দুই বাসের রেষারেষিতে কলেজছাত্র রাজীব হাসানের হাত হারানো ও পরে মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারকে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। ক্ষতিপূরণ প্রশ্নে এর আগে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ গতকাল এ রায় দেয়। ৫০ লাখ টাকার মধ্যে ২৫ লাখ টাকা স্বজন পরিবহন ও বাকি ২৫ লাখ টাকা বিআরটিসিকে পরিশোধ করতে বলা হয়েছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে ওই অর্থ রাজীবের পরিবারকে পরিশোধ করতে হবে। ক্ষতিপূরণের আদেশ দেওয়ার পাশাপাশি সড়কে যাত্রীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বেশ কিছু নির্দেশনাও এসেছে এই রায়ে। গত বছর ৩ এপ্রিল রাজধানীর কারওয়ান বাজার এলাকায় দুই বাসের রেষারেষিতে হাত কাটা পড়ে কলেজছাত্র রাজীবের। ওই ঘটনা নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর ৪ এপ্রিল রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। হাই কোর্ট এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের রুল জারিসহ রাজীবের চিকিৎসার খরচ দুই বাস মালিক বিআরটিসি ও স্বজন পরিবহনকে বহনের নির্দেশ দেয়। ওই রুল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় গত বছরের ১৬ এপ্রিল রাত ১২টা ৪০ মিনিটে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রাজীব। এদিকে বাস মালিকদের আপিলের পর গত বছরের ২২ মে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ ওই ঘটনায় দুই বাস কর্তৃপক্ষের মধ্যে কারা দায়ী ও ক্ষতিপূরণ নিরূপণ করতে একটি ‘স্বাধীন কমিটি’ গঠনে হাই কোর্টকে নির্দেশ দেয়। পরে ওই কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে হাই কোর্ট রাজীবের দুই ভাইকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আদেশ দেয়। পাশাপাশি রাজীবের দুই ভাইকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বিআরটিসি ও স্বজন পরিবহনের মালিককে হাই কোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করে আপিল বিভাগ। এরপর হাই কোর্ট বিভাগ এ কমিটি গঠন করে। গত ১৫ অক্টোবর দুই বাস কর্তৃপক্ষের মধ্যে কারা দায়ী ও ক্ষতিপূরণ নিরূপণ করতে বুয়েটের অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটির প্রতিবেদনে গণপরিবহন নিয়ে কয়েকটি সুপারিশ দেয়। সেই কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনেই উঠে আসে রাজীবের মৃত্যু ও দুর্ঘটনার দায়।
