সোমবার, ৮ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা
বর্ণালির শঙ্কাই সত্যি হলো

লাশ হয়ে ফিরল বাবার বাড়ি

শেষ নেই কোনো কিছুর

ভোলা প্রতিনিধি

অবশেষে বর্ণালির শঙ্কাই সত্যে পরিণত হলো। লাশ হয়ে ফিরতে হলো তাকে বাবার বাড়ি। কান্নাজড়িত কণ্ঠে এমটাই বলছিলেন নিহত বর্ণালির বাবা বাবুল মজুমদার। বর্ণালির মা শিখা রানী জানান, স্বামীর নির্যাতন সইতে না পেরে তার মেয়ে বাড়ি চলে এসেছিলেন। স্বামীর সঙ্গে ঢাকায় ফিরে যেতে চাননি। কিন্তু বুঝিয়ে-সুজিয়ে তাকে স্বামীর সঙ্গে ঢাকায় পাঠানো হয়েছিল। ২ জুলাই বর্ণালিকে স্বামী মিথুন ওরফে রাহুল হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। এ ঘটনায় রাজধানীর রামপুরা থানায় মিথুনকে আসামি করে হত্যা মামলা করা হয়েছে। তবে আসামির খালাতো ভাই পুলিশের এসআই হওয়ায় মামলার সঠিক তদন্ত নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন নিহতের বাবা-মা। তারা প্রকৃত তদন্তের জন্য প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। নিহতের স্বজনরা জানান, পাঁচ বছর আগে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নের বাবুল মজুমদারের মেয়ে বর্ণালি মজুমদার বন্যার সঙ্গে বোরহানউদ্দিন পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চুনিলাল দের ছেলে মিথুন দে রাহুলের আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে বর্ণালি স্বামীর সঙ্গে ঢাকায় চলে যান। অভিযোগ রয়েছে, বিয়ের পর থেকে প্রায় প্রতিনিয়ত মিথুন ও তার পরিবার বর্ণালিকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন। একপর্যায়ে বর্ণালি ঢাকায় স্বামীর বাসা থেকে বোরহানউদ্দিনে বাবার বাড়ি চলে আসেন। সম্প্রতি সবাই মিলে অনেকটা জোর করেই বর্ণালিকে  ঢাকার বনশ্রী এলাকায় স্বামীর বাসায় পাঠান। পাঠানোর সময় বর্ণালি মা-বাবা ও আত্মীয়স্বজনকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আমি আর ঢাকায় যাব না। আমার স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ি আমাকে লাশ বানিয়ে তোমাদের কাছে পাঠাবে।’ শেষ পর্যন্ত বর্ণালির কথাই সত্যি প্রমাণিত হলো। লাশ হয়েই বাবার বাড়ি ফিরলেন বর্ণালি মজুমদার বন্যা। ২ জুলাই রাতে বনশ্রী এ ব্লকের ২ নম্বর রোড-সংলগ্ন একটি বাসা থেকে রাত ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় বর্ণালিকে স্বামী মিথুন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এদিকে মৃত্যুর পর বর্ণালির লাশ হাসপাতালে ফেলে রেখে রামপুরা থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন মিথুন। বর্ণালির পরিবারের অভিযোগ, মিথুনের বিরুদ্ধে যাতে মামলা না হয় এমন তদবির চালান তার খালাতো ভাই এসআই দীপক দে। মামলার সঠিক তদন্ত হবে কি না এ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন বর্ণালির মা-বাবা। তারা এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করেন। এ ব্যাপারে রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল কুদ্দুস ফকির সাংবাদিকদের বলেন, বর্ণালির ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর