শনিবার, ৩ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

জোড়া লাগানো যমজ শিশুর জন্ম

সঞ্জিত সাহা, নরসিংদী

জোড়া লাগানো যমজ শিশুর জন্ম

পেট ও বুক জোড়া লাগানো যমজ দুই শিশুর জন্ম হয়েছে। একসঙ্গে দুই সন্তান পেয়ে খুশি নবজাতকের পরিবার। তবে জোড়া অবস্থায় জন্ম নেওয়ায় আনন্দ রূপ নিয়েছে দুশ্চিন্তায়। মুখে হাসি থাকলেও কণ্ঠে বিষাদের সুর। চিকিৎসা ব্যয়ের কথা ভেবে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে দরিদ্র এ পরিবার। তাই হাসপাতাল ছেড়ে বাসায় নিয়ে শিশুদের পরিচর্যা করা হচ্ছে। যমজ ও জোড়া বাচ্চা জন্মের খবরে নবজাতকের বাড়িতে ভিড় করছেন উৎসুক গ্রামবাসী। সিভিল সার্জন বলেছেন, শিশুর সব অরগান যদি আলাদা থাকে, তাহলে দুইটি শিশুকেই বাঁচানো সম্ভব। জানা যায়, প্রায় ১ বছর আগে বেলাবো উপজেলার হোসেনপুর গ্রামের আঙ্গুর মিয়ার ছেলে রাজমিস্ত্রি ইসমাইল  হোসেনের সঙ্গে রায়পুর উপজেলার ডৌকারচর ইউনিয়নের কাশিমপুর গ্রামের রিকশাচালক আবদুল হামিদ মিয়ার মেয়ে সুমি আক্তারের বিয়ে হয়। বুধবার শহরের একটি হাসপাতালে জন্ম নেয় তাদের দুই যমজ ছেলে সন্তান। দুই শিশুর মাথা ও কাঁধের নিচে থেকে পেট পর্যন্ত জোড়া লাগানো। নাক, কান ও মুখসহ মাথা সম্পূর্ণ আলাদা। তবে ৪টি হাত, ৪টি পা ও দুইটি মাথা আলাদা অবস্থায়। খাবারও খাচ্ছে আলাদভাবে। শনিবার শিশুদের নানার বাড়িতে নেওয়া হয়। চিকিৎসা ব্যয় ও হাসপাতালে নিয়ে গেলে রেখে দেওয়া হতে পারে এই ভেবে শিশু দুটিকে বাড়িতেই রাখা হচ্ছে। নানী নাসিমা বেগম বলেন, হাসপাতালে নিয়ে গেলে যদি বাচ্চা দুইটিকে রেখে দেয়, সে ভয়ে বাসায় রেখে স্থানীয় চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা করানো হচ্ছে। বাবা ইসমাইল হোসেন বলেন, আল্লাহ যমজ দুইটি সন্তান দেওয়ায় আমি খুশি। তবে যে আর্থিক অবস্থা সন্তানদের সুচিকিৎসা আমার জন্য বড়ই কঠিন। তাই দেশবাসীর কাছে দোয়া ও সরকারের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি। অস্ত্রোপচারের পর নবজাতকের মা সুমি আক্তার এখনো পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে পারেনি। একদিকে নিজের অসুস্থতা অন্যদিকে জোড়া লাগানো সন্তান। সবমিলিয়ে অনেকটা বিমর্ষ এ মা। তিনি বলেন, আমরা গরিব মানুষ। সন্তানদের আলাদা করতে যে খরচ তা আমাদের নেই। কীভাবে তাদের বাঁচিয়ে রাখব সে চিন্তা মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। সবার সহযোগিতা কামনা করছি। রায়পুরা ডৌকারচর ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ ফরাজি বলেন, আমরা শিশু দুইটিকে বাঁচিয়ে রাখতে কিছু সহায়তা করছি। সরকারিভাবে সহায়তা পেলে শিশু দুটিকে বাঁচানো সম্ভব। ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. আমিরুল হক শামীম বলেন, শিশু দুইটিকে সুস্থভাবে বাঁচিয়ে রাখতে হলে তাদের আলাদা করা প্রয়োজন। তাদের অরগান যদি আলাদা থাকে, তাহলে দুইটি শিশুকেই বাঁচানো সম্ভব। সে জন্য তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল অথবা পিজি হাসপাতালে স্থানান্তর করতে হবে।

 

সর্বশেষ খবর