বুধবার, ১৯ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা
তদন্ত প্রতিবেদন জমা হয়নি এক বছরেও

এখনো হয়রানিতে কোটা আন্দোলনকারীরা

১৫ জনের মধ্যে ১১ আসামি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের। বাকি চারজনকে হাজিরা দিতে প্রতি মাসে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, মুন্সীগঞ্জ ও গাজীপুর থেকে ঢাকায় আসতে হয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

এখনো হয়রানিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা। বছর পেরিয়ে গেলেও আলোর মুখ দেখেনি কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন। উপাচার্যের বাড়ি ভাঙচুরসহ আলোচিত পাঁচ মামলার তদন্তে পুলিশের গড়িমসিতে বিপাকে আসামি শিক্ষার্থীরা। হাজিরার গ্যাঁড়াকলে ব্যাহত হচ্ছে তাদের শিক্ষাজীবন।

গত বছরের ৮ এপ্রিল রাতে কোটাবিরোধী আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করে। ওই রাতে উপাচার্যের বাসভবনে হামলা করে ভাঙচুর চালানো হয়। এ ঘটনায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে শাহবাগ থানায় তিনটি মামলা করে পুলিশ। তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি মামলা দায়ের করে। মামলায় ভাঙচুর, পুলিশের কাজে বাধাদান, পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর ও পুলিশের বিশেষ শাখার একজন কর্মকর্তার মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়ার অভিযোগ করা হয়। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন বলেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা বলছেন উপাচার্যের বাড়ি হামলার ঘটনায় আমাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। তারপরও তারা তদন্ত প্রতিবেদন ঝুলিয়ে রেখেছেন। মামলার আরেক আসামি মশিউর রহমান বলেন, আমার বেশকটি হাজিরার দিন পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষা দিতে পারিনি। প্রতি মাসে দুবার হাজিরা দিতে হয়। জানা গেছে, ১৫ জনের মধ্যে মামলার ১১ আসামি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের। বাকি চারজন আসামিকে মামলার হাজিরা দিতে প্রতি মাসে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, মুন্সীগঞ্জ ও গাজীপুর থেকে ঢাকায় আসতে হয়। প্রত্যেকবার শুনানিতে অংশ নিতে যাতায়াত বাবদ দুই থেকে তিন হাজার টাকা খরচ হয়। এ জন্য তাদের শিক্ষাজীবন হুমকির মুখে পড়েছে। হয়রানি এবং ব্যয় বহন করা তাদের জন্য অসম্ভব হয়ে পড়ছে বলে জানান তারা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) বর্তমান ভিপি ও বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নূর বলেন, প্রশাসন আমাদের চাপে রাখার জন্য এই মামলাকে ব্যবহার করে আসছে। যেন আমাদের হয়রানি করার জন্য যে কোনো সময় গ্রেফতার করে আতঙ্ক সৃষ্টি করা যায়। উপাচার্যের বাড়িতে হামলার সঙ্গে আমাদের কেউ জড়িত নয়। কোটা আন্দোলনকে থামিয়ে দেওয়ার জন্য পরিকল্পিতভাবে ওই ঘটনা ঘটানো হয়। ওই রাতে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সভাপতি মেহেদীকে এই এলাকায় অনেকে দেখেছিল। ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের অনেককে দেখা গিয়েছিল। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) এসি ফজলুর রহমান বলেন, আন্দোলনের রাতে ঢাকার অনেক প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ছিল। উপাচার্যের বাড়িতে হামলার সঙ্গে অনেকে জড়িত। মামলাটি তাই বেশ জটিল। এ জন্য চার্জশিট দিতে আরও সময় লাগবে।

সর্বশেষ খবর