শুক্রবার, ২৮ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

অর্থবছরের টাকা শেষ করতে তড়িঘড়ি মালামাল পাওয়ার আগেই বিল পরিশোধ

ইসির ল্যাপটপ প্রিন্টার কেনাকাটা

গোলাম রাব্বানী

নতুন অর্থবছর শুরু হতে আর কয়েকদিন বাকি। তাই চলতি অর্থবছরের বরাদ্দের টাকা শেষ করতে তড়িঘড়ি করে বিভিন্ন কেনাকাটা শেষ করা হচ্ছে নির্বাচন কমিশনে। অভিযোগ উঠেছে, সাজানো টেন্ডারের মধ্যেই তড়িঘড়ি করে নির্বাচন কমিশনে ১ হাজার ৫৫৭টি ল্যাপটপ, প্রিন্টার এবং অন্যান্য সরঞ্জাম কেনা হচ্ছে। এ জন্য উপজেলা-থানা নির্বাচন অফিসের নামে ১৯ কোটি ৮ লাখ ৩৬ হাজার ৩০০ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে ইসি সচিবালয়। আর পণ্য বুঝে পাওয়ার আগেই বিলও পরিশোধ করতে উপজেলা নির্বাচন অফিসগুলোকে বাধ্য করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের অভিযোগ, ইসি সচিবালয় ও ভোটার তালিকা প্রকল্পের একটি চক্র পরিকল্পিতভাবে তিন প্রতিষ্ঠানের নামে উপজেলা অফিসগুলোতে দরপত্র পাঠিয়েছে। ল্যাপটপ-প্রিন্টারের কোম্পানি, মডেল এবং রং উল্লেখ করে উপজেলা ও থানা নির্বাচন অফিসে চিঠি দিয়েছে কমিশন সচিবালয়। এমআর কম্পিউটার অ্যান্ড স্টেশনারি নামের নির্দিষ্ট এ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে পণ্য কিনতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মৌখিকভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সচিব মো. আলমগীর গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এ রকম একটি অভিযোগ এসেছে। সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশনে ১ হাজার ৫৫৭টি ল্যাপটপ, প্রিন্টার এবং অন্যান্য সরঞ্জাম কেনাকাটা করা হচ্ছে। এসব পণ্য সরবরাহের আগেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বিল পরিশোধ করতে হয়েছে। গতকাল এ বিল পরিশোধের শেষ দিন ছিল। উপজেলা নির্বাচন অফিসগুলোকে প্রথমে গত ২০ জুনের মধ্যে ২টি ল্যাপটপ এবং প্রিন্টারসহ অন্যান্য মালামালের জন্য বিল পরিশোধ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। পরে গতকাল ২৭ জুন পর্যন্ত সেই সময় বাড়ানো হয়। তবে উপজেলা অফিসগুলো আগেভাগেই সেই বিল পরিশোধ করেছে। জানা গেছে, ৫১৯ উপজেলার জন্য দুটি করে মোট ১ হাজার ৩৮টি ল্যাপটপ ও ৫১৯টি প্রিন্টার কেনা হচ্ছে। একই সঙ্গে পোর্টেবল হার্ডড্রাইভ, ক্যামেরার চার্জার, ব্যাটারিসহ বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতিও কেনা হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচন অফিসগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রত্যেক উপজেলা অফিসের জন্য ৩ লাখ ৬৭ হাজার ৭০০ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর মধ্যে ২টি ল্যাপটপের জন্য ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা এবং প্রিন্টারসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতির জন্য ৯৭ হাজার ৭০০ টাকা পরিশোধ করতে হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, নির্বাচন কমিশনে এ ধরনের কেনাকাটা আগেও হয়েছে। ২০১৭ সালের শেষদিকে একইভাবে নির্দিষ্ট একটি কোম্পানির কাছ থেকে প্রায় ১ হাজার ২০০ ল্যাপটপ কিনতে বাধ্য করেছিল কমিশন সচিবালয়ের একটি সিন্ডিকেট। ওই ল্যাপটপগুলো সঠিকভাবে কাজ করছে না। ফলে ২০০৭-০৮ সালে কেনা ল্যাপটপ দিয়ে ভোটার হালনাগাদসহ নির্বাচনের কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে। ইসির কর্মকর্তা জানিয়েছেন, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন স্বাক্ষরিত একটি চিঠি ২১ মে সব আঞ্চলিক, জেলা ও উপজেলা/থানা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়।

এসব বিষয়ে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের পরিচালক (অপারেশন্স) মো. আবদুল বাতেন কিছু জানেন না বলে দাবি করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর