রবিবার, ২৩ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গা নিয়ে চীনের জোরালো ভূমিকা চায় বাংলাদেশ

নিউ চ্যাম্পিয়ন্স সম্মেলনে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী প্রেসিডেন্ট জিন পিং ও প্রধানমন্ত্রী কেকিয়াংয়ের সঙ্গে হবে কৌশলগত অংশীদারিত্ব এগিয়ে নেওয়ার আলোচনা

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

পাঁচ দিনের সফরে চীন যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চীনের দালিয়ান শহরে আয়োজিত সম্মেলন ‘নিউ চ্যাম্পিয়ন্স’-এ যোগ দেবেন তিনি। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের গ্রীষ্মকালীন বৈঠকটি সামার দাভোস নামেও পরিচিত। দালিয়ানে সম্মেলন শেষ করে রাজধানী বেইজিং যাবেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং ও প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াংয়ের সঙ্গে বৈঠক হবে। চলতি মেয়াদে এটাই শেখ হাসিনার প্রথম চীন সফর। বাংলাদেশ ও চীনের ‘কৌশলগত অংশীদারিত্ব’ আরও এগিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি এ সফরে বেশ কিছু চুক্তি করবে দুই দেশ।

জানা যায়, চীন সরকারের আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১ থেকে ৫ জুলাই দেশটি সফর করবেন। উভয় পক্ষ গুরুত্বপূর্ণ এ সফরের জন্য বিভিন্ন বিষয় চূড়ান্ত করছে। ১ থেকে ৩ জুলাই দালিয়ানে আয়োজিত বার্ষিক সম্মেলন ‘নিউ চ্যাম্পিয়ন্স’-এ প্রধানমন্ত্রী অংশ নেবেন। প্রায় দেড় হাজার অংশগ্রহণকারীর এ সম্মেলনে একশটির বেশি ওয়ার্কিং সেশন থাকবে। ২ জুন দালিয়ানে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী প্রধান অধ্যাপক ক্লাউস শোয়ারের সঙ্গে বিশেষ বৈঠক হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। এ ছাড়া দালিয়ানে ‘কো-অপারেশন ইন দ্য প্যাসিফিক রিম’ শীর্ষক অধিবেশনে প্যানেল সদস্য হিসেবে থাকবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। ওই অনুষ্ঠান শেষে প্রধানমন্ত্রী বেইজিং যাবেন।

কূটনৈতিক সূত্রের খবর, প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং ও প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াংয়ের সঙ্গে বৈঠকে আলোচনার বড় অংশজুড়ে থাকবে রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই ও শান্তিপূর্ণ সমাধানে মিয়ানমারকে প্রস্তুত করার বিষয়টি। মিয়ানমারের ওপর নানা কারণে চীনের প্রভাব রয়েছে। রোহিঙ্গা সংকট দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় সমাধানে চীন মধ্যস্থতা করছে। চীনের মধ্যস্থতা ও পরামর্শেই প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশ-মিয়ানমার আলোচনা, অ্যারেঞ্জমেন্ট এবং ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট সই হয়েছে। বাংলাদেশ চায় সংকটটির সমাধানে চীন তার প্রভাব বিস্তার করে মিয়ানমারকে সঠিক পথে আনুক।

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের ২০১৬ সালের ঢাকা সফরে দুই দেশ ৮টি অগ্রাধিকার প্রকল্পসহ উন্নয়ন খাতে ২৭টি চুক্তি ও সমঝোতা সই করেছিল। দেশটির সঙ্গে ২৭ প্রকল্পে সাড়ে ২২ বিলিয়ন ডলার ঋণের সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়। কিন্তু বিভিন্ন জটিলতায় ঋণ প্রক্রিয়া দেরি হয়। ২৭ প্রকল্পের মধ্যে ২০১৬ সালে একটি এবং ২০১৭ সালে চারটি প্রকল্পের ঋণচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি হওয়া প্রকল্পগুলো হচ্ছে- পদ্মা রেল সংযোগ, জাতীয় তথ্য-প্রযুক্তি ইনফো-নেটওয়ার্ক, কর্ণফুলী টানেল, সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং টার্মিনাল নির্মাণ এবং টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক শক্তিশালীকরণ প্রকল্প। এখন চীনা প্রেসিডেন্টের সফরে হওয়া চুক্তিগুলোর দ্রুত বাস্তবায়নে বেইজিংয়ের সুনির্দিষ্ট অঙ্গীকার চায় ঢাকা। যেসব প্রকল্প নানা কারণে মন্থর গতিতে এগিয়ে চলেছে বা মাঝপথে আটকে আছে, সেগুলোতে গতি আনতে দেশটির শীর্ষ নেতৃত্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন বাংলাদেশের সরকারপ্রধান। সফরে বিশেষ করে উন্নয়নের নতুন নতুন ক্ষেত্রেও চীনের সহায়তা চাইবে বাংলাদেশ।

সর্বশেষ খবর