শনিবার, ১৩ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা
ঐতিহ্য

চাঁদপুরের লোহাগড় মঠ কালের সাক্ষী

নেয়ামত হোসেন, চাঁদপুর

চাঁদপুরের লোহাগড় মঠ কালের সাক্ষী

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলা থেকে পাঁচ কিলোমিটার উত্তরের আলোচিত লোহাগড় গ্রাম। প্রচণ্ড প্রতাপশালী জমিদার পরিবারের দুই ভাই ‘লোহা’ ও ‘গহড়’-এর নামানুসারেই মূলত  গ্রামটির        নাম রাখা হয় ‘লোহাগড়’। জনশ্রুতি রয়েছে, এক গর্ভবতী নারী জমিদার বাড়ির সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় তারা দুই ভাই বাজি ধরে মেয়ে নাকি ছেলে বাচ্চা আছে পেট কেটে দেখেন। পাশাপাশি ব্রিটিশ পরিব্রাজক লোহাগড় গ্রাম পরিদর্শনে এলে তাদের আথিতেয়তা ও আভিজাত্য দেখে বিমুগ্ধ হন। কথিত আছে, ওই পরিব্রাজকের জন্য নদীর তীর থেকে তাদের বাড়ি পর্যন্ত ২০০ হাত রাস্তা সিকি ও আধুলি মুদ্রায় নির্মাণ করেছিলেন। সাধারণ মানুষ তাদের বাড়ির সামনে দিয়ে ভয়ে চলাফেরা করতেন না। বাড়ির সামনে দিয়ে ডাকাতিয়া নদীতে নৌকাগুলোকে ভয়ে নিঃশব্দে যাতায়াত করতে হতো। ডাকাতিয়া নদীর তীরে তাদের বাড়ির অবস্থানের নির্দেশিকাস্বরূপ সুউচ্চ সাতটি মঠ নির্মাণ করেছিলেন। বর্তমানে তিনটি মঠ কোনোমতে অস্তিত্ব নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তাদের আর্থিক প্রতিপত্তির নিদর্শনস্বরূপ মঠের সর্বোচ্চ শিখরে একটি স্বর্ণদ  স্থাপন করেন। এই স্বর্ণদে র লোভে মঠের শিখরে উঠতে গিয়ে অনেকেই মৃত্যুবরণ করেছেন বলে শোনা যায়। এই বৃহৎ স্বর্ণদ টি পরবর্তীকালে ঝড়ে ভেঙে নদীতে পড়ে যায়। পরবর্তীতে নদী তটের জমি চাষ করার সময় এক কৃষক সেটি পেয়েছিলেন। লোকমুখে শোনা যায়, এই স্বর্ণদ টি কয়েক মণ ওজনের ছিল। লোহাগড়ের এই দুই ভাইয়ের দোতলা বৈঠকখানাসহ পাসাদের তিনটি ধ্বংসাবশেষ এখনো বিদ্যমান। মঠের পূর্ব পাশে শান বাঁধানো পুকুর ও ভাঙা ঘাটলা রয়েছে। আম-দুধ খেতে চাওয়ায় তাদের বাবা-মাকে পুকুরটিতে আম-দুধে পূর্ণ করে ডুবিয়ে মারেন। পুকুরটিও এখন দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন বহু মানুষ মঠ, প্রাসাদ ও পুকুর দেখতে  ভিড় জমায়। দুই ভাইয়ের দোর্দ  প্রতাপের নীরব সাক্ষী হয়ে স্থাপত্যের নিদর্শন  মঠটি এখনো দাঁড়িয়ে আছে। স্থানীয় বাসিন্দা ও ইউপি চেয়ারম্যান সফিকুর রহমান পাটওয়ারী জানান, ‘বাবা-দাদার কাছে শুনেছি, এখানে দোর্দ  প্রতাপশালী অত্যাচারী জমিদার হারাধন, রামকেশব ও পরেশ চন্দ্র বাস করতেন।

সর্বশেষ খবর