শিরোনাম
সোমবার, ২৪ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

শান্তিপ্রিয় মাছরাঙা

আলম শাইন

শান্তিপ্রিয় মাছরাঙা

এ পাখির বাংলা নাম ‘ছোট মাছরাঙা’। ইংরেজি নাম ‘কমন কিংফিশার (Common Kingfisher)’। বৈজ্ঞানিক নাম Alcedo  atthis। গ্রামাঞ্চলের মানুষের কাছে এরা ‘মাউচ্চা রাঙা’ নামে পরিচিত। ঠোঁটের গড়ন দেখে খানিকটা হিংস্র মনে হলেও আসলে এরা একেবারেই শান্তিপ্রিয় পাখি। কখনো অন্য প্রজাতির পাখির সঙ্গে ঝগড়া-বিবাদে লিপ্ত হয় না। এমনকি নিজেদের মাঝেও বিবাদ বাধায় না। দেশের সর্বত্র দেখা যায়। মোটামুটি সুলভ দর্শন। সবসময় জলাশয়ের আশপাশে ওড়াওড়ি করে। একদ  কোথাও বসে থাকার ফুরসত পায় না। শিকারের নেশায় কিছুক্ষণ চুপচাপ বসে থাকলেও লেজটাকে নাড়িয়ে মাথাটাকে নিচের দিকে ঝাঁকুনি দেয়। শিকারের নাগাল পেলে শূন্যে ডানা ঝাপটিয়ে ঝপাৎ করে জলের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। ঠোঁট দিয়ে শিকার চেপে ধরে পুনরায় একই স্থানে এসে বসে জ্যান্ত শিকারটাকে গাছের ডালের সঙ্গে আছড়ে মেরে গিলে খায়। স্ত্রী-পুরুষ পাখি কাছাকাছি থেকেই শিকার খোঁজে।

কিছুটা দূরুত্ব বজায় থাকলেও ‘চিঁ-চিঁ-চিঁ-ই’ স্বরে ডেকে ভাবের আদান-প্রদান করে। এরা গ্রামের দুষ্ট ছেলেদের হাতে খুব বেশি নির্যাতিত হয়। বিশেষ করে গুলতি দিয়ে কিংবা ফাঁদ পেতে শিকার করতে দেখা যায়।   

প্রজাতির গড় দৈর্ঘ্য ১৮-২০ সেন্টিমিটার। মাথা ও ঘাড়ের ওপর ফিরোজা বর্ণের চিতি। ঘাড়ের পাশে সাদা রেখা। দেহের উপরাংশ সবুজাভ-নীল। পিঠের মাঝ বরাবর দিয়ে লেজের ওপর পর্যন্ত ফিরোজা রেখা। ডানার দুই পাশে ফিরোজা চিতি। গলা সাদা। নিচের অংশ লালচে-কমলা। পা টকটকে লাল। নখ ছাই বর্ণের। চোখের মণি গাঢ় বাদামি। ঠোঁট কালো। স্ত্রী পাখির ঠোঁটের গোড়া ফিকে লাল। এ ছাড়া স্ত্রী-পুরুষ পাখির মধ্যে পার্থক্য তেমন একটা নেই। প্রধান খাবার ছোট মাছ। এ ছাড়াও ভ্যাঙাচি, জলজ কীট খেতে দেখা যায়। প্রজনন মৌসুম ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে জুনের মাঝামাঝি পর্যন্ত। এ ছাড়াও বছরের যে কোনো সময়েও মাছরাঙা ডিম-বাচ্চা ফোটায়। জলাশয়ের খাড়াপাড়ে ৮০-৯০ সেন্টিমিটার গভীরতা খোড়ল করে বাসা বাঁধে। ডিম পাড়ে ২-৪টি। ফোটতে সময় লাগে ১৯-২০ দিন। বাচ্চা উড়তে শেখে ২০-২৫ দিনের মধ্যে। নিরাপদ মনে হলে এক স্থানে বছরের পর বছর বাসা বাঁধে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর