বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহীম খালেদ বলেছেন, ‘নানা ধরনের জালিয়াতি-অনিয়মের মাধ্যমে ব্যাংক ঋণ নিয়ে ফেরত দিচ্ছেন না গ্রহীতারা। জাতীয় সংসদে যাদের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে এরা সবাই অপরাধী। এর বাইরে আরও ঋণখেলাপি আছেন। পুনঃ তফসিল ও হাই কোর্টের স্থগিতাদেশ নিয়ে ঋণ ফেরত দিচ্ছেন না। দ্রুত বিচারের মাধ্যমে এদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। কোর্টে এক্সক্লুসিভ বেঞ্চ গঠন করা উচিত ঋণখেলাপিদের শাস্তি দিতে।’ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এক সাক্ষাৎকারে ইব্রাহীম খালেদ বলেন, ‘অর্থঋণ আদালতে বিচারকের সংখ্যা কম। এ সংখ্যা বাড়াতে। বিশেষ বেঞ্চ গঠন করে শুধু ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে মামলা পরিচালনা করা উচিত। বাংলাদেশ ব্যাংকের উচিত প্রতি সপ্তাহে এসব মামলা ও কার্যক্রমের ওপর ফলোআপ নেওয়া ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে।’ তিনি বলেন, ‘প্রতি বছর ঋণখেলাপি ব্যক্তির পাশাপাশি টাকার পরিমাণও বাড়ছে। এজন্য আমাদের ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা দায়ী। যারা ব্যাংক চালান তাদের দায় আছে। সরকারি ব্যাংক শুধু নয়, বেসরকারি ব্যাংকের পরিচালকরাও দায়ী। বাংলাদেশ ব্যাংককে সব ব্যাংকের জবাবদিহি বাড়াতে হবে। পাশাপাশি ব্যাংকগুলো খেলাপি আদায়ের ক্ষেত্রে কী কী পদক্ষেপ নিচ্ছে সে সম্পর্কে কঠোর মনিটরিং করতে হবে। রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাংকের মালিক সরকার। এজন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের উচিত ব্যাংকের বোর্ডের কাছে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেওয়া। প্রতি মাসে বা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে খেলাপি ঋণের নির্ধারিত অঙ্ক আদায় করতে না পারলে বোর্ড ভেঙে দেওয়া হবে।’ ইব্রাহীম খালেদ বলেন, ‘বিচার বিলম্বে ন্যায়বিচার পাওয়া যায় না। এ ক্ষেত্রে দ্রুত বিচারের মাধ্যমে সব খেলাপিকে ধরতে হবে। কোনো ধরনের গড়িমসি হলে এই খেলাপি ঋণের অপসংস্কৃতি থেকে বের হওয়া যাবে না। ব্যবসায়ীদের কাছে পরামর্শ- ব্যাংকিং শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হলে সবাইকে ত্বরিত একটা পদক্ষেপ নিতে হবে। এজন্য সংসদীয় কমিটির মাধ্যমে সঠিক সুপারিশ আমলে নিয়ে খেলাপি ঋণ আদায় করতে হবে। দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যাংকার, পরিচালকদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।’