মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

ফেনীর এডিএম এনামুলের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফেনীর এডিএম এনামুলের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ

ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির আগুনে মৃত্যুর ঘটনায় ওই মাদ্রাসার গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান ফেনীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) পি কে এনামুল করিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত করতে নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে জনপ্রশাসন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবকে এনামুল করিমের বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলেরও নির্দেশ দিয়েছে আদালত। গতকাল এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এসব আদেশ দেয়।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। পরে বাশার জানান, অন্তর্বর্তীকালীন আদেশের পাশাপাশি নুসরাত হত্যা মামলায় মাদ্রাসা গভর্নিং বডির চেয়ারম্যানের (পি কে এনামুল করিম) নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাই কোর্ট। একই সঙ্গে এনামুল করিমের বিরুদ্ধে কেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ পুলিশের আইজিকে এসব রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। রিটের শুনানিকালে একটি জাতীয় দৈনিকে ‘নুসরাত হত্যায় এডিএম এনামুলের ভূমিকা : পুলিশের তদন্তের এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন মন্ত্রণালয়ের’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ আদালতে তুলে ধরা হয়। গত ২১ জুন প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ৪ এপ্রিল নুসরাত ও তার মা অধ্যক্ষ সিরাজের বিচার চাইতে যান মাদ্রাসা গভর্নিং বডির সভাপতি এনামুল করিমের অফিসে। বিচার তো দূরের কথা, তিনি ঘটনাটি চেপে যেতে বলেন নুসরাতকে। এনামুল তাদের বলেন, এখন কেন এসেছেন। আপনারা তো মামলা করে ফেলেছেন। মামলা করার আগে এলে দেখতাম, কী করা যায়।

গত ৬ এপ্রিল নুসরাত সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় আলিম পরীক্ষার কেন্দ্রে গেলে মাদ্রাসার ছাদে ডেকে নিয়ে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যায় মুখোশধারী দুর্বৃত্তরা। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ এপ্রিল রাতে নুসরাত জাহান রাফি ঢামেক হাসপাতালে মারা যান।

নুসরাত হত্যায় তিনজনের সাক্ষ্য গ্রহণ : এদিকে নুসরাত হত্যা মামলায় ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে গতকাল তিনজনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। মামলার সাক্ষী পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এস মোহাম্মদ ইয়াছিন বলেন, ২৭ এপ্রিল নুসরাতের মা শিরিন আক্তার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আমাকে ফোনে অভিযোগ করেন। পরে তিনি মাদ্রাসার অধ্যক্ষের কক্ষে প্রবেশ করার সময় তার সঙ্গে আমিও ছিলাম। এ সময় শিরিন আক্তার বেত দিয়ে অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাকে কয়কটি বাড়ি দেন। সিরাজ-উদ-দৌলা ওই সময় বলেছিলেন আপনার মেয়ে কীভাবে পরীক্ষা দেয় তা আমি দেখে নেব। এই দিন যে অ্যাম্বুলেন্সে নুসরাতকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল সেই অ্যাম্বুলেন্স-চালক নুরুল করিম ও সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ হোসাইনও সাক্ষ্য দেন। আদালত আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত মুলতবি করা হয়। আজ সাক্ষ্য দেবেন শিক্ষক নুরুল আবছার ফারুকী, নুসরাতের সহপাঠী তানজিনা বেগম সাথী ও বিবি জাহেদা তামান্না।

সর্বশেষ খবর