শুক্রবার, ৩০ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দিয়ে চলছে আওয়ামী লীগ

নীলফামারীতে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগে সাংগঠনিক গতি নেই। মূল দল থেকে সহযোগী সংগঠনগুলো পর্যন্ত চলছে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দিয়ে। জেলার দুই শীর্ষস্থানীয় নেতার সমন্বয়হীনতা আর ত্যাগী নেতা-কর্মীদের অবমূল্যায়নে বিভক্ত হয়ে পড়েছে আওয়ামী লীগ। ফলে হতাশায় ভুগছেন তৃণমূলের ত্যাগী নেতা-কর্মীরা। দলীয় সূত্র জানায়, জেলা কিংবা উপজেলা আওয়ামী লীগ কোনোটিরই মেয়াদ নেই। প্রায় প্রতিটি কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে অন্তত ১০ থেকে ১৩ বছর আগে। সূত্র জানায়, ২০০৬ সালে জেলা আওয়ামী লীগ, নীলফামারী পৌর আওয়ামী লীগ ও নীলফামারী সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়া ২০০৪ সালে জলঢাকা উপজেলা, ২০০৫ সালে কিশোরগঞ্জ উপজেলা, ২০০৩ সালে সৈয়দপুর উপজেলা এবং ২০১৩ সালে ডোমার ও ডিমলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়। সূত্র জানায়, ৭০ সদস্যবিশিষ্ট জেলা কমিটির প্রয়াত হয়েছেন ১০ জন। এর মধ্যে সহ-সভাপতি রয়েছেন তিনজন। শূন্য পদগুলো পূরণ করা হয়নি অদ্যাবধি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যথাসময়ে সম্মেলন না হওয়ায় নেতৃত্ব তৈরিতে বাধা এবং হাতে গোনা কয়েকজনের কব্জায় নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে বৃহত্তম দলটির জেলা কার্যক্রম। মূল দলের পাশাপাশি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোরও অবস্থা একই। জেলা যুবলীগের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দিয়ে চলছে কার্যক্রম। মহিলা আওয়ামী লীগ, শ্রমিক লীগ ও কৃষক লীগ চলছে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দিয়ে। ফলে হতাশায় ভুগছেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। নেতাদের সঙ্গে কর্মীদের মেলবন্ধন না থাকায় দূরত্ব তৈরি হয়েছে তৃণমূলের সঙ্গে নেতৃত্বের। নীলফামারী সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) ও পৌর শ্রমিক লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আতিয়ার রহমান বলেন, ‘এত দিন সম্মেলন হয়নি। আমরা যারা মনে প্রাণে দল করি। কত ত্যাগী নেতা পেছনে পড়ে আছেন। মূল দলে জায়গা পাচ্ছি না। নিয়মিত সম্মেলন হলে এ রকম হতো না।’ নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন আওয়ামী লীগ কর্মী জানান, নিয়মিত সম্মেলন না হওয়ায় নেতা তৈরি না হওয়া, প্রতিযোগিতা না থাকা, নেতা ও কর্মীদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হওয়ার মতো পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে হাইব্রিড নেতারা চলে এসেছেন সামনে। পরীক্ষিত অনেক নেতা-কর্মী চলে গেছেন পেছনের সারিতে। জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আরিফ হোসেন মুন বলেন, সফলতা-ব্যর্থতা দুটোই রয়েছে বর্তমান জেলা কমিটির। তবে নেতৃত্ব সৃষ্টিতে সদস্যদের কাজে লাগাতে পারেনি বর্তমান কমিটি।

জেলা সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মমতাজুল হক বলেন, ‘অতীতের তুলনায় সাংগঠনিকভাবে অনেক শক্তিশালী এখানে আওয়ামী লীগ। আমাদের মধ্যে কোনো গ্রুপিং নেই।’  জেলা সভাপতি দেওয়ান কামাল আহমেদ বলেন, ‘জেলা আওয়ামী লীগ শক্তিশালী এবং সংগঠিত। ইউনিয়ন থেকে জেলা পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ কমিটি রয়েছে। নেই বিরোধ কিংবা বিভেদ। তবে কারও কারও অভিযোগ থাকতে পারে। এর পরও আমরা সবাই মিলে দলকে এগিয়ে নিচ্ছি।’

সর্বশেষ খবর