শনিবার, ৩১ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

মাঠে নেই বিএনপি, আছে শুধু অভ্যন্তরীণ ঝামেলা

মাদারীপুরে বিএনপির দলীয় কর্মকান্ডে তেজি ভাব না থাকলেও গ্রুপিং-দ্বন্দ্ব আছে চরমে। তবে বিএনপি নেতাদের দাবি, মামলা-হামলায় তারা জর্জরিত। ১০ বছরে শতাধিক মামলা হয়েছে কমপক্ষে ১০ হাজারের বেশি নেতা-কর্মীর নামে। তবুও বিভিন্ন দলীয় কর্মসূচি পালন করছেন তারা। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর বিএনপিতে এক গ্রুপের নেতৃত্ব দিতেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবু মুন্সী। অপর গ্রুপের নেতৃত্বে ছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহান্দার   আলী জাহান। আবু মুন্সীর সঙ্গে ছিলেন জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান মুরাদ। পরে আবু মুন্সী ও জাহান্দার আলী জাহানের দ্বন্দ্ব নিরসন হলেও মিজানুর রহমান মুরাদের সঙ্গে নেতৃত্বের প্রশ্নে জাহান্দার আলী জাহানের দ্বন্দ্ব থেকেই যায়। দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকার পরও দ্বন্দ্বের জের ধরেই বিভক্ত জেলা বিএনপি। বিভিন্ন দলীয় কর্মসূচি তারা আলাদাভাবে পালন করেন। জানা গেছে, ছয় বছর পরে মাদারীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। অ্যাডভোকেট জাফর আলী মিয়াকে আহ্বায়ক এবং জাহান্দার আলী জাহানকে সদস্য সচিব করে ৪২ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছে সোহরার হোসেন হাওলাদার, সাজ্জাদ হোসেন লাভলু সিদ্দিকী, মামুন অর রশিদ বাবুল, অ্যাডভোকেট জামিনুর হোসেন মিঠু ও মিজানুর রহমান মুরাদকে। জানা গেছে, ২০০৯ সালে জেলা বিএনপির কাউন্সিল হয়। এর তিন বছর পরে ২০১২ সালে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছে। দীর্ঘ ছয় বছর পরে গতকাল (২২ জুন) রাতে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মাদারীপুর জেলা বিএনপির ৪২ সদস্যের কমিটি স্বাক্ষর করেন। এদিকে এ কমিটি ঘোষণার পরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে দলীয় নেতা-কর্মীদের মাঝে। অনেক সিনিয়র নেতাকে পদ দেওয়া হয়েছে জুনিয়র নেতার পরে। মাঠের অনেক নেতাই বাদ পড়েছেন ঘোষিত কমিটিতে। কমিটির এক নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক সোহরাব হোসেন হাওলাদার ছিলেন যুবদলের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক। পরে তিনি মাদারীপুর সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি হন। সেই কমিটিতেই সাধারণ সম্পাদক ছিলেন অ্যাডভোকেট জাফর আলী মিয়া। একই সময় জেলা বিএনপির সদস্য সচিব জাহান্দার আলী জাহান যখন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তখন জাফর আলী মিয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। সেই জাফর আলী মিয়াকে করা হয়েছে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক। এতে কিছু নেতা-কর্মী ক্ষুব্ধ। বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট জামিনুর হোসেন মিঠু বলেন, ‘গত ১০ বছরে আমাদের দলীয় ১০ হাজার নেতা-কর্মীর নামে শতাধিক মামলা হয়েছে। এসব হামলা-মামলায় অনেক নেতা-কর্মী ঘরছাড়া। যারা দলীয় কর্মসূচিতে নিয়মিত থাকে না এবং স্থায়ীভাবে মাদারীপুরে বসবাস করে না তাদের দলীয় পদ দেওয়া হবে না বলেও তিনি জানান। তিনি আরও বলেন, নতুন কমিটি হলে দল আরও সুসংগঠিত হবে। জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান মুরাদ বলেন, দলের কিছু নেতা আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করে রাজনীতি করেন। তাদের নামে থানায় কোনো মামলা নেই। আঁতাত করে রাজনীতি করার কারণে দল অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও একাদশ সংসদ নির্বাচনে মাদারীপুর-২ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মিল্টন বৈদ্য বলেন, ‘অনেক ত্যাগী নেতা বাদ পড়েছেন, আবার অনেক নতুন লোক এসেছেন যাদের দলীয় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ নেই। তবুও পজেটিভ দিক হচ্ছে অনেক বছর পরে মাদারীপুর জেলা বিএনপির কমিটি হয়েছে।’ যুগ্ম আহ্বায়ক সোহরাব হোসেন হাওলাদার বলেন, ‘কমিটিতে বেশ কিছু অসঙ্গতি রয়েছে। সিনিয়র-জুনিয়র মেনে কমিটি করা হয়নি। তবুও দলের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে হবে।’

সর্বশেষ খবর