শুক্রবার, ৩০ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

একগুচ্ছ মেগা প্রকল্প দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে

পাল্টে যাবে অর্থনীতি বাড়বে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

একগুচ্ছ মেগা প্রকল্প দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে

মোংলা বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়ন, রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, খুলনা-মোংলা রেললাইন ও পদ্মা সেতু নির্মাণসহ বেশ কয়েকটি মেগা প্রকল্পের কাজ চলছে খুলনাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে। অর্থনীতিবিদদের মতে, এসব মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে শিল্প ও বিনিয়োগে পিছিয়ে পড়া এ অঞ্চলে পাল্টে যাবে অর্থনীতি। সেই সঙ্গে বাড়বে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ। তৈরি হবে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোংলা বন্দরের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে ২০১৭ সালে প্রায় ১১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে খুলনা-মোংলা রেললাইন নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০২২ সালে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি মোংলা বন্দরে মালামাল লোড-আনলোডে গতি ফিরবে। একই সঙ্গে বাগেরহাটের রামপালে ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে উৎপাদনে যাওয়ার কথা জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তবে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখবে পদ্মা সেতু প্রকল্প। সরকারি অর্থায়নে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে পদ্মা সেতু নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা। পাশাপাশি খুলনা ও বরিশাল বিভাগে ১৩টি অর্থনৈতিক জোন গড়ে তোলা হচ্ছে। অর্থনীতিবিদ ও উন্নয়নকর্মীদের মতে, এসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে পাল্টে যাবে এ অঞ্চলের বিনিয়োগ পরিবেশ। বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির মহাসচিব শেখ আশরাফুজ্জামান বলেন, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে উন্নয়নের কর্মযজ্ঞ চলছে। পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হলে দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনীতির চাকা পাল্টে যাবে। এতে শিল্প খাতের দ্রুত বিকাশ, উৎপাদন, কর্মসংস্থান, রপ্তানি বৃদ্ধি পাবে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি ডিসিপ্লিনের প্রধান প্রফেসর ড. শাহনেওয়াজ নাজিমুদ্দিন আহমেদ বলেন, মেগা প্রকল্পের মাধ্যমে দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে আয় বৈষম্য হ্রাস পেলে তা ক্রমাগত হারে অর্থনৈতিকৃ স্থিতিশীলতা ও বিনিয়োগে ভারসাম্য আনবে। মোংলাভিত্তিক যেসব শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে তাতে এরই মধ্যে বিনিয়োগের সুবাতাস বইতে শুরু করেছে। তবে ধীরগতিতে চলছে অন্যতম মেগা প্রকল্প খুলনার খানজাহান আলী বিমানবন্দর নির্মাণ কাজ। ১৯৯৬ সালে বিমানবন্দরের জন্য বাগেরহাট জেলার ফয়লা এলাকায় জমি অধিগ্রহণ করা হলেও এখনো তা বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। খুলনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি কাজী আমিনুল হক বলেন, খানজাহান আলী বিমানবন্দর সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ করা উচিত। বিগত বাজেটগুলোতে বরাদ্দ দিয়ে কাজ শুরু হলে এতদিনে বিমানবন্দরটি আলোর মুখ দেখত। এদিকে মেগা প্রকল্পের মাধ্যমে অর্থনীতিতে সুফল পেতে সমন্বিত উন্নয়নের দাবি জানিয়েছেন উন্নয়নকর্মীরা। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর খুলনা জেলা সম্পাদক কুদরত-ই খুদা বলেন, মেগা যেসব প্রজেক্ট হচ্ছে তা থেকে আরও সুফল মিলবে খুলনায় যদি অন্য সেক্টরগুলোতেও ‘প্যারালাল ডেভেলপমেন্ট’ হতে পারে। তবে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে এরই মধ্যে দক্ষিণাঞ্চলে শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্পায়নে আগ্রহীরা।

সর্বশেষ খবর