বুধবার, ২৮ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

সৌদি আরবে প্রবাসীদের নাগরিকত্ব লাভের সুযোগ

মোস্তফা কাজল, সৌদি আরব থেকে ফিরে

সৌদি আরবে প্রবাসীদের নাগরিকত্ব লাভের সুযোগ

প্রবাসীদের জন্য নাগরিকত্ব লাভের সুযোগ করে দিয়েছে সৌদি সরকার। তেলনির্ভরতা থেকে বেরিয়ে অর্থনৈতিক অগ্রগতির লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংস্কারে কাজ শুরু করেছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব। দেশটির বর্তমান বাদশাহ মোহাম্মদ বিন সালমানের নেতৃত্বে এই সংস্কারযজ্ঞ চলছে। এর নাম দেওয়া হয়েছে ভিশন-২০৩০। ধনাঢ্য ও সম্পদশালী প্রবাসীদের টানতে একটি বিশেষ আবাসন  প্রকল্প চালু করেছে সৌদি আরব। অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে এটি করা হয়েছে। গত সপ্তাহ থেকে চালু হওয়া প্রকল্পকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিনকার্ডের অনুরূপ হিসেবে বলা হচ্ছে। এর মাধ্যমে সৌদি আরবের নাগরিকত্ব পাবেন ধনী প্রবাসীরা। ঘোষণার পরদিন থেকে অনলাইনে এ জন্য আবেদন গ্রহণ শুরু করেছে সৌদি আরব। সেখানে বলা হয়েছে, কেউ যদি সৌদি আরবে স্থায়ী নাগরিকত্ব পেতে চান তাহলে একবারে ৮ লাখ সৌদি রিয়াল (বাংলাদেশি ১ কোটি ৭৮ লাখ ৭৫ হাজার ৬৬ টাকা) ফি পরিশোধ করতে হবে। এ ফি এক বছরের। তবে নবায়নযোগ্য আবাসিকতার জন্য দিতে হবে ১ লাখ রিয়াল (বাংলাদেশি ২২ লাখ ৬৫ হাজার ৮৫৩ টাকা)। আরও বলা হয়েছে, এ প্রকল্প অনুযায়ী প্রবাসীরা কোনো ধরনের স্পন্সর ছাড়াই সৌদিতে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা, সম্পত্তি ক্রয় ও স্বজনদের জন্য স্পন্সর ভিসা নিতে পারবেন। বিশ্লেষকরা বলেছেন, এ প্রকল্পের মাধ্যমে সম্পদশালী আরব বংশোদ্ভূত ও বহুজাতিক কোম্পানিগুলো ব্যাপকভাবে লাভবান হবে। যারা স্থায়ী আবাসন ছাড়াই বছরের পর বছর ধরে সৌদি আরবে বসবাস করে দীর্ঘ মেয়াদে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করতে চান। এ ছাড়া তেলনির্ভরতা থেকে বেরিয়ে অর্থনৈতিক বৈচিত্র্য আনতে সৌদি আরব নতুন এ প্রকল্প চালু করল। গত মাসে দেশটির মন্ত্রিসভায় নতুন এ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হলেও অনলাইনে আবেদন গ্রহণ শুরু হয়েছে সপ্তাহখানেক আগে। মধ্যপ্রাচ্যের রক্ষণশীল এ দেশটিতে বর্তমানে প্রায় ১ কোটি প্রবাসী  রয়েছেন। শ্রমিক ও মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, দেশটিতে বিভিন্ন ধরনের নিয়মনীতির বেড়াজালের মধ্যেই বসবাস করছেন প্রবাসীরা। তারা সাধারণত দেশটিতে সৌদি আরবের একজন নিয়োগকর্তার স্পন্সরে কাজ করেন। সৌদি আরবের মদিনায় কর্মরত বহুজাতিক কোম্পানির কর্মকর্তা দিলদার হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, কাজ শেষে এ দেশ ত্যাগ এবং সৌদিতে ফেরার জন্য পাশাপাশি ভিসা পেতেও স্পন্সরের অনুমতি প্রয়োজন। তবে জীবনযাপনের ব্যয় ভয়াবহভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রবাসীদের সৌদি ত্যাগের কিছু প্রমাণ পাওয়া গেছে।

প্রবাসীদের জন্য কয়েকটি খাত নির্দিষ্ট করে কর্মক্ষেত্র সীমিত করায় এবং অতিরিক্ত ফি আরোপের কারণে সেখানে দেশত্যাগের ঢল শুরু হয়। এ ছাড়া সৌদি সরকার অবৈধ প্রবাসীদের ধরতে কঠোর অভিযান পরিচালনা করছে। এ কারণে গত দুই বছরে কয়েক লাখ অবৈধ প্রবাসীকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়।

সর্বশেষ খবর