শুক্রবার, ১৯ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

মায়ের দেওয়া লিভারে জীবন পেল ছেলে

নিজস্ব প্রতিবেদক

‘মায়ের চেয়ে আপন কেহ নাই।’ সন্তানকে পৃথিবীতে আনতে হাসতে হাসতে নিজের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলেন মা। অসুস্থ সন্তানের পাশে সারা রাত জেগে কাটান যে মানুষটি, তিনি মা। সন্তানের মঙ্গল কামনায় নিজের জীবনটা মুহূর্তে বিলিয়ে দিতেও দ্বিধাবোধ করেন না মা। এবার গর্ভধারিণী মায়ের দেওয়া লিভারে জীবন ফিরে পেল এক সন্তান।

গতকাল যখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) মিল্টন মিলনায়তনে মা ও ছেলেকে গণমাধ্যমের সামনে হাজির করা হয় তখন দুজনেই কাঁদছেন। এ কান্না আনন্দের। লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত সিরাতুল ইসলাম সুস্থ হয়ে গতকাল বিএসএমএমইউ থেকে বাড়ি ফিরেছেন। তাকে বিদায় দিতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। গত ২৪ জুন বিএসএমএমইউতে প্রথমবারের মতো অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে মায়ের লিভারের একটি অংশ জুড়ে দেওয়া হয় সিরাতুলের (২০) শরীরে। ১৮ ঘণ্টার ঐতিহাসিক এ অস্ত্রোপচারে অংশ নেয় মোট ৬০ জনের টিম। ২৫ দিনের মাথায় ২০ বছর বয়সী লিভারগ্রহীতা ও লিভারদাতা ৪৭ বছর বয়সী গর্ভধারিণী মা সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছাড়েন। অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে ফুপিয়ে কেঁদে সিরাতুল বলেন, ‘মা আমাকে নতুন জীবন দান করেছেন।’ নতুন জীবন পাওয়ার আনন্দে সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহ তায়ালা, প্রধানমন্ত্রী, বিএসএমএমইউর ভিসি ও চিকিৎসকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। বিশেষ করে যার মাধ্যমে বিএসএমএমইউতে ভর্তি ও অস্ত্রোপচারের সুযোগ পেয়েছেন সেই চিকিৎসক ডা. সাঈদের নাম বারবার কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন সিরাতুল। সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক অনুষ্ঠানের শেষাংশে মা-ছেলের হাতে লাল গোলাপ তুলে দেন। লিভার প্রতিস্থাপনের অস্ত্রোপচারে নেতৃত্ব দেন হেপাটোবিলিয়ারি, প্যানক্রিয়েটিক ও লিভার ট্রান্সপ্লান্টেশন সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. জুলফিকার রহমান খান। সহযোগিতা করেন ভারতের খ্যাতনামা লিভার ট্রান্সপ্লান্ট সার্জন ড. বালাচান্দ্র মেনন ও তার চিকিৎসক দল।

সর্বশেষ খবর