বুধবার, ১৯ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

ডিআইজি মিজানের ঘুষ কেলেঙ্কারি তদন্তে কমিটি

নিজস্ব প্রতিবেদক

ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে আবারও উচ্চপর্যায়ের একটি তদন্ত কমিটি করেছে পুলিশ সদর দফতর। অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক (অ্যাডমিন অ্যান্ড অপারেশন) ড. মইনুর রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বে পুলিশের এ কমিটিতে রয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক (ফিন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) শাহাবুদ্দীন কোরেশী ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পুলিশ সুপার মিয়া মাসুদ করিম। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তাকে ঘুষ দেওয়ার বিষয়টি অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন দাখিল করবে এ কমিটি। গতকাল বিষয়টি নিশ্চিত করে পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) মো. সোহেল রানা বলেন, ঘুষ লেনদেনের বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির কাছ থেকে প্রতিবেদন পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা নির্ধারণ করে না দিলেও দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এর আগে পুলিশের এ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একজন নারীকে জোর করে তুলে নিয়ে বিয়ে, নির্যাতন ও অন্য এক নারীকে লাঞ্ছনা এবং হত্যার হুমকির বিষয়ে আরও একটি অনুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদন দাখিল করলেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। গত বছরের জানুয়ারিতে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনারের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় মিজানকে। এর চার মাস পর তার সম্পদের অনুসন্ধানে নামে দুদক। এক হাত ঘুরে সেই অনুসন্ধানের দায়িত্ব পান কমিশনের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির। সেই অনুসন্ধান চলার মধ্যেই ডিআইজি মিজান গত ৮ জুন দাবি করেন, তার কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন দুদক কর্মকর্তা বাছির। এর স্বপক্ষে তাদের কথপোকথনের কয়েকটি অডিও ক্লিপ একটি টেলিভিশনকে দেন তিনি। ওই অডিও প্রচার হওয়ার পর দেশজুড়ে শুরু হয় আলোচনা। অভিযোগ ওঠার পর তদন্ত কমিটি গঠনের পাশাপাশি বাছিরকে সাময়িক বরখাস্ত করে দুদক।

ডিআইজি মিজানের শাস্তির ব্যবস্থা হচ্ছে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এক কর্মকর্তাকে ঘুষ দেওয়ার কথা ফাঁস করার পর নতুন করে আলোচনায় আসা পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী শাস্তির ব্যবস্থা হচ্ছে। আপনারা তো সবই দেখছেন, তিনি অলরেডি সাসপেন্ড হয়েছেন, ওএসডি হয়ে পড়ে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া চলছে।’ গতকাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ ও সংস্থাসমূহের মধ্যে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। ডিআইজি মিজানকে কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না- এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। আইনি প্রক্রিয়া চলছে এবং আইন অনুযায়ী শাস্তির বিধান আছে। সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজের ভাগ্নে নিখোঁজের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘তার ভাগ্নেকে নাকি পাওয়া যাচ্ছে না। সেজন্য থানায় একটি জিডি হয়েছে। আমি মনে করি তিনি যদি কোনোখানে গিয়ে থাকেন তাহলে ফিরে আসবেন। নতুবা তিনি উদ্ধার হয়ে যাবেন, যেহেতু পুলিশ প্রক্রিয়া শুরু করেছে।’ মন্ত্রণালয়ের অধীন চারটি সংস্থার সঙ্গে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, কারা অধিদফতর এবং ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতর প্রধানরা এ চুক্তি করেন। সুরক্ষা সেবা বিভাগের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন সচিব মো. শহিদুজ্জামান। আগামী বছর কী কাজ করবেন চার সংস্থা প্রধান, সে বিষয়ে চুক্তি করলেন জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এবার চুক্তিটা একটু ভিন্ন। কারণ এবার চুক্তিতে সরকারের রূপকল্প-২০২১, এসডিজি ও নির্বাচনী ইশতেহার যুক্ত হয়েছে। লক্ষ্য অর্জনে সংস্থাগুলোকে বছরের প্রথম থেকেই কাজ করতে হবে। আশা করি সফলতা দেখিয়ে তারা গত বছরের চেয়েও এবার এগিয়ে যাবেন।’

সর্বশেষ খবর