সোমবার, ৮ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

হারিয়ে যাচ্ছে কাঠ শালিক

দিনাজপুর প্রতিনিধি

হারিয়ে যাচ্ছে কাঠ শালিক

পরিবেশবান্ধব পাখি ‘কাঠ শালিক’ হারিয়ে যেতে বসেছে। খুব একটা চোখে পড়ে না। সম্প্রতি দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি চত্বরের মেহগনী গাছের কোটরে বাসা বানিয়েছে এ পাখিটি। পাখিটির কয়েকটি ছানাও রয়েছে। মা পাখিটি ছানাদের খাওয়াতে বার বার খাবার এনে কোটরে ঢুকছে। এ পাখিটিকে দিনাজপুরের আঞ্চলিক ভাষায় পুঁই সারক বা পুঁই শালিক বলে ডাকে। আগে বনাঞ্চলে, গ্রামের বাড়িঘরের আশপাশের পুরনো গাছে এদের দেখা যেত। কিন্তু বনাঞ্চল ধ্বংস ও পুরনো বৃক্ষ নিধনের ফলে এ পাখিটি হয়তো নিজের বংশ রক্ষার স্বার্থেই উঁচু পরিত্যক্ত ভবনের ফোকরে অথবা গাছের কোটরে বাসা বাধে। কাঠ শালিক দম্পতি অন্য পাখির আক্রমণ থেকে তাদের ছানাদের রক্ষায় সবসময় সতর্ক থাকে। পাখিটির ইংরেজি নাম Chestnut-tailed Starling,  বৈজ্ঞানিক নাম Sturnus malabaricus, গোত্রের নাম Sturnidae। কাঠ শালিকের থুতনি-গলা সাদা। ঠোঁটের গোড়া নীল, মাঝখানটা হালকা সবুজ এবং ডগাটা হলুদ। পিঠ রুপালি ধূসরের ওপর হালকা খয়েরি। ডানার প্রান্তটা কালো। গলা ফিকে লালচের ওপর সাদাটে ধূসরের টান। কাঠ শালিকের বুক, পেট আর লেজের পালকের রঙ উজ্জ্বল বাদামি। পা লালচে এবং মায়াবি চোখ। পুরো গলা জুড়ে অতিরিক্ত পালক রয়েছে। লেজের উপরিভাগ ধূসর ও তলদেশ পাটকিলে। শালিক প্রজাতি পাখির মধ্যে রয়েছে ভাত শালিক, ঝুটি শালিক, গো শালিক, বামন বা শঙ্খ শালিক, চিত্রা শালিক, গোলাপী শালিক, কাঠ শালিক এবং ময়না। তবে কাঠ শালিকের আকৃতি সবচেয়ে ছোট। এরা সাধারণত ১৯ থেকে ২১ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। এরা প্রজনন এবং ছানা লালন-পালনের জন্য গাছের কোটরে বাসা বানায়। কখনো নরম লতাপাতা বাসা তৈরির উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করে। বসন্তের শুরু থেকে বর্ষা পর্যন্ত এদের প্রজনন ও ছানা লালন পালনের মৌসুম। এ সময় মা পাখি ৩-৪ টি ছোট লম্বাটে হালকা নীল রঙের ডিম পাড়ে। ডিমে তা দেয় শুধু স্ত্রী পাখি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১৫-১৭ দিন। ছানা বড় হয়ে উড়তে শিখলে এরা বাসা ছেড়ে চলে যায়। ফিরে আসে পরের প্রজনন মৌসুমে। কাঠ শালিক কীটপতঙ্গ, ছোট ফল, ফুলের মধু খেয়ে জীবন ধারণ করে।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর