রবিবার, ২৫ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

সিরাজগঞ্জে এক রাতে বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষা পেল তিন ছাত্রী

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

সিরাজগঞ্জে এক রাতে তিনটি বাল্যবিয়ে বন্ধ করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় বাল্যবিয়ের আয়োজন করায় কনের বাবা সেলিম হোসেনকে ১০ দিনের কারাদ- এবং অন্য অভিভাবকদের জরিমানা করেছে আদালত। শুক্রবার গভীর রাত পর্যন্ত সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আনিসুর রহমানের নেতৃত্বে বিভিন্ন এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আনিসুর রহমান জানান, শুক্রবার রাতে শিয়ালকোল ইউনিয়নের শিলন্দা পূর্বপাড়া গ্রামের সেলিম হোসেনের মেয়ে সনি খাতুনের (১৩) সঙ্গে কালিয়াহরিপুর ইউনিয়নের চরবনবাড়িয়া গ্রামের ইমান আলীর ছেলে মনিরুল ইসলামের (২৫) বিয়ের আয়োজন চলছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালিয়ে বাল্যবিয়ে বন্ধ করা হয় এবং বাল্যবিয়ের আয়োজন করায় কনের বাবা সেলিম হোসেনকে ১০ দিনের বিনাশ্রম কারাদ  দেওয়া হয়। এর আগে, সন্ধ্যায় খোকশাবাড়ী ইউনিয়নের দিয়াড়পাঁচিল গ্রামের মালেক রতনের মেয়ে ফাতেমা খাতুনের সঙ্গে পৌর এলাকার কালীবাড়ী ঘোষপাড়া মহল্লার আবদুল বারীর ছেলে বায়েজিদ বোস্তামীর (২১) বিয়ের আয়োজন চলছিল। সেখানে অভিযান চালানো হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে কাজী পালিয়ে যান। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত বাল্যবিয়ে বন্ধ ও কনের বাবা আবদুল মালেক রতনকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করে। এরপর রাত ৮টার দিকে সিরাজগঞ্জ সদরের সয়দাবাদ ইউনিয়নের মুলিবাড়ী গ্রামের নয়ন শেখের মেয়ে স্থানীয় হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেুণির ছাত্রী নূপুর খাতুনের (১৪) সঙ্গে হোসেনপুরের মৃত আবদুল শেখের ছেলে হীরা ম লের (৩২) বিয়ের আয়োজন চলছিল। সেখানে অভিযান চালিয়ে বাল্যবিয়ে বন্ধ করা হয় এবং বর হীরা ম ল ও কনের বাবা নয়ন শেখকে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। তিনি আরও জানান, বাল্যবিয়ে বন্ধে উপজেলায় প্রতিদিনই অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি সচেতনতা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। বগুড়া থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, বাল্যবিয়ে বিরোধী অভিযান চালিয়ে বরসহ ১৪ জনকে আটক করেছে শিবগঞ্জ থানা পুলিশ। পরে তাদেরকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাজির করে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করা হয়। রাতভর অভিযান চালিয়ে পুলিশ তাদেরকে গ্রেফতার করে। গতকাল দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেন শিবগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক মিজানুর রহমান।

জানা গেছে, রাতে শিবগঞ্জ থানা পুলিশ বিহার, জামগ্রাম, কানুপুর, ধাওয়াগীর ও শংকরপুর গ্রামে বাল্যবিয়ে বিরোধী অভিযান চালায়। এ সময় ধাওয়াগীর গ্রামে চান মিয়ার ১৩ বছর বয়সী মেয়ের বিয়ের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মেয়ে পক্ষের লোকজন আত্মগোপনে চলে যান। এসময় পুলিশ বর শংকরপুর গ্রামের মজনু মিয়ার ছেলে মো. মিলন (২৩), মেয়ের বাবা চান মিয়া, কাজী আবদুল আজিজ (৩৫)সহ তিনজন বরযাত্রীকে আটক করে। একই সময় পুলিশের আরেকটি দল কানুপুর গ্রামে আয়োজন করা বাল্যবিয়ের অনুষ্ঠানে অভিযান চালায়। সেখানে বর পালিয়ে গেলেও বরযাত্রীসহ বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়। দুটি পৃথক ঘটনায় মোট ১৪ জনকে আটক করা হয়।

সর্বশেষ খবর