শুক্রবার, ১৯ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

মশার ভয়ে আগারগাঁও অফিসে যাই না : অর্থমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

সম্প্রতি ডেঙ্গু জ্বরে ভোগার অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, আগারগাঁওয়ে মশার উপদ্রব বেশি। এ জন্য ভয়ে সেখানে যাচ্ছি না।

গতকাল সচিবালয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এলে সাক্ষাতের পূর্বে এক সংক্ষিপ্ত ব্রিফিংয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশে অর্থনীতির অবস্থা ভালো, এর প্রভাব তো শেয়ারবাজারে পড়ার কথা। আমি মনে করি শেয়ারবাজার বর্তমানে মোটামুটি স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। সরকার পুঁজিবাজারকে একটা শক্ত ভিত্তিতে দাঁড় করাতে কাজ করছে। এ জন্য এরই মধ্যে বাজেটে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামীতেও পুঁজিবাজারের জন্য সরকারের তরফ থেকে যা যা করা দরকার সব করা হবে। এ ছাড়া রপ্তানির নামে যারা অর্থ পাচার করছে তাদেরকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।

অর্থমন্ত্রী বলেন, শেয়ারবাজারের জন্য আমার কাজটা হবে একটা সুন্দর অবস্থান তৈরি করে দেওয়া। যাতে করে শেয়ারবাজার নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে। শেয়ারবাজারে লাভ-লোকসানের সঙ্গে সরকারের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। পুঁজিবাজার সরকারের শেয়ার খুব কম রয়েছে। এখান থেকে সরকার শেয়ার বিক্রি করে বের হয়ে যাবে এমনটি নয়।

তিনি বলেন, শেয়ারবাজার একটি বাজার। যারা এখানে বিনিয়োগ করবেন তারাই লাভবান হবেন। লাভও হতে পারে আবার লোকসানও হতে পারে। প্রত্যেক দেশেই পুঁজিবাজারে মাঝে মধ্যে শেয়ারের দাম কমে। এখন যেমন ট্রেড উয়ার (বাণিজ্য যুদ্ধ) চলছে। সেটা খুব বেশি দিন থাকবে না। খুব শিগগিরই তা স্বাভাবিক হয়ে আসবে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশসমূহের অর্থনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন দেখা দিলে এর প্রভাব বাংলাদেশে পড়ে। আমাদের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীরা শুধু লাভ করতে চায়। ট্রেড করে ছোট্ট লাভ করে বেরিয়ে যেতে চায়। এটা কিন্তু পুঁজিবাজার না। পুঁজিবাজারের দুটি পদ্ধতি আছে। একটা হচ্ছে আপনি ট্রেড করবেন লাভ করবেন। আবার আপনি ইনভেস্টমেন্ট ধরে রাখবেন যাতে ক্যাপিটাল গেইন পেতে পারেন। আমাদের এখানে দুঃখজনক যে ক্যাপিটাল গেইনের চিন্তা করে না অনেকে। আমার ১০০ টাকার শেয়ার কবে ১৫০ টাকা হবে এটা কেউ চিন্তা করে না। আমার কাছে যা ছিল পুঁজিবাজারের জন্য বাজেটে আমি তা করেছি। ডিভিডেন্টের ওপর একাধিকবার করারোপ তুলে দেওয়া হয়েছে। পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করলে ২৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত করছাড় দেওয়া হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, পুঁজিবাজারের জন্য সরকারের তরফ থেকে যা যা করা দরকার করব। কারণ এখনো হাজার হাজার মানুষ পুঁজিবাজারের সঙ্গে সম্পৃক্ত। সুতরাং তাদেরকে বাদ দিয়ে দেশের অর্থনীতি চিন্তা করতে পারি না। তাই তাদের সমর্থন দেওয়ার জন্য আমরা কাজ করে যাব।

অর্থ পাচার প্রসঙ্গ : একটি কোম্পানি টেরাকোটা টাইলস রপ্তানির নামে ২০০ কোটি টাকা পাচার করেছে গণমাধ্যমে এমন প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, অর্থ পাচারকারী যেই হোক তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যে কোম্পানির নাম এসেছে। সে কোম্পানির মালিকের বাড়ি কুমিল্লায় হোক আর যেখানেই হোক, এমন কি আপনার নিজের পরিবারের কোনো সদস্য হলেও তাকে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব। আপনারা দেখতে পাবেন।

প্রসঙ্গ মশা : সম্প্রতি ডেঙ্গু জ্বরে ভোগা অর্থমন্ত্রী বলেন, এখন থেকে সচিবালয়ের দফতরেই নিয়মিত অফিস করবেন। আগারগাঁওয়ের কার্যালয়েও যাবেন। কিন্তু সেখানে মশার উপদ্রব বেশি। সেখানে তাকে দুবার মশা কামড়েছে। যার ফলে একবার ডেঙ্গু হয়েছে। আরেকবার চিকনগুনিয়া হয়েছিল। এ জন্য তিনি বর্তমানে সেখানে যেতে ভয় পান। কিন্তু যানজট ঠেলে সচিবালয়ে আসতে বেশি সময় ব্যয় হয়। গতকালও এক ঘণ্টা দুই মিনিট লেগেছে। এ সময় ব্যক্তিগত শারীরিক অসুস্থতার বিষয়ে জানতে চইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমি অসুস্থ ছিলাম। এটা সংসদে নিজেই ঘোষণা দিয়েছি। সে অসুখ এখন আর নেই। এখন আর সমস্যা নাই। চোখে যে সমস্যা ছিল সেটাও চলে গেছে। এখন চশমা ব্যবহার করি। যদিও লাগে না তবুও ডাক্তার ব্যবহার করতে বলেছেন।

সর্বশেষ খবর