দেশি-বিদেশি চক্রান্ত আর গুজব উপেক্ষা করে দ্রুত শেষ হতে যাচ্ছে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর কাজ। এরই মধ্যে মূল কাজের ৮১ শতাংশ এবং সার্বিক কাজের ৭১ শতাংশ শেষ হয়েছে। এ ছাড়া ২৯৪টি পাইলের মধ্যে ২৯২টির কাজও শেষ হয়েছে। ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে বাকি ২ পাইলের কাজ শেষ হবে। প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, নদীশাসন তথা নদীর দুই তীর সুরক্ষার কাজও দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। এরই মধ্যে নদীশাসন কাজের ৬০ শতাংশ শেষ হয়েছে। মুন্সীগঞ্জ-২ আসনের এমপি সাবেক হুইপ অধ্যাপিকা সাগুফতা ইয়াসমীন এমিলি গতকাল মুঠোফেনে জানান, কোনো গুজব বা অপশক্তিই পদ্মা সেতুর বাস্তবায়ন রুখতে পারবে না। তিনি উল্লেখ করেন, ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সেতুতে ৪২টি পিলার থাকবে এবং তার উপরে ৪১টি স্প্যান বসানো হবে। ৪২টি পিলারে ২৯৪টি পাইল বসছে যার ২৯২টি পাইল এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। বাকি ২টি পাইল বসানোর কাজও শেষের দিকে, দুই-এক দিনের মধ্যে অর্থাৎ ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে এ কাজও শেষ হবে। ৪১টি স্প্যানের মধ্যে ১৪টি স্প্যান এরই মধ্যে পিলারে বসেছে। আরও ১০টি চীন থেকে মাওয়ার কুমারভোগ কনস্ট্রাশন ইয়ার্ডে এসে পৌঁছেছে। সেগুলো এখন ফিটিংস করা হচ্ছে। অবশিষ্ট ১৭টিও তৈরি হচ্ছে চীনেই। পুরো সেতুতে ২ হাজার ৯৩১টি রোডওয়ে স্ল্যাব বসানো হবে। আর রেলওয়ে স্ল্যাব বসানো হবে ২ হাজার ৯৫৯টি। প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ৪২টি পিলারের মধ্যে এ পর্যন্ত ২৯টি পিলার বসানোর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি ১৩টি পিলারের কাজও শেষের দিকে। এরই মধ্যে সেতুর দুই কিলোমিটারের বেশি দৃশ্যমান হয়েছে। এখানে প্রায় ২৫ হাজার দেশি-বিদেশি শ্রমিক কাজ করছেন। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কো¤পানি, নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন এবং প্রকল্প এলাকাজুড়ে সার্বিক তত্ত্বাবধায়নসহ কঠোর নিরাপত্তায় রয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো। জানা গেছে, পদ্মা সেতুর মাওয়া এবং জাজিরা উভয় প্রান্তে ভায়াডাক্ট-এর পাইলিং এবং পিলারের কাজ শেষে এখন গার্ডার স্থাপনের কাজ চলছে। এরই মধ্যে দুই প্রান্তে টোল প্লাজা এবং সংযোগ সড়ক নির্মাণকাজ শতভাগ শেষ হয়েছে।