বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

অচলাবস্থা নিরসনে রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপ চান শিক্ষার্থীরা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) তিন দফা দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একাংশের অবরোধের আজ তৃতীয় দিন। গতকাল অবরোধের দ্বিতীয় দিনও কোনো যৌক্তিক সমাধানে পৌঁছাতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ফলে টানা তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচিতে জাবির প্রশাসনিক কার্যক্রমে চলছে অচলাবস্থা। অচলাবস্থা নিরসনে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’-এর ব্যানারে আন্দোলনকারীরা সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ও পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের সব কটি গেটে তালা ঝুলিয়ে রাখেন। ফলে গতকালও বন্ধ ছিল সব প্রশাসনিক কার্যক্রম। আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দাবি তিনটি হলো- বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্প থেকে উপাচার্যের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগকে ২ কোটি টাকা দেওয়ার অভিযোগের বিচারবিভাগীয় তদন্ত, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হল ঘিরে নির্মিতব্য তিনটি ১০ তলা আবাসিক হলের বিকল্প স্থান নির্বাচন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশীজনদের মতামতের ভিত্তিতে পুরো প্রকল্প বাস্তবায়ন। আন্দোলনে অংশগ্রহণ করা জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি আশিকুর রহমান বলেন, ‘আমাদের দাবিগুলো স্পষ্ট। এসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বক্তব্যও স্পষ্ট হওয়া উচিত। প্রশাসনের সঙ্গে কোনো ‘‘মুলা ঝোলানো’’ আলোচনায় বসতে আমরা রাজি নই। আর উপাচার্য নিজেই যেহেতু অভিযুক্ত এবং আচার্যের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নির্বাহী, তাই তৃতীয় কোনো পক্ষ উপস্থিত থাকলে তবেই আমরা আলোচনায় বসতে রাজি আছি। আর এই তৃতীয় পক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য অর্থাৎ রাষ্ট্রপতিও হতে পারেন।’

এদিকে গতকাল অবরোধ চলাকালে সকাল ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই উপ-উপাচার্য অধ্যাপক নুরুল আলম (শিক্ষা) ও অধ্যাপক আমির হোসেন (প্রশাসন) আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলার জন্য আসেন। এ সময় তারা কোনো যৌক্তিক সমাধানে না যেতে পেরে ফিরে যান। এরপর সকাল ১০টায় আবারও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলার জন্য আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক শেখ মো. মনজুরুল হক, ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান ও প্রক্টরিয়াল বডির অন্য সদস্যরা। এ সময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা বলেন অধ্যাপক আ স ম ফিরোজ উল হাসান। তবে শিক্ষার্থীদের ‘শর্ত সাপেক্ষে’ আলোচনার প্রস্তাবে অস্বীকৃতি জানান তারা।

প্রসঙ্গত, গত বছর ২৩ অক্টোবর একনেকে পাস হওয়া জাবির ১ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকার অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্প ঘিরে অশান্ত হয়ে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ। প্রকল্পের শুরুতেই উপাচার্যের বিরুদ্ধে ২ কোটি টাকার অর্থ কেলেঙ্কারি এবং সহস্রাধিক গাছ কাটার ঘটনায় অস্থিরতা বিরাজ করছে ক্যাম্পাসজুড়ে। তিন দফা দাবি আদায়ে তাই মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে অবরোধ কর্মসূচি।

সর্বশেষ খবর