শিরোনাম
সোমবার, ১০ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা
কৃষি সংবাদ

জমছে আমের হাট

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

জমছে আমের হাট

জেলা প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া সময় অনুযায়ী এবার গাছ থেকে আম নামানোর আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় মে মাসেই। কিন্তু রোজার কারণে সেভাবে আম নামাননি রাজশাহীর চাষি ও ব্যবসায়ীরা। ঈদের ছুটি এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। তাই শনিবার থেকে পুরোদমে আম নামানো শুরু হয়েছে রাজশাহীতে। এতে আমের বাজার ভরে উঠতে শুরু করেছে। বেচাকেনাও জমে উঠছে। তবে এবার রাজশাহীতে আমের বাজার চড়া। স্থানীয় চাষি ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, নানা কারণে এবার আমের উৎপাদন কম হয়েছে। এতে সরবরাহ কম থাকায় এবার আমের বাজার চড়েছে। আর একই কারণে এ বছর সময়ের আগেই আম ফুরিয়ে যাবে রাজশাহীর বাজার থেকে। রাজশাহী জেলার সবচেয়ে বড় আমের মোকাম পুঠিয়ার বানেশ্বরহাট। রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কের পাশেই থাকা পুরনো কাচারি মাঠকে ঘিরে ধুলাবালি ও প্রচ- গরম উপেক্ষা করে এখন আমের হাট জমতে শুরু করেছে। সেখানে গিয়ে দেখা গেছে, বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আমবোঝাই ভ্যানগাড়ি ও নসিমনগুলোর জটলা। সবাই গাদাগাদি করে আমের পসরা সাজিয়ে বসেছেন। প্লাস্টিকের ক্যারেটে করে থরে থরে সাজানো হয়েছে রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন জাতের কাঁচা-পাকা আম। ক্রেতা-বিক্রেতাদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে রাজশাহীর সবচেয়ে বড় এই আমের হাট। ঈদের ছুটিতে বেড়াতে এসে অনেকেই প্রিয়জনদের জন্য ফেরার পথে আমের ঝুড়ি নিয়ে ফিরছেন। খুচরা ব্যবসায়ী ও পাইকারদের মধ্যে চলছে আম নিয়ে দামাদামি। জেলা প্রশাসনের নির্দেশ মতে, গত ২০ মে থেকে জাত আম খ্যাত গোপালভোগ বাজারে আসে। বর্তমানে গোপালেই জমতে শুরু করেছে আমের হাট। তবে সরবরাহ কম থাকায় দাম চড়া। বানেশ্বরহাটের আম ব্যবসায়ী হোসেন আলী বলেন, প্রথমদিকে হাটে গোপালভোগ, গুটি, রানীপছন্দ- এই তিন জাতের আম বিক্রি শুরু হয়। শুরুতে গোপালভোগ প্রতি মণ ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকায় এবং গুটি জাতের ও রানীপছন্দ আম ৯০০ থেকে শুরু করে ১ হাজার ৬০০ টাকায় পাইকারি বিক্রি হয়েছে। কিন্তু ঈদের পর দাম বেড়েছে। এখন গুটি আম নেই। গোপালভোগ প্রতি মণ ২ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার টাকা, খিরসাপাত ২ হাজার ১০০ থেকে ২ হাজার ৩০০ টাকা ও রানীপছন্দ আম ১ হাজার ৮০০ থেকে থেকে ২ হাজার টাকা মণ দরে পাইকারি বিক্রি হচ্ছে। প্রতিদিনই দর বাড়ছে বলে জানান তিনি। ব্যবসায়ী ফরিদ উদ্দিন বলেন, রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, বরিশাল, খুলনা, ময়মনসিংহ থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা রাজশাহী থেকে আম নিয়ে যাচ্ছেন। স্থানীয়ভাবেও আম বিক্রি শুরু হয়েছে। সারা দেশের চাহিদা মেটাতে এরই মধ্যে সুস্বাদু আম রাজশাহীর পুঠিয়া, দুর্গাপুর, বাঘা, চারঘাট, পবা, মোহনপুর, তানোর, গোদাগাড়ী, বাগমারাসহ আশপাশের এলাকা থেকে আসতে শুরু করেছে। আম ব্যবসায়ী শফিকুল বলেন, এবার শুরু থেকেই ঘন কুয়াশা, ঝড় ও শিলাবৃষ্টি এবং তাপদাহের কবলে পড়ে রাজশাহীর আম। এ কারণে আমের অনেক ক্ষতি হয়েছে। অনেক এলাকায় ফলন কমেছে। যে কারণে সরবরাহ অন্যান্য বছরের তুলনায় কম। আর তাই দামও একটু বেশি বলে জানান এই ব্যবসায়ী। এদিকে, রাজশাহী জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গত ১৫ মে থেকে গুটি আম নামান চাষিরা। উন্নত জাতের মধ্যে গোপালভোগ ২০ মে, রানীপছন্দ ২৫ মে, খিরসাপাত ২৮ মে এবং লক্ষণভোগ বা লখনা ২৬ মে থেকে নামানোর কথা ছিল। এ আমগুলো এখন নামানো শুরু হয়েছে। এছাড়া ল্যাংড়া গত ৬ জুন থেকে এবং আম্রপালি ও ফজলি আগামী ১৬ জুন থেকে নামানো যাবে। আর সব শেষে ১৭ জুলাই থেকে নামানো যাবে আশ্বিনা জাতের আম।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর