রবিবার, ৭ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা
কৃষি সংবাদ

ঠাকুরগাঁওয়ে মরিচের বাম্পার ফলন

আবদুল লতিফ লিটু, ঠাকুরগাঁও

ঠাকুরগাঁওয়ে মরিচের বাম্পার ফলন

ঠাকুরগাঁও জেলার বিভিন্ন এলাকায় মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে। দাম ভালো পাওয়ায় চাষিদের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে। সদর উপজেলার ভাউলারহাটসহ এলাকার কৃষকরা বেশ কয়েক বছর ধরে মরিচ চাষে ঝুঁকছেন। দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে মরিচের আবাদ।

সম্প্রতি ভাউলারহাটে গিয়ে দেখা যায়, হাজার হাজার কৃষক  মরিচ নিয়ে এসেছে। এলাকার পাইকাররা তা সংগ্রহ করে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা আড়তদার ও কোম্পানির কাছে কমিশন হিসেবে বিক্রি করছে। কেউবা সরাসরি পাঠিয়ে দিচ্ছেন। সপ্তাহে দুই দিন বসে ভাউলারহাট। প্রতি হাটে ১৫ থেকে ২০টি করে ট্রাকে লোড হয়ে ময়মনসিংহ, ঢাকা, রাজশাহী, যশোর, খুলনাসহ বিভিন্ন জেলায় চলে যাচ্ছে। প্রতি ট্রাকে ১০-১২ টন শুকনো মরিচ ধরে। গড়ে প্রতিদিন ৪ হাজার ৫০০ মণ মরিচ বিভিন্ন এলাকায় যাচ্ছে। স্থানীয় আড়তদার হাফিজুর রহমান বলেন, শুকনো মরিচের হাট হিসেবে ভাউলারহাট দেশের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার। এক মাস ধরে বেচাকেনা শুরু হয়েছে, ছয়-সাত মাস চলবে। এই হাটে জেলার গড়েয়াহাট, খোচাবাড়ী হাট, শিবগঞ্জ হাট, আখানগরহাট, পীরগঞ্জ, বালিয়াডাঙ্গী ও রানীশংকৈল উপজেলাসহ পার্শ¦বর্তী জেলা পঞ্চগড়ের আটোয়ারী, দেবীগঞ্জের কৃষক ও ব্যবসায়ীরা এ হাটে মরিচ নিয়ে আসেন। জেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মনোয়ার হোসেন জানান, এবার জেলায় মোট ১ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও অর্জন হয়েছে ১ হাজার ৮৮৫ হেক্টর। অতিরিক্ত হয়েছে ৪৮৫ হেক্টর। দিন দিন মরিচ চাষের দিকে ঝুঁকছে জেলার কৃষকরা। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আনিছুর রহমান জানান, সদর উপজেলায় এবার ১ হাজার হেক্টর জমিতে মরিচের আবাদ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে গড়ে ৩ টন উৎপাদন হয়েছে। লাভজনক হওয়ায় চাষিরা মরিচ আবাদে উৎসাহিত হচ্ছে। রায়পুর গ্রামের কৃষক প্রতিরণ রায় জানান, এবার এক একর জমিতে মরিচ চাষ করেছেন। উৎপাদন হয়েছে ৩০ মণ। যার মূল্য ১, লাখ ৫০ হাজার টাকা। উৎপাদন খরচ হয়েছে ৮৬ হাজার টাকা। লাভ হবে ৬৪ হাজার টাকা। এবার ধানের দাম না পাওয়ায় আগামীতে মরিচের আবাদ বাড়াবেন। মরিচ উৎপাদনে এলাকার কৃষক যেমন উপকৃত হচ্ছেন তেমনি নারী শ্রমিকরা মরিচ তুলে দিনে তিন থেকে চারশ টাকা পাচ্ছেন এবং পুরুষরা পাইকারি আড়তে মরিচ বস্তায় ঢুকানোর জন্য সারা দিনে ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা রোজগার করছেন। মরিচ চাষে এলাকায় ব্যাপক সম্ভাবনা থাকলেও পানি সেচের জন্য গভীর নলকূপ  চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। সরকার ব্যবস্থা নিলে উৎপাদন আরও বাড়বে এবং চাষিরা উৎসাহিত হবেন। বর্তমানে এক কেজি কাঁচামরিচের দাম ৫০ টাকা। চার-পাঁচ কেজি পাকা মরিচ শুকিয়ে হয় এক কেজি। অথচ এক কেজি শুকনা মরিচের দাম পাচ্ছেন ১২৫ টাকা। সরকার কাঁচামরিচ সংরক্ষণের জন্য হিমাগার করলে এলাকা অর্থনৈতিকভাবে আরও সমৃদ্ধ হতো।

সর্বশেষ খবর