়।

সর্বশেষ খবর