রবিবার, ২৫ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

নেতারা এক টেবিলে খেলেও বন্ধ হয়নি আওয়ামী লীগের গ্রুপিং

২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শুধু নওগাঁ-১ আসনে ছিল না দলের একাধিক প্রার্থী। নওগাঁ-২ আসনে শহীদুজ্জামান সরকার এমপি থাকাকালেই প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ইঞ্জি. আখতারুল আলম। মনোনয়ন না পেয়েও তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন।

জানা যায়, যাচাই-বাছাইয়ে তার মনোনয়ন বাতিল হওয়ায় চূড়ান্ত প্রার্থী হতে পারেননি। এই আসনের এমপি শহীদুজ্জামানের বিরুদ্ধে রয়েছে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ। দুই উপজেলায় পঞ্চপা-বে ভর করে চলেন তিনি। তাই কর্মী ও ত্যাগী নেতারা ভিড়তে পারেন না তার কাছে। এই সুযোগে ফায়দা লুটছেন তেলবাজরা। এই পঞ্চপা বের প্রধান পত্নীতলার ঘোষনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ঘোষনগর ইউপি চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক। এ ছাড়া পত্নীতলার নজিপুর পৌরসভার মেয়র রেজাউল কবীর চৌধুরী, ধামইরহাট থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল হক সরকার, ধামইরহাট পৌরসভার মেয়র আমিনুর রহমান এবং ধামইরহাট থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও জেলা পরিষদের সদস্য নুরুজ্জামান হোসেন। জানা যায়, নওগাঁ-৩ আসনে সংসদ সদস্য ছলিম উদ্দিন তরফদারের বিপরীতে সাবেক এমপি ড. আকরাম হোসেন চৌধুরীর প্রকাশ্যেই অবস্থান। সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন না পেয়ে গ্রুপিংয়ে জড়িয়ে পড়েন আকরাম হোসেন। সেই গ্রুপিং এখন অনেকটাই প্রকাশ্য। দুজনই কর্মী টানতে একে অপরের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছেন। এমপি সলিমের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্য, পুকুর দখলসহ  বেশ কিছু অভিযোগ তৃণমূলের। নওগাঁ-৪ আসনের এমপি প্রবীণ নেতা সাবেক বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী ইমাজউদ্দীন প্রামাণিক। রাজনৈতিকভাবে তিনি প্রবীণ হলেও স্থানীয় রাজনীতিতে তার খুব বেশি তৎপরতা নেই। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমদাদুল হক মোল্লার প্রভাবে অস্থির নেতা-কর্মীরা। বিপরীতে সাধারণ সম্পাদক বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান সরদার জসিম উদ্দিন। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এখানে নিজেদের মধ্যকার দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে রূপ নেয়। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা সাবেক এমপি আবদুল মালেক এবারের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নওগাঁ-৫ (সদর) আসন থেকে মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছেন। এই আসনটি ছিল আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট নেতা সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিলের। তার মৃত্যুতে আবদুল মালেকের কপাল খোলে। কিন্তু জেলা আওয়ামী লীগে প্রকাশ্যে গ্রুপিং দেখা দেয়। একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিভাজনের সৃষ্টি হয়। ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়ন পান মরহুম আবদুল জলিলের ছেলে ব্যারিস্টার নিজাম উদ্দীন জলিল জন। তরুণ নেতার আবির্ভাবে মালেক কর্মীরা জনের প্রতি বিষোদগার শুরু করেন। নওগাঁ-৬ আসনে এবারও এমপি ইসরাফিল আলম। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। দুই উপজেলায় গ্রুপিং থাকলেও তা প্রকাশ্যে নয়। উপজেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা সবাই ইসরাফিলের কথায় চলেন। বিপরীতে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক সুমন নিজের অবস্থা শক্ত করতে মাঠ রয়েছেন। নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার এমপি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দেশের সবচেয়ে বড় ও ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক সংগঠন। নেতা-কর্মীও অনেক। সংগঠন ও দেশের স্বার্থে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিকরা এক রয়েছে, এক থাকবে। তাই নওগাঁয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে কোনো দ্বিধা-দ্বন্দ্ব, বিভেদ নেই।’

সর্বশেষ খবর