বৃহস্পতিবার, ২৯ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

বাসচাপায় পা হারানো কৃষ্ণার শঙ্কা কাটেনি

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাসচাপায় পা হারানো কৃষ্ণার শঙ্কা কাটেনি

বাসচাপায় পা হারানো কৃষ্ণা গতকাল রাজধানীর একটি হাসপাতালে -বাংলাদেশ প্রতিদিন

রাজধানীর বাংলামোটরে বেপরোয়া গতির বাসের চাপায় পা হারানো বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) কর্মকর্তা কৃষ্ণা রায় চৌধুরীর শারীরিক অবস্থা এখনো অপরিবর্তিত। তার ক্ষতস্থানে পচন ধরার শঙ্কার কথা বলছেন চিকিৎসকরা। রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের পর তাকে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সাইন্সে নেওয়া হয়। সেখানে নিউরোলজিক্যাল পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে আবারও পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় এখনো আটক হয়নি ঘাতক বাসের চালক ও হেলপার।

হাতিরঝিল থানার এসআই খায়রুল আলম জানান, ঘাতক বাসটির মালিক বেসামরিক এক মহিলা। ট্রাস্ট পরিবহন কর্তৃপক্ষকে বারবার তাগাদা দেওয়া হলেও তারা বাসচালক ও হেলপারকে হাজির করতে পারেনি।

মঙ্গলবার রাতেই অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে চিকিৎসকরা কৃষ্ণা রায়ের বাম পা হাটুর নিচ থেকে বিচ্ছিন্ন করে  ফেলেন। অস্ত্রোপচারের পর গতকাল ক্ষতস্থান ড্রেসিং করার জন্য আবারও তাকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। এরপর তার জ্ঞান ফেরে। কথাও বলেছেন। কিন্তু বিচ্ছিন্ন পায়ের যন্ত্রণা কমেনি তার। কৃষ্ণার কাতরতা দেখে তার ব্যথা নিরাময়ে ইনজেকশনের মাত্রা আরও বৃদ্ধি করেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। এ সময় সেখানে কৃষ্ণার শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিতে যাওয়া বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান প্রণয় কান্তি বিশ্বাসসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। তবে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ৩-৪ দিন না যাওয়া পর্যন্ত কৃষ্ণার অবস্থা আশঙ্কামুক্ত বলা যাবে না। এদিকে গতকাল দুপুরে দুর্ঘটনায় পা হারানো কৃষ্ণা রায়কে দুই লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের প্রস্তাব দেয় ট্রাস্ট ট্রান্সপোর্ট সার্ভিসেস কর্তৃপক্ষ। তবে এ প্রস্তাব সঙ্গে সঙ্গে ফিরিয়ে দিয়েছে বিআইডব্লিউটিসি। বিআইডব্লিউটিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানান, ট্রাস্ট পরিবহনের মালিক সমিতির কয়েকজন প্রতিনিধি বাংলামোটরে তাদের কার্যালয়ে এসেছিলেন। এ সময় তারা বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান প্রণয় কান্তি বিশ্বাসের সঙ্গে কথা বলেন। সেখানে কৃষ্ণার স্বামী রাধে সেন চৌধুরীও ছিলেন। এ সময় মালিক সমিতির প্রতিনিধিরা ক্ষতিপূরণ বাবদ দুই লাখ টাকা দিতে চেয়েছিলেন। তখনই তাদের এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা হয়। পরে বিআইডব্লিউটিসির সচিব (উপসচিব) বিপুল চন্দ্র বিশ্বাসসহ কৃষ্ণার স্বামী রাধে সেন চৌধুরী হাতিরঝিল থানায় একটি মামলা করেন। মামলা নম্বর- ৩৭। বিআইডব্লিউটিসির চিকিৎসক খন্দকার মাসুম হাসান জানান, কৃষ্ণার সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখা হচ্ছে। এখনো তিনি আশঙ্কামুক্ত নন। তার ক্ষতস্থানের মাংসে কোনো ধরনের পচন ধরে কিনা এ নিয়েও আশঙ্কা রয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে ট্রাস্ট পরিবহনের একটি বাস দ্রুতগতিতে শাহবাগের দিকে যাওয়ার সময় ফুটপাথে দাঁড়িয়ে থাকা কৃষ্ণাকে চাপা দেয়। এ সময় কৃষ্ণার বাঁ পায়ের ওপর দিয়ে বাসের একটি চাকা উঠে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল হয়ে পঙ্গু হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর