বাজারে থাকা বিএসটিআই অনুমোদিত বিভিন্ন কোম্পানির পাস্তুরিত (প্যাকেটজাত) দুধে অ্যান্টিবায়োটিকসহ ক্ষতিকর কোনো উপাদান আছে কিনা, তা চারটি প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের শুনানি শেষে গতকাল বিচারপতি সৈয়দ রিফাত আহমেদ ও বিচারপতি ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। আদালত আগামী ২৩ জুলাই পরবর্তী শুনানির জন্য রেখেছে। পাস্তুরিত দুধে অ্যান্টিবায়োটিক, ডিটারজেন্ট, ফরমালিন, ব্যাকটেরিয়া, কলিফর্ম, অ্যাসিডিটি, স্টাইফলোকাস্টেস ও ফরমালিন আছে কিনা তা, চারটি গবেষণাগারে পরীক্ষা করে এক সপ্তাহের মধ্যে আলাদাভাবে প্রতিবেদন দিতে বলেছে আদালত। প্রতিষ্ঠান চারটি হচ্ছে- বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর), জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট (আইপিএইচ), বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই) এবং আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র (আইসিডিআরবি)। এসব প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের নিয়ে বিএসটিআইকে দৈবচয়নের ভিত্তিতে বাজার থেকে দুধের নমুনা সংগ্রহ করতে বলেছে হাই কোর্ট। আদালতে বিএসটিআইয়ের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন এম আর হাসান মামুন। রিটের পক্ষে শুনানি করেন অনীক আর হক। এর আগে গতকাল সকালে এ সংক্রান্ত রিট আবেদনের শুনানি শুরু হয়। দুধে অ্যান্টিবায়োটিক ও ক্ষতিকর উপাদানের উপস্থিতি সংক্রান্ত গবেষণা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) কী পদক্ষেপ নিয়েছে তা দুপুর ২টার মধ্যে জানাতে বিএসটিআইয়ের আইনজীবীকে নির্দেশ দিয়েছিল হাই কোর্ট। পরে মধ্যাহ্ন বিরতির পর আবার শুনানি শুরু হয়। শুনানি শেষে হাই কোর্ট নির্দেশ দেয়, ওই ৪ প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে স্বাধীনভাবে দুধের নমুনা পরীক্ষা করাতে হবে। এক্ষেত্রে বিএসটিআই এই সমন্বয় করবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক আ ব ম ফারুকের নেতৃত্বে দুই দফা গবেষণায় বাজারে থাকা বিভিন্ন কোম্পানির দুধে অ্যান্টোবায়োটিকের উপস্থিতি ধরা পড়ার পর আদালতের এই নির্দেশ এলো। গত ২৫ জুন এক সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক ফারুক বাজারে প্রচলিত বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সাতটি প্যাকেটজাত (পাস্তুরিত) দুধের নমুনা পরীক্ষায় সেগুলোতে মানুষের চিকিৎসায় ব্যবহৃত শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিকের উপস্থিতি পাওয়ার কথা জানান। এরপর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হলে ওই গবেষণার সঙ্গে সম্পর্ক নেই বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের চেয়ারম্যান। এই প্রেক্ষাপটে শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দ্বিতীয় দফা পরীক্ষায়ও বাজার থেকে ১০টি নমুনা নিয়ে ১০টিতেই অ্যান্টিবায়োটিক পাওয়ার কথা জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বায়োমেডিকেল রিসার্চ সেন্টারের সদ্য সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ফারুক।
