রবিবার, ২৮ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

ঝাঁকে ঝাঁকে রুপালি ইলিশ

প্রতিদিন ডেস্ক

ঝাঁকে ঝাঁকে রুপালি ইলিশ

বঙ্গোপসাগরে জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে রুপালি ইলিশ। এতে জেলেদের মুখে যেমন হাসি ফুটেছে তেমনি কম দামে ইলিশ কিনে খুশি ক্রেতারা। কয়েকদিনের মধ্যে দাম আরও কমতে পারে বলে জানালেন সংশ্লিষ্টরা। তবে এখনো মেঘনা ও পদ্মায় ইলিশ তেমন ধরা পড়ছে না। নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর- পটুয়াখালী : বঙ্গোপসাগরে  জেলেদের জালে ধরা পড়ছে প্রচুর রুপালি ইলিশ। ইলিশ ধরে জেলেরা নিয়ে ফিরছেন দেশের বৃহত্তম মৎস্যবন্দর পটুয়াখালীর আলীপুর ও মহিপুরে। ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ায় দাম কমেছে ইলিশের। কম দামে ইলিশ বিক্রি করলেও খুশি জেলেরা। কারণ দীর্ঘদিন পর তাদের জালে ধরা পড়ছে প্রচুর ইলিশ। সব মিলিয়ে মৎস্যবন্দর আলীপুর ও মহিপুরের সবার মাঝে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। টানা ৬৫ দিন সাগরে সব ধরনের মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞা শেষে জেলেরা মাছ ধরতে সাগরে যায়। আর জেলেদের জালে ধরা পড়ে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। গভীর রাত থেকে অন্তত ১০০ ট্রলার মাছ নিয়ে সাগর থেকে ফিরে আসায় ইলিশে ইলিশে সয়লাব হয়ে যায় দক্ষিণাঞ্চলের মৎস্য বন্দরগুলো। ইলিশে সয়লাব পটুয়াখালীর হাট-বাজারগুলো। ৩৫০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি দরে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। আলীপুর মৎস্যবন্দর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আনছার উদ্দিন মোল্লা জানান, বর্তমানে ৪০০-৫০০ গ্রাম ইলিশের মণ পাইকারি ১৪ হাজার টাকা। আর ৫০০-৬০০ গ্রাম ইলিশের দাম ১৯ হাজার টাকা মণ। ৬০০-৯০০ গ্রাম ইলিশের মণ ৩৫ হাজার টাকা। আর এক কেজি ও তার চেয়ে বড় সাইজের ইলিশের দাম মণপ্রতি পাইকারি ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে বড় সাইজের মাছ খুবই কম ধরা পড়ছে। জেলেরা জানান, গত বছরের তুলনায় সাগরে বর্তমানে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। এ বছর সবচেয়ে বেশি ইলিশ পাওয়া যাবে সাগরে। তাই খুশি জেলেরা। এদিকে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী, ঢোস, মৌডুবি, জাহাজমারাসহ বেশ কয়েকটি মাছের ছোট বন্দরেও ইলিশে ইলিশে সয়লাব হয়ে গেছে।

চট্টগ্রাম : নিষেধাজ্ঞা শেষে সাগরে মাছ ধরার প্রথম দিন থেকেই জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে ইলিশসহ নানা মাছ। উত্তর চট্টলা উপকূলীয় মৎস্যজীবী জলদাস সমবায় কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি লিটন দাস বলেন, এতদিন বেশির ভাগ জেলে নিষেধাজ্ঞার কারণে মাছ ধরতে না পারায় ঋণ নিয়ে সংসার সামলেছেন। আশার কথা হচ্ছে প্রথম দিন থেকেই ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ছে। এ জন্য জেলে পরিবারগুলোতে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।

বিভিন্ন ঘাটে রকমভেদে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি দরে। কয়েকদিন পর ইলিশের দাম আরও কমে আসবে বলে জানালেন এক বিক্রেতা।

চাঁদপুর : চাঁদপুরে ইলিশের আমদানি বাড়ায় মাছঘাটগুলোতে কর্মচাঞ্চল্যতা ফিরে এসেছে। আড়তদার হাবু গাজী জানান, দীর্ঘদিন  জেলেদের জালে ইলিশ ধরা না পড়ায় এক প্রকার হতাশ ছিলাম। তবে গত কয়েকদিন মাছের আড়তে ইলিশ আসতে শুরু করেছে। যদিও মাছঘাটের অধিকাংশ ইলিশ বরিশাল, ভোলা, চরফ্যাশন ও মিয়ানমার থেকে আসা। বর্তমানে চাঁদপুরে ২৫টি ছোট-বড় মাছঘাটে ২০০ থেকে ৩০০ মণ ইলিশ আমদানি হচ্ছে। আর কদিন বাদে ইলিশের আমদানি আরও বাড়বে বলে আশা করছেন তারা। জেলে আসলাম দর্জি জানান, লোকাল ইলিশ নদীতে ব্যাপকভাবে ধরা না পড়লেও নামাতে ইলিশ ধরা পড়ায় কিছুটা আশাবাদী। বর্তমানে এক কেজি সাইজের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১২/১৩শ টাকা কেজি দরে। আর ছোট ছোট ইলিশ আকারভেদে  ৫০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অবশ্য অন্যান্য বছরের ন্যায় কাক্সিক্ষত ইলিশ এখনো পাচ্ছি না। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুল বাকী বলেন, এখন যে ইলিশ আসছে তাতেই বোঝা যাচ্ছে সরকারি বিভিন্ন অভিযান সফলভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছে। যদিও আগস্ট-সেপ্টেম্বর হচ্ছে ইলিশের ভরা মৌসুম। যেহেতু মোহনায় ব্যাপক আকারে ধরা পড়ছে, তাতে বোঝা যায় স্থানীয় জেলেরাও ইলিশ পাবে। বর্ষায় ইলশেগুড়ি বৃষ্টি নদীর পানি ঘোলা ও হালকা স্রোত বাড়লে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ জেলেদের জালে ধরা পড়বে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর