রবিবার, ২৩ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

আওয়ামী লীগ এমপির জামায়াতি শ্বশুরের জানাজায় মারামারি ছাত্রলীগ-শিবিরের

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম সরকারি কলেজের মাঠে (প্যারেড গ্রাউন্ড) জামায়াত নেতা মুমিনুল হক চৌধুরীর জানাজা ঘিরে ছাত্রলীগ ও ছাত্রশিবিরের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং মারামারির ঘটনা ঘটেছে। জানাজায় অংশ নিতে আসা শিবিরের নেতা-কর্মীদের ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা বাধা দিতে জড়ো হলে মারমুখী অবস্থান নেয় শিবির। এ সময় উভয় পক্ষ ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু করলে পুলিশের হস্তক্ষেপে বড় ধরনের সংঘাত থেকে রক্ষা পান ছাত্রলীগ ও শিবিরের নেতা-কর্মীরা। গতকাল বেলা দেড়টা থেকে ২টার মধ্যে এসব ঘটনা ঘটে। এ সময় চট্টগ্রাম কলেজ ক্যাম্পাস ও আশপাশে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পরে চট্টগ্রাম কলেজ মাঠে জামায়াত নেতা মুমিনুল হক চৌধুরীর জানাজার অনুমতি দেওয়ায় অধ্যক্ষের কক্ষের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ করে ছাত্রলীগ। ঘটনাস্থল থেকে একজনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

উল্লেখ্য, শুক্রবার রাতে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মুমিনুল হক চৌধুরী বার্ধক্যজনিত কারণে নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তিনি চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগদলীয় সংসদ সদস্য ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভীর শ্বশুর। মুমিনুল হকের মেয়ে জামায়াতের অঙ্গসংগঠন ইসলামী ছাত্রী সংস্থা, চট্টগ্রামের সাবেক সভানেত্রী রিজিয়া রেজা চৌধুরী বর্তমানে মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। তার স্বামী আবু রেজা নদভী আওয়ামী লীগের হয়ে প্রথমবার এমপি নির্বাচিত হওয়ার পরপরই স্ত্রী রিজিয়ার এই পটপরিবর্তন হয়।

এদিকে চট্টগ্রাম সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আবুল হাসান জানান, বেলা সোয়া ১২টার দিকে সংসদ সদস্য নদভী তাকে টেলিফোন করে প্যারেড মাঠে তার শ্বশুরের জানাজার জন্য সিএমপি কমিশনারের অনুমতি নেওয়া হয়েছে বলে জানান। তিনি কলেজের মাঠে জানাজায় সহযোগিতা করতেও অনুরোধ করেন। সে সময় কলেজের অডিটরিয়ামে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান চলছিল। সংসদ সদস্যের ফোন পেয়ে অধ্যক্ষ অনুষ্ঠানে সমবেত শিক্ষকদের প্যারেড মাঠের জানাজায় অংশ নিতে অনুরোধ করেন। অধ্যক্ষের ঘোষণার পরই মূলত কলেজে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা বিষয়টি জানতে পেরে উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। বেলা ১টার দিকে ক্যাম্পাসে জামায়াত-শিবির প্রতিরোধের ডাক দিয়ে কয়েক দফা মিছিল করে ছাত্রলীগ। প্যারেড মাঠে জানাজায় অংশ নিতে আসা লোকজনের মধ্যে শিবিরের কয়েকজন নেতাকে দেখে আরও উত্তেজিত হয়ে ওঠেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা লাঠি ও লোহার রড নিয়ে প্যারেড মাঠের কাছে ছাত্রাবাসের সামনে জড়ো হন। সেখান থেকে মিছিল নিয়ে তারা জানাজার দিকে এগোতে থাকলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। অন্যদিকে জানাজাস্থল থেকে শিবিরের একদল নেতা-কর্মীও মারমুখী হয়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের দিকে এগিয়ে আসেন। পুলিশ বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও উভয় পক্ষ মারামারিতে জড়ায়। তবে পুলিশের দ্রুত হস্তক্ষেপের কারণে বড় ধরনের কোনো সংঘাত হয়নি। এ ঘটনায় দু-একজনের মাথা ফেটে গেছে।

সর্বশেষ খবর