শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

আওয়ামী লীগে সুবিধাবাদীদের দাপট, সাধারণ মানুষ হতাশ

গত সংসদীয় সাধারণ নির্বাচনে দিনাজপুরের ৬টি আসনেই আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের বিজয়ে জেলার সবখানে এক নতুন আশার সঞ্চার হয়েছিল। কিন্তু স্থানীয় পর্যায়ের কতিপয় নেতার আচার-আচরণে এখন দলীয় লোকজন থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ পর্যন্ত হতাশায় ভুগছেন। বিশেষ করে সুবিধাবাদী কিছু নেতা-কর্মী বাধাহীনভাবে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন সর্বত্র। তারাই এখন ফুরফুরে মেজাজে।

সাধারণ মানুষের অনেকেই বলছেন, সদর আসনে গত ১০ বছরে ব্যাপক উন্নয়ন হলেও ওইসব  নেতা-কর্মীর কারণে আওয়ামী লীগের সাফল্য সাধারণ মানুষের মনে ধরছে না। তাদের অভিযোগ, বিগত বিএনপি জোট সরকারের আমলে টেন্ডারবাজিসহ বিভিন্ন কায়দায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে কোটিপতি হয়েছিলেন অনেক নেতাই। এখন সেসব সুবিধাবাদী নেতাই ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলেছেন। তারাই বিভিন্ন ঠিকাদারি থেকে বিভিন্ন ব্যবসায়িক সুবিধা ভোগ করছেন। এটা দলের ত্যাগী নেতা-কর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের কাছে মোটেও গ্রহণযোগ্য হয়নি। এ ছাড়া আওয়ামী লীগে গ্রুপিং থাকারও অভিযোগ আছে। বিভিন্ন সূত্রের তথ্যানুযায়ী, জেলায় আওয়ামী লীগের দুটি ধারার একদিকে অবস্থান করছেন সাবেক মন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান এমপি এবং অপরদিকে রয়েছেন জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম। বিষয়টি নেতা-কর্মী ছাড়াও দিনাজপুরবাসীর কারোই অজানা নয়। তবে দলীয়ভাবে কেউ এ কথা স্বীকার করেন না। তবে জেলায় প্রতিমন্ত্রী, হুইপ, এমপিরা নিজ নির্বাচনী এলাকার বাইরে কেউ কোনো প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেন না। এই এক জায়গায়ই সবার অলিখিত সমঝোতা লক্ষণীয়। জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফারুকুজ্জামান চৌধুরী মাইকেল বলেন, বড় রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ। এ দলে গ্রুপিং  নেই, তবে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকতেই পারে। এতে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থান দুর্বল নয় বরং আরও শক্তিশালী হয়েছে। নেতা-কর্মী যে যেখানেই থাকুক না কেন, আমরা সবাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্ভাসিত আওয়ামী লীগের দলীয় আদর্শের অগ্রসৈনিক। অন্যায়কারী যেই হোক তার বিপক্ষে আমরা। তিনি দাবি করেন, দিনাজপুর আওয়ামী লীগে কোনো সমস্যা নেই। টেন্ডারবাজি, ভূমি দখল, চাঁদাবাজির রাজনীতিকে আওয়ামী লীগ প্রশ্রয় দেয় না। তিনি আরও জানান, জেলা আওয়ামী লীগের ১৪টি ইউনিট রয়েছে। প্রায় কমিটিরই মেয়াদ শেষ হয়েছে। তবে প্রথমে ওয়ার্ড, তারপর ইউনিয়ন, উপজেলা এরপর জেলা কাউন্সিল করা হবে পর্যায়ক্রমে। বিভিন্ন ইউনিটের কাউন্সিল এখন প্রক্রিয়াধীন। সর্বশেষ জেলার কাউন্সিল হয়েছিল ২০১২ সালে। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মানুষের প্রত্যাশার শেষ নেই। তবে সবার প্রত্যাশা পূরণের চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগ সরকার।

সর্বশেষ খবর