বৃহস্পতিবার, ৮ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা
জিআরপি থানায় গণধর্ষণ

ওসি-এসআই প্রত্যাহার

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

খুলনার জিআরপি (রেলওয়ে) থানার অভ্যন্তরে এক নারীকে গণধর্ষণের অভিযোগে ওই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উসমান গনি পাঠান ও উপপরিদর্শক (এসআই) নাজমুল হককে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ঘটনায় গঠিত পুলিশের তদন্ত কমিটির প্রধান কুষ্টিয়া সার্কেলের এএসপি ফিরোজ আহমেদ এ তথ্য জানিয়েছেন। এদিকে নির্যাতিত ওই নারীর পরিবারের সদস্যদের অব্যাহত হুমকি দেওয়া হচ্ছে। গতকাল তারা তদন্ত কমিটির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ বিষয়ে  বিস্তারিত জানিয়েছেন। একই সঙ্গে পুলিশের দেওয়া মিথ্যা মাদক মামলায় কারাগারে থাকা ওই নারীর জামিন আবেদনের প্রস্তুতি নিয়েছেন আইনজীবীরা। জানা যায়, গত শুক্রবার জিআরপি পুলিশ ওই নারীকে মোবাইল চুরির অভিযোগে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে গভীর রাতে তাকে থানা অভ্যন্তরে ধর্ষণ ও মারধর করার অভিযোগ ওঠে। পরের দিন শনিবার ফেনসিডিলসহ তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে মাদক মামলায় আদালতে পাঠায় জিআরপি পুলিশ। সেখানে ভুক্তভোগী গণধর্ষণের বিষয়টি জানালে ওই নারীর ডাক্তারি পরীক্ষার নির্দেশ দেয় আদালত। গতকাল দুপুরে সরেজমিন ঘটনাস্থল জিআরপি থানায় গেলে দেখা যায়, তদন্ত কমিটি থানার পুলিশ সদস্যদের সাক্ষ্যগ্রহণ এবং জিজ্ঞাসাবাদ করছে। এ সময় পুলিশ সুপার (পাকশি-রেলওয়ে জেলা) মো. নজরুল ইসলামসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা থানার হাজতখানাসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তদন্ত কমিটির প্রধান এএসপি ফিরোজ আহমেদ বলেন, তারা থানার পুলিশ সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ এবং সাক্ষ্যগ্রহণ করছেন। একই সঙ্গে অভিযুক্ত খুলনা জিআরপি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উসমান গনি পাঠান ও উপপরিদর্শক (এসআই) নাজমুল হককে পাকশি পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

 থানার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সেকেন্ড অফিসার এসআই অসীম কুমার দাসকে। ওই নারীর বড় বোন বলেন, মোবাইল ফোনে তাদের নানাভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তদন্ত কমিটির সঙ্গে দেখা করে তারা বিষয়টি  জানিয়েছে। এ ঘটনায় দোষীদের শাস্তি হবে তদন্ত কমিটি তাদের আশ্বস্ত করেছেন। তিনি বলেন, ‘আদালতের নির্দেশে হাসপাতালে যখন আমার বোনের মেডিকেল পরীক্ষা হয় সেখানেও ওই ওসি (উসমান) উপস্থিত ছিল। আমার বোনের বিরুদ্ধে সাজানো মাদক মামলার দারোগা গৌতম কুমারের সঙ্গে তার সারাক্ষণ যোগাযোগ রয়েছে।

এ অবস্থায়  সুবিচার কীভাবে পাব জানি না। বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা, খুলনার সমন্বয়কারী অ্যাডেভোকেট মোমিনুল ইসলাম বলেন,  যেহেতু হাসপাতালে ডাক্তারি পরীক্ষার ফরেনসিক প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত ধর্ষণের বিষয়ে আইনগত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে আমরা মিথ্যা মাদক মামলায় নির্যাতিতা ওই নারীর জামিনের আবেদন করছি। পাশাপাশি দোষী পুলিশের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন দমন আইনে মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার মামলার আবেদন আদালতে উপস্থাপন করা হবে। 

সর্বশেষ খবর