বুধবার, ১০ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

ধরন পাল্টাচ্ছে ডেঙ্গু, বাড়ছে আক্রান্ত

অনেক সময় রোগী খুব দ্রুত খারাপ অবস্থায় চলে যাচ্ছে : ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ

জয়শ্রী ভাদুড়ী

ধরন পাল্টাচ্ছে ডেঙ্গু, বাড়ছে আক্রান্ত

রাজধানীতে প্রতিদিনই বাড়ছে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা। এ বছর জুন মাস পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা অন্য বছরগুলোর তুলনায় কয়েকগুণ বেশি। ডেঙ্গু জ্বরের উপসর্গেও দেখা দিয়েছে পরিবর্তন। হঠাৎ করে রক্তের প্লাটিলেট কমে যাওয়ায় বাড়ছে ঝুঁকি। রোগের উপসর্গ পাল্টে জটিল হচ্ছে ডেঙ্গু জ্বর। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এ বছর ডেঙ্গু জ্বরে রোগীর শরীরের তাপমাত্রা খুব বেশি উঠছে না। কিন্তু দুই-তিন দিনের মধ্যে রক্তের প্লাটিলেট কমে হেমরেজিকের ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। অন্যান্য বছর ডেঙ্গু আক্রান্তদের শরীরে র‌্যাশ উঠত এবং প্রচ  ব্যথা হতো। কিন্তু এ বছর এরকম উপসর্গ না থাকায় ডেঙ্গু আক্রান্ত কিনা তা রোগীরা বুঝতে পারছেন না। এ জন্য চিকিৎসকদের কাছেও রোগী দেরিতে আসছে। অনেক সময় রোগী খুব দ্রুত খারাপ অবস্থায় চলে যাচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন্স সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ১১৬ জন। এখন পর্যন্ত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৬৩৩ জন। এর মধ্যে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৩৯১ জন এবং বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন ২৪২ জন। এ বছরের জানুয়ারি মাসে ৩৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে ১৮ জন, মার্চে ১২ জন, এপ্রিলে ৪৪ জন, মে মাসে ১৩৯ জন, জুনে ১৭২১ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন। এর মধ্যে মারা গেছেন তিনজন। পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের যুগ্ম সম্পাদক ও প্রিভেন্টিভ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার ডেঙ্গু সময়ের বেশ আগেই তা দেখা দিয়েছে। এবার ডেঙ্গুর ধরনেও পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। আগে যেমন তীব্র জ্বর এবং প্রচ- শরীর ব্যথা থাকত, এবারের জ্বরের তীব্রতা কম এবং শরীর ব্যথাও উল্লেখযোগ্য নয়। এ ছাড়া র‌্যাশও কম পাওয়া যাচ্ছে। এগুলোকে এতদিন ডেঙ্গুর অন্যতম প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে বিবেচনা করা হতো। স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) তেজগাঁও, তুরাগ, পল্লবী, মগবাজার, উত্তরা, গুলশান, বনানী, কাফরুল, খিলগাঁও, রামপুরা, মিরপুর, পীরেরবাগ, মোহাম্মদপুর, শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া, বনানী, গুলশান, বারিধারা সবচেয়ে বেশি এডিস মশার প্রজনন ক্ষেত্র হিসেবে চিহ্নিত করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) দয়াগঞ্জ, নারিন্দা, স্বামীবাগ, গে ারিয়াসহ আশপাশের এলাকা, দক্ষিণ মুগদাপাড়া, বাসাবো, মানিকনগর বিশ্বরোড, শেরেবাংলা রোড, হাজারীবাগ, মগবাজার ও রমনা, সেগুনবাগিচা, শাহবাগ, ফরাশগঞ্জ, শ্যামপুর, উত্তর যাত্রাবাড়ী এডিস মশার প্রজনন ক্ষেত্র বেশি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর