বুধবার, ২৮ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

আওয়ামী লীগের গ্রুপিংয়ে হতাশ কর্মীরা

লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগে চলছে গ্রুপিং। মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দিয়ে চালানো হচ্ছে সাংগঠনিক কার্যক্রম। থমকে আছে নতুন সদস্য সংগ্রহের উদ্যোগ। জেলার শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সমন্বয়হীনতা, ত্যাগী নেতা-কর্মীদের অবমূল্যায়ন ও ক্ষমতার প্রভাব বিস্তারে বিভক্ত হয়ে গ্রুপিংয়ে জড়াচ্ছেন নেতা-কর্মীরা। শীর্ষস্থানীয় দুই নেতার  বাসভবন ও ব্যক্তিগত কার্যালয়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এতে দলীয় কর্মসূচিতে আগ্রহ হারাচ্ছেন নেতা-কর্মীরা। ক্ষমতাসীন দল হিসেবে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ রয়েছে। ২০১৫ সালের মার্চের শুরুতে লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়। এতে গোলাম ফারুক পিংকুকে সভাপতি ও অ্যাডভোকেট নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়নকে সাধারণ সম্পাদক করে ৭১ সদস্যের কমিটি অনুমোদন করে কেন্দ্র। কিন্তু এ কমিটি এখন মেয়াদোত্তীর্ণ। জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আ ন ম ফজলুল করিম ও তোজাম্মেল হোসেন চৌধুরী দুলালসহ ওই কমিটির সাতজন সদস্য ইতিমধ্যে মারা গেছেন। এখনো মৃত্যুবরণকারী নেতাদের শূন্য পদ পূরণ করা হয়নি। এ ছাড়া তাদের জন্য একটি শোকসভাও করতে পারেনি জেলা কমিটি। এমন পরিস্থিতিতে জেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পৃথকভাবে নিজেদের বাসভবনে ব্যক্তিগত অফিস দিয়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাচ্ছেন। ত্যাগী নেতা-কর্মীরা মনোবল হারিয়ে দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিতে আগ্রহ হারাচ্ছেন। সংগঠনের নামে সরকারি বিভিন্ন দফতরের টেন্ডারে সমঝোতা করে কমিশন বাণিজ্য, পরিবহন সেক্টরের চাঁদাবাজির টাকা ভাগ-বাটোয়ারা করে নেন জেলার গুটিকয় নেতা। এমন অভিযোগ রয়েছে কর্মীদের কাছে। সম্প্রতি লক্ষ্মীপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মনির হোসেন মারা যান। এরপর যুগ্ম-সম্পাদক জসীম উদ্দিনকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেন। কোনো ধরনের সাংগঠনিক পদ্ধতি ছাড়াই উত্তর জয়পুর নিবাসী অ্যাডভোকেট জহির উদ্দিন বাবরকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। এ নিয়ে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মধ্যে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাবেক একাধিক ছাত্র নেতা বলেন, দলীয় পদ বাণিজ্য, সংগঠনের নামে টেন্ডারবাজি ও চাঁদাবাজির টাকায় গুটিকয় নেতা নিজেদের ভাগ্যের পরিবর্তন করেছেন। ত্যাগীদের মূল্যায়ন না করে অর্থের বিনিময়ে পছন্দের লোককে নেতৃত্বে বসানো হয়েছে। এতে দলের সাংগঠনিক অবস্থা নাজুক হয়ে পড়েছে। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন বলেন, ‘জেলা আওয়ামী লীগ অতীতের তুলনায় সাংগঠনিকভাবে অনেক শক্তিশালী। আমাদের মধ্যে কোনো গ্রুপিং নেই।’

জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি গোলাম ফারুক পিংকু বলেন, ‘দলীয় কার্যালয় না থাকায় সাংগঠনিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, উপজেলা ও পৌর কমিটি গঠনের কাজ চলছে।’

সর্বশেষ খবর