শুক্রবার, ১৪ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা
বাজেট ২০১৯-২০

এমপিওভুক্তি আবারও শুরু

টুকিটাকি

নিজস্ব প্রতিবেদক

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি কার্যক্রম দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর এবার তা করা হবে। প্রস্তাবিত বাজেটে এমপিওভুক্তি কার্যক্রমের জন্য অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। প্রশিক্ষিত শিক্ষকের চাহিদা মেটাতে বিদেশ থেকে প্রশিক্ষিত শিক্ষক আনতেও বরাদ্দ রাখা হয়েছে বাজেটে। এবার মোট বাজেটের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৫ দশমিক ২ শতাংশ বরাদ্দ রাখা হয়েছে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে। আগামী ২০১৯-২০ অর্থবছরে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা খাতে ২৯ হাজার ৬২৪ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ২৫ হাজার ৮৬৬ কোটি টাকা।

বাজেটে আগামী অর্থবছরে প্রাথমিক শিক্ষা খাতে ২৪ হাজার ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। বর্তমান ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এটি ছিল ২০ হাজার ৫২১ কোটি টাকা। কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষার উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের জন্য আগামী অর্থবছরে ৭ হাজার ৪৫৪ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। গত অর্থবছরে এখাতে বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ৫ হাজার ৭৫৮ কোটি টাকা। তথ্যমতে, সর্বশেষ ২০১০ সালে ১ হাজার ৬২৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়েছিল। এরপর থেকেই এমপিওভুক্তির দাবিতে নন-এমপিওভুক্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা আন্দোলন করে আসছেন। আন্দোলনের মুখে গত বছরের জুলাইয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এমপিওভুক্তির জন্য বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জনবলকাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০১৮ জারি করে।

 এরপর গত আগস্টে এমপিওভুক্তির জন্য আবেদন নেওয়া হয়। মোট ৯ হাজার ৬১৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আবেদন করে। যাচাইয়ে এমপিও নীতিমালার সব শর্ত পূরণ করে যোগ্য প্রতিষ্ঠান হয়েছে ২ হাজার ৭৬২টি। কিন্তু অর্থের অভাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এমপিওভুক্তির ঘোষণা দিতে পারছিল না। সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে টাকা চাওয়া হয়। তাতে মোট ১ হাজার ২৪৭ কোটি টাকার প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হয়। এমন প্রেক্ষাপটে বাজেটে এমপিওভুক্তির প্রতিশ্রুতি এলো সরকারের কাছ থেকে।

বাজেট বক্তৃতায় বলা হয়, বর্তমানে ২৮টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। আগামী অর্থবছরে এ বাবদ মোট বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৮৭ হাজার ৬২০ কোটি টাকা। এটি মোট বাজেট বরাদ্দের ১৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ ও জিডিপির ৩ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ।

প্রশিক্ষিত শিক্ষক আনা হবে বিদেশ থেকে : বাজেট বক্তৃতায় বলা হয়, উপযুক্ত শিক্ষক বাছাইকরণ, তাদের প্রশিক্ষণ, সময়োপযোগী শিক্ষার বিষয়ে বস্তু নির্ধারণ এখন সময়ের দাবি। এ বছর থেকেই এসবের বাস্তবায়ন করতে সরকার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করবে। শিক্ষার জন্য ক্লাস রুমগুলোকেও উপযোগী করে তোলা হবে। শিক্ষার সর্বস্তরে উপযুক্ত ও প্রশিক্ষিত শিক্ষকের ব্যবস্থা করা হবে। জাপানের সম্রাট মেইজির উদাহরণ টেনে বক্তৃতায় বলা হয়, প্রশিক্ষিত শিক্ষকের চাহিদা মেটাতে জাপানের মতো আমাদেরও বিদেশ থেকে প্রশিক্ষিত শিক্ষক নিয়ে আসতে হবে। এ জন্য ২০১৯-২০ অর্থবছর থেকেই শিক্ষা খাতে পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ রেখেছে সরকার।

বলা হয়, প্রাথমিক শিক্ষার সক্ষমতা উন্নয়নে, শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নের লক্ষ্যে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ‘ডিজিটাল প্রাথমিক শিক্ষা’ শীর্ষক পাইলট প্রকল্প গ্রহণ করা হবে। এ প্রকল্পের আওতায় ৫০৩ মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইন্টারঅ্যাকটিভ ক্লাসরুম তৈরি করা হবে।

অবকাঠামো নির্মাণে বরাদ্দ : আগামী অর্থবছরে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা খাতে উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। বর্তমান অর্থবছরের উন্নয়ন বরাদ্দের তুলনায় এটি ৫৪ শতাংশ বেশি। সারা দেশে ২৬ হাজার ২০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৪৮ হাজার ৯৪৭টি মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ, ২০০ ল্যাংগুয়েজ কাম আইসিটি ল্যাব, ১ হাজার সায়েন্স ল্যাব, ২ হাজার ১২০টি স্মার্ট শ্রেণিকক্ষ, ৪৬টি হোস্টেল নির্মাণসহ নানা অবকাঠামো উন্নয়ন করা হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর