বুধবার, ১০ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা
৭ হাজার ৭৪৪ কোটি টাকার ১৩ প্রকল্প অনুমোদন একনেকে

বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকবে সব সরকারি কলেজ : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

নতুন অর্থবছরের প্রথম সভায় ৭ হাজার ৭৪৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৩টি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। গতকাল প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারম্যান শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে শেরেবাংলানগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। দেশের সব জায়গায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ওই অঞ্চলের কলেজগুলো অধিভুক্ত করার নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। সভা শেষে ব্রিফ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, আজকে প্রধানমন্ত্রী সুদূরপ্রসারী সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩০ থেকে ৬০ হাজার শিক্ষার্থী। তিনি বলেছেন, ‘এটা কীভাবে হতে পারে! এটা হয় নাকি কোথাও! শিক্ষার্থীরা আসছেই, ভর্তি হচ্ছেই, দেয়ার আর সুড বি লিমিট। শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ঠিক করবে, কতজন শিক্ষার্থী হতে পারে। ছাত্রছাত্রী বাড়ানো যাবে না। আনলিমিটেড নম্বর স্টুডেন্ট নট অ্যালাউড।’ পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘যেসব নতুন বিশ্ববিদ্যালয় আমরা বানাচ্ছি; আশা করি সুনামগঞ্জে নতুন একটি বিশ্ববিদ্যালয় হবে অচিরেই। এর আওতায় যে কয়েকটি সরকারি কলেজ আছে, এর সঙ্গে অধিভুক্ত হবে। সরকারি কলেজগুলো বিশ্ববিদ্যালয়টির অংশ হয়ে যাবে। যেমন ঢাকায় আছে (সাত কলেজ)। এটা সারা দেশেই করা হবে।’ একনেক সভায় রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজের মাঠ নিয়েও কথা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ হলো, ‘তিতুমীর কলেজের মাঠ মাঠই থাকবে। মাঠ যেন কেউ নিতে না পারে।’ অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হলো- সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের তিনটি যথাক্রমে ‘বগুড়া (জাহাঙ্গীরাবাদ)-নাটোর জাতীয় মহাসড়কের (এন-৫০২) যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ’ প্রকল্প, ‘ঢাকা (মিরপুর)-উথুলী-পাটুরিয়া জাতীয় মহাসড়কের (এন-৫) নবীনগর থেকে নয়ারহাট ও পাটুরিয়া ঘাট এলাকা প্রশস্তকরণসহ আমিনবাজার থেকে পাটুরিয়া ঘাট পর্যন্ত বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড এলাকা ডেডিকেটেড লেনসহ সার্ভিস লেন ও বাস-বে নির্মাণ’ প্রকল্প এবং ‘লাকসাম (বিনয়ঘর)-বাইয়ারা বাজার-ওমরগঞ্জ-নাঙ্গলকোট জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ’ প্রকল্প। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ‘মডার্নাইজেশন অব সিটি স্ট্রিট লাইট সিস্টেম অ্যাট ডিফারেন্ট এরিয়া আন্ডার চিটাগং সিটি করপোরেশন’ প্রকল্প; ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের ‘বাংলাদেশ ডাক বিভাগের অধীন জরাজীর্ণ ডাকঘরগুলো সংস্কার/পুনর্বাসন (দ্বিতীয় পর্যায়)’ প্রকল্প; শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ‘কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতর আধুনিকায়ন ও শক্তিশালীকরণ এবং ১৩টি জেলা কার্যালয় স্থাপন’ প্রকল্প’ কৃষি মন্ত্রণালয়ের ‘বিএডিসির বিদ্যমান সার গুদামগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ, পুনর্বাসন এবং নতুন গুদাম নির্মাণের মাধ্যমে মেঘনা নদীর ভাঙন থেকে ভোলা জেলার তজুমদ্দিন উপজেলা সদর সংরক্ষণ’ প্রকল্প; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক, কক্সবাজারের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ (দ্বিতীয় পর্যায়)’ প্রকল্প; স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নয়টি ব্রিজ নির্মাণ’ প্রকল্প; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্প যথাক্রমে ‘বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্প, সিলেট বিভাগ (প্রথম সংশোধন)’ প্রকল্প এবং ‘চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থার সম্প্রসারণ ও শক্তিশালীকরণ’ প্রকল্প।

এডিপি বাস্তবায়ন ৯৪ শতাংশ : একনেক সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, বিদায়ী অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ৯৪ দশমিক ৩২ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে। এটি সংশোধিত এডিপির বাস্তবায়ন হার। টাকার অঙ্কে বিদায়ী অর্থবছরে খরচ হয়েছে ১ লাখ ৬৬ হাজার ৫৯৩ কোটি টাকা। বিদায়ী অর্থবছরে সংশোধিত এডিপির আকার ছিল ১ লাখ ৭৬ হাজার ৬২০ কোটি টাকা। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এডিপির ৯৪ দশমিক ১১ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছিল। তখন অবশ্য ১ লাখ ৪৮ হাজার ৩০৬ কোটি টাকা খরচ করা সম্ভব হয়েছিল। আগের বারের চেয়ে বিদায়ী অর্থবছরে প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা বেশি খরচ হয়েছে।

সর্বশেষ খবর