মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা
কৃষি সংবাদ

সবজি চাষে ঝুঁকছেন নওগাঁর কৃষক

নওগাঁ প্রতিনিধি

সবজি চাষে ঝুঁকছেন নওগাঁর কৃষক

উত্তরাঞ্চলের নওগাঁ জেলা ধান ও সবজি এলাকা হিসেবে খ্যাত। জেলার চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়ে থাকে। ধান ও সবজির পাশপাশি আবাদ হয়ে থাকে পাটেরও। তবে উৎপাদনে খরচ ও পরিশ্রম বেশি এবং জাগ দেওয়ার (ভিজানো) জায়গা না থাকায় প্রতি বছর কমছে পাটের আবাদ। পাট চাষে আগ্রহ কমে এখন সবজির দিকে ঝুঁকছেন নওগাঁর কৃষকরা। তবে পাটজাত দ্রব্যের ব্যবহার বাড়ানো সম্ভব হলে পাটের আবাদ বৃদ্ধি পাবে। কৃষকরা বলছেন, প্রতি বিঘায় পাটের আবাদ করতে চাষ, বীজ, সার, ওষুধ, নিড়ানি, সেচ, শ্রমিক খরচ, কাটা ও ধোয়াসহ প্রায় ১৪-১৫ হাজার টাকা খরচ হয়ে থাকে। বিঘাপ্রতি পাট উৎপাদন হয় ১০-১৪ মণ। কিন্তু পাট বিক্রি করে সে পরিমাণ টাকা পাওয়া যায় না। বদলগাছীর বালুভরা গ্রামের কৃষক আবদুল জব্বার বলেন, পাটের আবাদে সবচেয়ে বড় সমস্যা জাগ দেওয়ার জায়গা না থাকা। পাট কাটার পর ভিজানোর জন্য যে সময় পানির দরকার তা পাওয়া যায় না। গত বছর এক বিঘা জমিতে পাট আবাদ করেছিলাম। এ সমস্যার কারণে এ বছর পাট আবাদ করিনি। সে জমিনে এখন পটোল করেছি। প্রতিদিন  পটোল তুলে বাজারে বিক্রি করছি। ভালো দাম পাচ্ছি। পাটের মতো ঝামেলা পোহাতে হয় না। নাজিরপুর গ্রামের কৃষক শফিকুল ইসলাম বলেন, গত বছর দুই বিঘা পাটের আবাদ করেছিলাম। এ বছর এক বিঘা জমিতে পাট লাগিয়েছি। আলু আবাদের পর জমি ফেলে না রেখে ওই জমিতে পাট লাগানো হয়। পাট লাগানো থেকে শুরু করে ঘরে ওঠানো পর্যন্ত প্রচুর কষ্ট করতে হয়। কিন্তু সে তুলনায় আমরা মূল্য পাই না। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক আহসান শহীদ সরকার বলেন, ২০১৯-২০ অর্থবছরে জেলায় পাটের আবাদ করা হয়েছে ৬ হাজর ১৫০ হেক্টর আর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭০ হাজার ২৩৫ হেক্টর। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৬ হাজার ৯৩০ হেক্টর এবং ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৮ হাজার ২৫ হেক্টর। বৈরী আবহাওয়ার কারণে প্রতি বছর কমছে পাটের আবাদ। পাটের আবাদ ছেড়ে কৃষকরা সবজির আবাদের দিকে ঝুঁকছেন। আঁশ ছাড়ানোর সময় পানি না পাওয়া পাট নিয়ে বিপাকে পড়তে হয় কৃষকদের। ফলে ভূগর্ভস্থ পানির চাপ কমাতে এবং স্বল্প পানিতে আবাদে উৎসাহিত করার ফলে পাটের আবাদ ছেড়ে কৃষকরা এখন সবজি চাষের দিকে ঝুঁকছেন।

সর্বশেষ খবর