বৃহস্পতিবার, ২৯ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

ভোটারদের খুঁজে বেড়াচ্ছেন ছাত্রদলের প্রার্থীরা

মাহমুদ আজহার

দীর্ঘ ২৭ বছর পর হতে যাচ্ছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কাউন্সিল। আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর ঢাকায় এই কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। সারা দেশে ১১৬টি সাংগঠনিক ইউনিটে মোট ৫৬৭ জন ভোটার (কাউন্সিলর) তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। মোট কাউন্সিলর ছিলেন ৫৭৯ জন। এর মধ্যে ১০ জন বহিষ্কার, একজন গুম ও একজন সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। এবারের নির্বাচনে সভাপতি পদে ১৫ জন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ৩০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু না হলেও এরই মধ্যে প্রার্থীরা হন্যে হয়ে ভোটার খুঁজে বেড়াচ্ছেন। তাদের কাছে ভোট প্রার্থনা করছেন। একইভাবে কেউ কেউ লন্ডনে যোগাযোগ করছেন। ঢাকার প্রভাবশালী নেতাদের বাসাবাড়িতেও যাচ্ছেন অনেকেই। এবারের নির্বাচনে মোট ৭৫ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। এর মধ্যে ২৭ জনের বিরুদ্ধে বিবাহিতসহ নানা অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় তাদের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়। এই ২৭ জনের মধ্যে গতকাল ৬ জন সভাপতি পদে এবং ৯ জন সাধারণ সম্পাদক পদে তাদের প্রার্থিতা ফিরে পেতে আপিল করেছেন। এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানা যাবে ২ সেপ্টেম্বর। তবে প্রতি প্রার্থীকে ১০ শতাংশ ভোট পেতে হবে। নইলে কোনো পদে তাকে রাখা হবে না। এ কারণে দুই-এক দিনের মধ্যে কয়েকজন প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিতে পারেন। ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। জানা গেছে, কোনো কারণে কাউন্সিল না হলে বিকল্প ব্যবস্থাও করে রাখা হয়েছে। বিষয়টি লন্ডন থেকে দেখভাল করছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এ ছাড়া ঢাকায় দলের স্থায়ী কমিটি ছাড়াও ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের নিয়ে গঠিত সার্চ কমিটিও এ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। এরই মধ্যে সব ভোটারের ডাটাবেজ তৈরি করা হয়েছে। ছবিযুক্ত ভোটার তালিকাও তৈরি করা হয়। তাই কোনো কারণে কাউন্সিল না করতে পারলে বিকল্প ব্যবস্থায় নেতৃত্ব নির্বাচন করার চিন্তাভাবনাও করছে বিএনপির হাইকমান্ড। নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান খায়রুল কবীর খোকন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমাদের ওপর দল যে দায়িত্ব দিয়েছে, তা আমরা শতভাগ সততার সঙ্গে পালনের শেষ চেষ্টা করে যাব। যারা প্রার্থী হয়েছেন সবাই আমাদের ছোট ভাই। এখানে কোনো গ্রুপিং নেই। আমরা চাই সুন্দর একটি কাউন্সিলের মাধ্যমে ছাত্রদলের নতুন একটি নেতৃত্ব, যারা আমাদের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বিএনপির পাশে থেকে সহযোগিতা করবে। এদিকে প্রার্থীদের প্রচারণার জন্য ৩ সেপ্টেম্বর থেকে ১২ সেপ্টেম্বর মধ্যরাত পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি। তবে এর মধ্যেই নানাভাবে ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ করে যাচ্ছেন প্রার্থীরা। ভোটাররা সারা দেশের জেলা পর্যায়ে ছুটে যাচ্ছেন। প্রতিটি জেলায় ভোটারদের পাশাপাশি জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গেও কথাবার্তা বলছেন তারা। এ সময় তারা নিজেদের যোগ্যতা তুলে ধরার পাশাপাশি বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনের প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছেন। ভোটারদের কাছেও একই বার্তা নিয়ে যাচ্ছেন প্রার্থীরা। আবার কেউ কেউ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ বিভিন্নভাবে নিজের যোগ্যতা তুলে ধরে ছবি প্রকাশ করে ভোট প্রার্থনা করছেন এবং দোয়া চাইছেন। নির্বাচন পরিচালনা কমিটি জানায়, প্রতিটি সাংগঠনিক ইউনিটে (সুপার ফাইভ) পাঁচজন করে ভোট দিতে পারবেন। সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সিনিয়র সহ-সভাপতি, সাংগঠনিক সম্পাদক ও প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। কোনো কোনো ইউনিটে আহ্বায়ক কমিটি থাকলে সেখানে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব ছাড়াও সিনিয়রিটি অনুযায়ী আরও তিন সদস্য ভোট দিতে পারবেন। ছাত্রদলের প্রার্থী যাচাই-বাছাই কমিটির আহ্বায়ক ও বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন বলেন, ‘আমরা ছাত্রদলের কাউন্সিলের কাজ মোটামুটি গুছিয়ে এনেছি। প্রার্থী তালিকাও প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে। ২ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে। আমরা সুন্দরভাবে পক্ষপাতহীন একটি কাউন্সিল উপহার দিতে চাই। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতাও কামনা করছি।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর