শিরোনাম
মঙ্গলবার, ৯ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা
আদালতে স্বীকারোক্তি

সংগীতশিল্পী মিলার ইন্ধনে অ্যাসিড নিক্ষেপ সাবেক স্বামীকে

মাহবুব মমতাজী

সংগীতশিল্পী মিলার ইন্ধনেই তার সাবেক স্বামী পাইলট পারভেজ সানজারীর ওপর অ্যাসিড নিক্ষেপ করা হয় বলে জানিয়েছেন মিলার ব্যক্তিগত সহকারী কিম জন পিটার হালদার। রবিবার আদালতে এ সংক্রান্ত স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে পিটার। পরে তাকে জেলহাজতে পাঠিয়েছে আদালত। এর আগে গত ৩ জুলাই মিলার বন্ধু টুকুন খানের বাসা থেকে ডিবি পুলিশ পিটারকে গ্রেফতার করে। পিটার মামলার তদন্তকারী  কর্মকর্তাদের জানিয়েছে, সানজারীর ওপর হামলার আগে মিরপুর ডিওএইচএসের সরকার মার্কেট থেকে অ্যাসিড কিনেন তিনি। আর ওই এসিড মূলত বাসা-বাড়িতে প্রথমবার লাগানো টাইলস পরিষ্কারের কাজে ব্যবহৃত হতো বলে জানা গেছে। গত ২ জুন সন্ধ্যায় মোটরসাইকেলে যাওয়ার সময় বাসার সামনের সড়কে অ্যাসিড হামলার শিকার হন সানজারী। এ ঘটনার তদন্তের দায়িত্বে থাকা ডিবি উত্তরের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার বদরুজ্জামান জিল্লু জানান, অ্যাসিডের রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য সিআইডিতে পাঠানো হয়েছে। ওই রিপোর্ট পেলে জানা যাবে সেটি কি ধরনের অ্যাসিড ছিল। মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি-উত্তর) কাছে দেওয়া পিটারের ঘটনার দিনের বর্ণনা থেকে জানা যায়, গত ২৫ মে বিকাল সাড়ে ৪ টার দিকে মিলা কান্না করে বলে- সানজারী আমার জীবনটা নষ্ট করেছে। সানজারীকে পিটার কিছু করতে পারবে না। যা করার মিলা নিজেই করবে। এ সময় মিলার সঙ্গে পরামর্শ করে সানজারীর গোপনাঙ্গে অ্যাসিড দেওয়ার পরিকল্পনা করে পিটার।

পরিকল্পনা অনুযায়ী ওইদিনই সন্ধ্যাবেলায় মিরপুর ডিওএইচএস সরকার মার্কেটে হার্ডওয়্যারের দোকান থেকে এসিড কিনে একটি কাচের কৌটাতে ঢেলে ব্যাগের মধ্যে রাখে। গত ২৬ ও ২৭ মে দুই দিন উত্তরায় সানজারীর বাড়ির সামনে ইফতারের পর থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত অবস্থান করে পিটার। কিন্তু সানজারীকে দেখতে পায় না সে। পরে গত ২ জুন বিকালে সানজারীর বাসার সামনে অবস্থান নিয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আড়াল থেকে দেখতে থাকে যে সানজারী মোটরসাইকেল নিয়ে বাসা থেকে বের হচ্ছে। ৫০ গজ সামনে যাওয়ার পর পিটার তাকে ডাক দেয়। এরপর মোটরসাইকেলের সামনে দুই হাত লম্বা করে দাঁড়িয়ে সানজারীর গতিরোধ করে। সানজারী তাকে দেখে মোটরসাইকেল ঘুরিয়ে বাসার দিকে যেতে থাকলে পিটার আবারও তার মোটরসাইকেলের সামনে গিয়ে দ্রুত এসিডের কৌটা বের করে তার গায়ে ঢেলে দিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনার পর এয়ারপোর্ট রেলস্টেশনে যাওয়ার পর মিলাকে ফোন করে সানজারীর শরীরের এসিড নিক্ষেপের কথা জানায় পিটার। রাত সাড়ে ৯টার দিকে ট্রেনে উঠে সে চট্টগ্রাম চলে যায়। সেখানে তার বন্ধুর বাসায় ১৫ দিন থাকার পর ঢাকায় ফিরে আসে। ঢাকায় ফেরার পর মিলার বন্ধু টুকুন খানের বাসায় আত্মগোপন করে থাকে। পরে দুদিন পিটারের সঙ্গে দেখা করে মিলা তাকে শিখিয়ে দিয়ে বলে- এই এসিড মারার কথায় আমার নাম বলবি না। মিলার সাবেক স্বামী পারভেজ সানজারী জানান, মিলার সঙ্গে তার দেড় বছর আগে ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে। এরপরও নানাভাবে মিলা তাকে বিরক্ত করে আসছিল। এমনকি ২ হাজারের মতো এসএমএস পাঠিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। জানা যায়,  এসিড হামলার ঘটনায় গত ৪ জুন মিলার বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা করেন পারভেজ সানজারীর বাবা এস এম নাসির উদ্দিন। এ মামলায় মিলার সহকারী পিটারকেও অভিযুক্ত করা হয়। এর আগে গত ২১ এপ্রিল আদালতে মিলার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন পারভেজ সানজারী।

সর্বশেষ খবর