শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ভোটে জনসনের হার নিয়ন্ত্রণে এমপিরা

প্রতিদিন ডেস্ক

ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ব্রেক্সিট নিয়ে এক ভোটাভুটিতে হেরে গেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। এর ফলে গতকাল পার্লামেন্টের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় চুক্তি ছাড়া ব্রেক্সিটের বিরোধী এমপিরা। এখন তাদের জন্য চুক্তি ছাড়া ব্রেক্সিট ঠেকাতে গতকাল একটি বিল আনার সুযোগও তৈরি হয়। তবে ভোটাভুটিতে হেরে যাওয়ার পর বরিস জনসন বলেছেন, তিনি আগাম নির্বাচনের প্রস্তাব আনবেন। এবং বিরোধিতা করায় তিনি ২১ জন এমপিকে বরখাস্ত করেছেন। কী হলো ভোটাভুটিতে? : ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়ার  (ব্রেক্সিট) আর সময় আছে সাকুল্যে দুই মাসেরও কম। অর্থাৎ আগামী ৩১ অক্টোবর ব্রেক্সিট কার্যকর হওয়ার কথা। কীভাবে, কোন চুক্তিতে সেই বিচ্ছেদ হবে, এ নিয়েই চলছে এখন আলোচনা। তবে এই বিচ্ছেদ নিয়ে কোনো চুক্তি হোক বা না হোক, নির্ধারিত তারিখেই ব্রেক্সিট কার্যকর করার ব্যাপারে অনড় থাকার কথা বলেছিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। এ নিয়ে গত কিছুদিন ধরেই বেশ উত্তপ্ত ব্রিটেনের রাজনৈতিক অঙ্গন। এ অবস্থায় বিরোধী দলের পাশাপাশি নিজ দলের বিদ্রোহী এমপিদের কাছে হাউস অব কমন্সে ৩২৮-৩০১ ভোটে হেরে গেলেন তিনি। জনসনের নিজ দলের ২১ জন এমপি যাদের মধ্যে কয়েকজন সাবেক মন্ত্রীও আছেন তারা এই ভোটাভুটিতে সরকারকে হারাতে বিরোধীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। এই ভোটের ফলে চুক্তি ছাড়া ব্রেক্সিটের বিরোধীরা ব্রেক্সিট বিলম্বিত করতে পার্লামেন্টে বিল আনতে পারবেন।

বিদ্রোহী ২১ এমপি বরখাস্ত : চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিট ঠেকাতে বিদ্রোহ করা ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দলের ২১ এমপিকে বরখাস্ত করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। এর মধ্যে রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিলের প্রপৌত্র স্যার নিকোলাস সোয়ামস। ওই ২১ জন এমপি নিজ দলের প্রধানমন্ত্রী জনসনের বরখাস্ত করার হুমকি উপেক্ষা করে বিরোধীদের সঙ্গে যোগ দেন। মঙ্গলবার রাতের ওই ভোটের পরই এসব এমপিকে তিনি বরখাস্ত করেন বলে খবর দিয়েছে অনলাইন হাফিংটন পোস্ট ও দ্য সান। বিষয়টি ডাউনিং স্ট্রিট থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে বলে খবরে বলা হয়েছে। এতে আরও বলা হয়, মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে সদ্য বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মের অধীনে মন্ত্রী নিয়োগ হয়েছিলেন ফিলিপ হ্যামন্ড, গ্রেগ ক্লার্ক ও রোরি স্টিওয়ার্ট। তাদেরও বরখাস্ত করা হয়েছে। ফলে এসব রাজনীতিক আগামী নির্বাচনে কনজারভেটিভ দল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না। যেসব এমপি বিদ্রোহ করেছিলেন তারা হলেন, গুটো বেব, রিচার্ড বেনিওন, স্টিভ ব্রাইন, অ্যালিস্টার বার্ট, গ্রেগ ক্লার্ক,    কেন ক্লার্ক, ডেভিড গাউকে, জাস্টিন গ্রিনিং, ডমিনিক গ্রিয়েভ, স্যাম গিমাহ, ফিলিপ হ্যামন্ড, স্টিফেন হ্যামন্ড, রিচার্ড হ্যারিংটন, মারগট জেমস, অলিভার লেটউইন, অ্যানি মিলটন, ক্যারোলাইন নোয়াকস, অ্যান্টোনেটে স্যান্ডব্যাচ, নিকোলাস সোয়ামস, রোরি স্টিওয়ার্ট ও এড ভাইজে।

যা বললেন জনসন : ভোটের পর ডাউনিং স্ট্রিট থেকে বলা হয়েছে, যেসব টোরি এমপি বিদ্রোহ করেছে তাদের পার্লামেন্টারি পার্টি থেকে বহিষ্কার করা হবে। বরিস জনসন বলেছেন, তিনি আগাম নির্বাচনের প্রস্তাব আনবেন। জনসন এও বলেছেন, অক্টোবরে নির্বাচনের প্রচেষ্টা চালানো ছাড়া তার কিছু করার নেই। কারণ তিনি বলছেন, দেশের জনগণকেই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যদিও এটিও তার জন্য খুব একটা সহজ হবে না। কারণ ব্রিটেনে ২০১১ সালের একটি আইনে পার্লামেন্টকে পাঁচ বছরের মেয়াদ দেওয়া হয়েছে। এখন সেটি পরিবর্তন করতে হলে সংসদে বরিস জনসনের দুই-তৃতীয়াংশ সমর্থন লাগবে। এটি পেতে হলে তার বিরোধী দল লেবার পার্টির সমর্থন দরকার হবে। সেটি জনসনের জন্য খুব একটা সহজ হবে না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ধারণা করা হচ্ছে, সরকার ১৫ অক্টোবর একটি সাধারণ নির্বাচন করতে চায়। তার দুই দিন পরই ব্রাসেলসে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। বিবিসি, বিজনেস ইসসাইডার

সর্বশেষ খবর