শনিবার, ১৭ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

সৌদিতে ৫ বাংলাদেশি যুবকের সাফল্য

আড়াই হাজার ট্যাক্সির বহর তাদের নিয়ন্ত্রণে

মোস্তফা কাজল, সৌদি আরব থেকে

সৌদি আরব প্রবাসী পাঁচ বাংলাদেশি যুবক নিয়ন্ত্রণ করছেন আড়াই হাজার ট্যাক্সির সার্ভিস ব্যবসা। এ পাঁচজন হলেন, মনির হোসেন, আবুল কালাম, মোহন মিয়া, খোকন খান ও জব্বার মিয়া। মূলত এ পাঁচ যুবকের হাত ধরে পাঁচ বছর আগে সৌদি আরবের মক্কা, মদিনা, জেদ্দা, রিয়াদ ও দাম্মাম এই পাঁচ শহরে বাংলাদেশি ড্রাইভারদের পরিচালনায় ট্যাক্সি সার্ভিস চালু হয়। এই যুবকরা এক সময় সৌদি আরবের ইউনাইটেড ট্রেডিং এজেন্সিতে ড্রাইভার হিসেবে চাকরি করতেন। একসময় ভাবলেন, চাকরির অবসরে আর কি করা যায়। তারা তখন বাংলাদেশের একসময়ের বিশ^বিদ্যালয় কর্মসংস্থান প্রকল্প-বিকল্প ট্যাক্সির আদলে সৌদি আরবে ট্যাক্সি নামানো যায় কিনা তাদের কোম্পানি মালিকের সঙ্গে কথা বলেন। তাদের কথায় মালিক সম্মতি জানান। এরপর ২০১৩ সালে শুরু হয় তাদের পথচলা। ওই মালিক তাদের পাঁচজনকে প্রথমে পাঁচটি ট্যাক্সি কিনে দেন। পাশাপাশি মাসিক ২০০০ রিয়াল কোম্পানিতে জমা করার বিনিময়ে চুক্তিতে আবদ্ধ হন। কোম্পানির মালিক শেখ সুলতান বিন শামশাদ বিন খালেদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সৌদি আরবে আগত হজ ও ওমরা যাত্রীদের জিয়ারতের সুবিধার্থে আমি এ প্রকল্প চালু করি। আমার দেখাদেখি আরও অনেকে এ ধরনের প্রকল্প চালু করেন। অন্য অনেকে চালুর প্রক্রিয়ায় রয়েছেন। এটি সৌদি আরবের জন্য অনেক লাভজনক ব্যবসা। এ কারণে প্রতিদিন এ ব্যবসায় অনেকে যোগ দিচ্ছেন।

এই প্রক্রিয়ায় মক্কায় ট্যাক্সি সার্ভিসের দায়িত্ব পান মনির হোসেন। মদিনার দায়িত্ব পান আবুল কালাম। জেদ্দার দায়িত্বে খোকন খান, রিয়াদের দায়িত্ব পান মোহন মিয়া এবং জব্বার মিয়া পান দাম্মাম শহরের দায়িত্ব। প্রথম মাসে তাদের গড়ে চার হাজার রিয়াল আয় হয়। এরপর মালিক তাদের বলেন, তোমরা সৌদি আরবের পাঁচ শহরে চলে যাও। তোমাদের পাঁচজনকে ১০০টি করে ৫০০টি ট্যাক্সি কিনে

দেই। এই প্রক্রিয়ায় পাঁচ যুবক বাংলাদেশ থেকে পর্যায়ক্রমে ৫০০ যুবককে সৌদি আরবে নিয়ে আসেন। এভাবে প্রতি মাসে ট্যাক্সি বাড়াতে বাড়াতে বর্তমানে আড়াই হাজার ট্যাক্সিতে  পৌঁছেছে তাদের বহর। ভাগ্য বদলে গেছে আড়াই হাজার বাংলাদেশি যুবকের। তারা এখন সবাই স্বাবলম্বী। আর্থিক সচ্ছলতাও ফিরেছে পরিবারের। এর মধ্যে সৌদি নারীদের গাড়ি চালানোর নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেন বাদশাহ সালমান। তার এ ঘোষণায় সৌদি আরবের কয়েক হাজার বাংলাদেশি হঠাৎ করে চাকরিচ্যুত হন। তাদের অনেককে ওই পাঁচ যুবক তাদের ট্যাক্সি সার্ভিসে যুক্ত করে নেন। সৌদি আরবে হজ করতে আসা বাংলাদেশের আবদুল করিম বলেন, হজ করতে এসে গাড়ির জন্য কষ্ট করতে হয়নি। প্রতি মিনিটে মক্কায় ট্যাক্সি পাওয়া যাচ্ছে। ভাড়ায়ও সাশ্রয়ী। আরেক হাজী মাওলানা হোসাইন বলেন, বাংলাদেশিদের পরিচালিত সৌদি ট্যাক্সি সার্ভিস বেশ আরামদায়ক ও নিরাপদ। ভাড়াও কম। আমি মক্কার অনেক স্থানে যেতে পেরেছি। সৌদি আরবের ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তা সায়েদ আবদুল হামিদ বিন উসমানিয়া বলেন, বাংলাদেশি ট্যাক্সি চালকরা বেশ দক্ষ ও অভিজ্ঞ। তাদের গাড়ি চালনা বেশ ভালো। এ কারণে অনেকে বাংলাদেশি চালকদের পছন্দ করেন।

সর্বশেষ খবর