শনিবার, ৩ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

হজ ক্যাম্পে যাত্রী রেখে এজেন্সি মালিক মক্কায়

শফিকুল ইসলাম সোহাগ

হজ ফ্লাইটের মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে ১১ যাত্রীকে ঢাকার হজক্যাম্পে নিয়ে এসে তাদের রেখেই এজেন্সি মালিক চলে গেছেন মক্কায়। এই ১১ যাত্রীকে আজ (শনিবার) ফ্লাইটের আশ্বাস দেওয়া হলেও গতকাল হজক্যাম্পে এসে তারা জানতে পারেন এখনো তাদের বিমান টিকিট ও ভিসারও আবেদন করা হয়নি। যদিও ৩০ জুলাই এজেন্সি মালিক ফিরোজ কিবরিয়া চলে গেছেন মক্কায়। ৫ আগস্ট বেলা সোয়া ৩টায় বাংলাদেশ বিমানের শেষ ফ্লাইটটি যাবে।

সাউদিয়া ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস নামের এই এজেন্সিকে টাকা দিয়ে বিপাকে পড়েছেন ১১ জন হজযাত্রী। এ অবস্থায় হজযাত্রীদের গ্রুপ লিডার নিজেও এজেন্সি মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হয়ে শরণাপন্ন হয়েছেন হজ অফিসের। গতকাল সকাল থেকেই হজযাত্রীরা বিমান টিকিট ও ভিসার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন আশকোনার হজ অফিসে। হজ অফিস সূত্র জানান, সাউদিয়া ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরসের (লাইসেন্স নম্বর ১১৭০) মাধ্যমে এ বছর হজে যাওয়ার জন্য গ্রুপ লিডারের মাধ্যমে টাকা জমা দিয়েছেন হজযাত্রীরা। তারা প্রত্যেকেই সাড়ে ৩ লাখ টাকা করে জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে হজ অফিসে এসে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন জামাল শিকদার ও আবদুস সালাম নামের দুজন হজযাত্রী। হজযাত্রী জামাল শিকদার জানান, ‘অনেক আগেই সব টাকা পরিশোধ করেছি। আমার ট্র্যাকিং নম্বর এন ১এফ৮৩৮১এফসি৪৬। নিবন্ধিত হজযাত্রী বা পিআইডি নম্বর ১১৭০০৬১।’ তার বাড়ি ভোলার মনপুরা উপজেলার চরনিজামের বিচ্ছিন্ন একটি দ্বীপে। ৭১ বছরের বৃদ্ধ এই হজযাত্রী জানান, ‘জীবনের এই শেষবেলায় এসে জমি বিক্রি করে টাকা জমা দিয়েছি। এখন যদি হজে যেতে না পারি তাহলে হয়তো জীবনে আর কোনো দিন হজেই যাওয়া হবে না।’ এদিকে, এজেন্সির গ্রুপ লিডার মহিবুল্লাহ জানান, ‘এজেন্সি মালিক ফিরোজ কিবরিয়া আমাকে বলেছেন ৩ আগস্ট এই যাত্রীদের ফ্লাইট। বিমান টিকিট ও তাদের ভিসা বাংলামোটরে এজেন্সি অফিসে থাকবে। আপনি এদের পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন। পরে বৃহস্পতিবার এজেন্সি অফিসে গিয়ে খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম আমার গ্রুপের দুজন হজযাত্রী আবদুস সালাম নামের একজনের ভিসার আবেদন করা হয়েছে কিন্তু বিমান টিকিট করা হয়নি। আর জামাল শিকদারের বিমান টিকিট ও ভিসার কোনোটিরই কোনো কাজ করা হয়নি। এখন এজেন্সি মালিক আমার ফোনও ধরছেন না।’ প্রতারণার শিকার এ দুই হজযাত্রী জানান, তাদের সঙ্গে আরও নয়জন হজযাত্রী আছেন তারাও একই রকম বিপাকে পড়েছেন। তারাও হজক্যাম্পে এসে সমস্যার সমাধানের জন্য নানা জনের কাছে সাহায্য চাইছেন। ঢাকা হজ অফিসের পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম জানান, ‘আমরা দুজন হজযাত্রীর কাছ থেকে অভিযোগ পেয়েছি। যেহেতু এজেন্সি মালিক দেশে নেই তাই এখনই কোনো অ্যাকশনে যেতে পারছি না। তবে হজযাত্রীদের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ নিচ্ছি।’ আবদুস সালাম নামের একজনের বিমান টিকিটের টাকা সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক কাকরাইল শাখায় জমা আছে বলেও জানান হজ অফিসার।

সর্বশেষ খবর