শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

আত্মগোপনে জামায়াত জাপা-বামরা নিষ্ক্রিয়

দিনাজপুর জেলা জামায়াতের প্রধান কার্যালয় ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির পর থেকে বন্ধ। এরপর থেকে জামায়াতের কর্মকা-ও স্থবির হয়ে পড়ে। নেতা-কর্মীরা আত্মগোপনে চলে যান। কারণ জেলা জামায়াতসহ সব পর্যায়ের অঙ্গ সংগঠন গোয়েন্দা নজরদারিতে চলে আসে। ফলে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি, স্থানীয় ভিত্তিক ইস্যুসহ কোনো কর্মসূচিতেই প্রকাশ্য আসতে পারেননি সংগঠনকরা। এমনকি জেলা জামায়াতের বর্তমান আমির মাওলানা আনোয়ারুল ইসলামকেও কোনো রাজনৈতিক কার্যক্রমে দেখা যায় না। প্রসঙ্গত, দিনাজপুর-৬ আসনে জামায়াত প্রার্থী নির্বাচিত হওয়ার সুবাদে গত তিনটি সংসদীয় নির্বাচনেও আসনটি জামায়াতকে ছেড়ে দিতে হয় বিএনপিকে। তাই ২০১৮ সালের জোটভিত্তিক নির্বাচনে দিনাজপুর-৬ আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হন মাওলানা আনোয়ারুল ইসলাম। কিন্তু তিনি পরাজিত হন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এক সময় জেলার বিভিন্ন স্থানীয় নির্বাচনে ২০-দলীয় জোটের বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও জোটের মতবিরোধের কারণে এখন সে সম্ভাবনাও নেই। এ জন্য জোটের এক দল আরেক দলকে দায়ী করছে। জানা গেছে, দিনাজপুরে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি, জাগপাসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের কিছু কার্যক্রম চোখে পড়লেও ২০ দলের অন্য কারও কোনো কার্যক্রমই নেই। বিএনপি জোটের বাইরে জাতীয় পার্টিসহ দিনাজপুরে মহাজোটের শরিক দলগুলোর রাজনৈতিক অবস্থাও বেহাল। যৌথ কর্মসূচি বা বৈঠক না থাকায় পরস্পরের মধ্যে বেড়েছে দূরত্ব। মহাজোটের সব শরিক দলের মধ্যে দীর্ঘদিন থেকে হয়নি কোনো বৈঠক। নেওয়া হয়নি সবার সমন্বয়ে কোনো কর্মসূচিও। একে তো জাতীয় পার্টির অবস্থা জেলায় ভালো নয়, তার ওপর রয়েছে নেতৃত্বের কোন্দল। ফলে তাদের দলীয় কার্যক্রম প্রায় ঝিমিয়ে পড়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কেন্দ্রীয় রাজনীতির প্রভাবে জেলা জাতীয় পার্টিতে রয়েছে নানামুখী গ্রুপিং আর দ্বন্দ্ব। এ কারণে অনেক ত্যাগী যোগ্য নেতারা নিষ্ক্রিয়। আবার কেউ কেউ দল ছেড়ে চলে গেছেন বা যাওয়ার প্রস্তুতিতে রয়েছেন। এরপরেও দলকে গোছানোর চেষ্টা করছেন জাপার জেলা সভাপতি দেলোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আহমেদ শফি রুবেল, কেন্দ্রীয় জাপার সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমান বোচাগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান আ্যাডভোকেট জুলফিকার হোসেন। আহমেদ শফি রুবেল জানান, জাপা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ইন্তেকালে দলে চলছে শোক। শোক কাটিয়ে ওঠার পরই দলের গতিশীলতা বাড়াতে বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেওয়া হবে। অন্যদিকে ওয়ার্কার্স পার্টির কাগজে কলমে জেলা কমিটি থাকলেও তাদের দলীয় তৎপরতা নেই বললেই চলে। জাসদেরও (ইনু) কোনো রাজনৈতিক কার্যক্রম নেই। মহাজোটের অন্য শরিকদেরও একই অবস্থা। তবে দলীয় ইস্যু ছাড়াও স্থানীয় অনেক সমস্যা যেমন দুর্নীতি, অনাচার, অবিচার, সামাজিক নির্যাতন, বৈষম্য ও বঞ্চনার প্রতিবাদ জানাতে প্রতিবাদী সাধারণ মানুষকে নিয়ে বাসদসহ কয়েকটি বামদলের স্থানীয় নেতারা রাজপথে সরব থাকছেন। যদিও দিনাজপুরে বাম দলগুলোর শক্তিশালী ভিত নেই বললেই চলে। জানা গেছে, জেলা শহরের কয়েকটি স্থানে মাঝে মাঝে দু-একটি কর্মসূচি নিয়ে বামদলের কর্মীদের দেখা যায়। ১৪ দলভুক্ত জাসদসহ অন্য বাম দলগুলোর নেতার সংকট না থাকলেও রয়েছে কর্মী সংকট। সম্প্রতি গ্যাসের মূল্য বাড়ার প্রতিবাদে হরতালের দিনে সকালে ১০-১৫ জন নেতা-কর্মী নিয়ে তারা শহরে খ- মিছিল করে। গুটি কয়েক নেতা-কর্মী নিয়েই চলে তাদের এসব কার্যক্রম।

সর্বশেষ খবর