শনিবার, ২০ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা
কৃষি সংবাদ

পদ্মার চরে চীনা বাদাম চাষ

জহুরুল ইসলাম, কুষ্টিয়া

পদ্মার চরে চীনা বাদাম চাষ

অনাবাদি পদ্মার চরে চীনা বাদাম চাষ করে এ বছরও ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের চরাঞ্চলের চাষিরা। উপজেলার রামকৃষ্ণপুর, চিলমারী, মরিচা ও ফিলিপনগর ইউনিয়নের পদ্মা নদীর বিস্তীর্ণ চরে বাদাম চাষ করে সাফল্যের অর্থ ঘরে তুলেছেন তারা। অর্থকরী এ ফসল চাষ করে সংসারে সচ্ছলতা এসেছে দরিদ্র চরবাসীর। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে ক্ষতিকর তামাক চাষ না করে অর্থকরী বাদাম চাষে আরও বেশি আগ্রহী হবেন তারা। পদ্মার চরজুড়ে বালির নিচ থেকে টান দিলেই উঠে আসছে থোকা থোকা বাদাম। জেগে ওঠা পদ্মা নদীর বুকজুড়ে এক সময় মাইলের পর মাইল ধু-ধু বালু চর লক্ষ্য করা যেত। যা চরবাসীর কোনো কাজেই আসত না। কিন্তু কয়েক বছর আগে স্বল্প পরিসরে চাষিরা চীনা বাদামের চাষ শুরু করেন। তারা সাফল্য পাওয়ায় ক্রমান্বয়ে লাভজনক এ অর্থকরী ফসলের চাষ পুরো চরে ছড়িয়ে পড়েছে। চলতি মৌসুমে চরাঞ্চলে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার হেক্টর জমিতে চীনা বাদামের চাষ হয়েছে। বিঘাপ্রতি ৬-৮ মণ হারে ফলনও হচ্ছে। ২৫০০ টাকা মণ বিক্রয় করে খরচ বাদ দিয়ে লাভ হওয়ায় গরিব চাষিদের সংসারে সুদিন ফিরেছে। কৃষি বিভাগের সহায়তা পেলে চরজুড়েই অর্থকরী ফসল বাদাম চাষ করে সারা বছরের অর্থের জোগান দেওয়া সম্ভব হবে বলে জানান মরিচা ইউনিয়নের বৈরাগীরচর গ্রামের বাদাম চাষি সাইদুর রহমান। এদিকে বাদাম খেতে কাজ করে দিনমজুররাও চরম খুশি। তারাও কৃষকের বাদাম খেতে গাছ থেকে বাদাম ঝরিয়ে প্রতিদিন প্রায় আড়াইশ থেকে তিনশ টাকা আয় করেছেন। এদিকে বাদামের ব্যবসা লাভজনক হওয়ায় চাষিদের পাশাপাশি ব্যবসায়ীরাও খুশি। কৃষি বিভাগের পরামর্শ ও প্রয়োজনীয় প্রণোদনা দেওয়ায় এ বছর বাদাম চাষে ভালো ফলন হয়েছে। দৌলতপুর কৃষি কর্মকর্তা এ কে এম কামরুজ্জামান জানান, তামাক চাষে অনাগ্রহী করতে এবং চরের অনাবাদি জমি বাদাম চাষের আওতায় আনা যায় কীভাবে সে লক্ষ্যে কৃষি বিভাগ কাজ করছে। পদ্মাচরে প্রায় আড়াই হাজার হেক্টর জমিতে কোনো ফসল হয় না। এসব জমি বাদাম চাষের আওতায় আনা গেলে একদিকে যেমন চরের গরিব কৃষকদের মুখে হাসি ফুটবে, তেমনি দেশও আর্থিকভাবে লাভবান হবে।

সর্বশেষ খবর